গরমে স্বস্তি পেতে ডাবের পানির কোনো বিকল্প নেই। কিন্তু অনেকেরই তীব্র গরমের পাশাপাশি শীতের সময়গুলোতেও ডাবের পানি খাওয়ার অভ্যাস রয়েছে। কিন্তু আপনি কি জানেন, গরম কিংবা শীত, যেকোনো আবহাওয়াতেই ডাবের পানি খেলে শরীরে কী পরিবর্তন ঘটে?
বিশেষজ্ঞদের মতে, গরমে ডাবের পানি পান করা বিশেষ উপকারী। কারণ তীব্র গরমে ত্বকে ডিহাইড্রেশন বা পানির ঘাটতি দেখা দিলে তা দ্রুত পূরণ করতে পারে ডাবের পানি।
ডাবের পানির উপকারিতা -
১. পুষ্টির ভালো উৎস
ডাবের পানিতে ৯৪ শতাংশ জলীয় অংশ ও খুবই অল্প পরিমাণে ফ্যাট থাকে। এক কাপ বা ২৪০ মিলিলিটার ডাবের পানিতে ৬০ ক্যালোরি ছাড়াও থাকে ১৫ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট, ৮ গ্রাম চিনি, প্রতিদিনের দরকারি ক্যালসিয়ামের ৪ শতাংশ, ম্যাগনেসিয়ামের ৪ শতাংশ, ফসফরাসের ২ শতাংশ ও পটাশিয়ামের ১৫ শতাংশ।
২. অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকতে পারে
প্রাণীর ওপর গবেষণায় দেখা যায়, ডাবের পানিতে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে। এই অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীরের ফ্রি রেডিক্যালগুলোকে পরিবর্তনে সহায়তা করে যাতে করে এগুলো শরীরের ক্ষতি না করতে পারে, তবে এখন পর্যন্ত মানবদেহের ওপর এ সংক্রান্ত কোনো গবেষণা হয়নি।
৩. ডায়াবেটিস রোগীদের রক্তে শর্করা কমাতে সহায়তা করতে পারে
গবেষণায় দেখা যায়, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ইঁদুরের রক্তে শর্করার পরিমাণ কমানোর পাশাপাশি অন্যান্য স্বাস্থ্যগত উপকারে আসতে পারে ডাবের পানি। ২০২১ সালের এক গবেষণায় দেখা যায়, ডায়াবেটিসে আক্রান্ত ইঁদুরের রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমায় ডাবের পানি। মানবদেহে এ ধরনের প্রভাব বুঝতে আরও গবেষণা হওয়া দরকার।
৪. কিডনিতে পাথর জমা প্রতিরোধে সহায়ক হতে পারে
কিডনিতে পাথর জমা প্রতিরোধে পর্যাপ্ত তরল পান গুরুত্বপূর্ণ। শুধু পানি ভালো উৎস হলেও স্বল্পমেয়াদি দুটি গবেষণায় দেখা যায়, ডাবের পানি সাধারণ পানিরও চেয়ে বেশি উপকারী হতে পারে।
৫. হৃৎপিণ্ডের সুস্বাস্থ্যের সহায়ক হতে পারে
হৃদরোগের ঝুঁকি কমাতে সহায়তা করতে পারে ডাবের পানি। ২০০৮ সালের এক গবেষণার অংশ হিসেবে গবেষকরা ইঁদুরের দুটি দলের একটিকে ফ্যাট ও কোলেস্টেরলযুক্ত খাবার খাওয়ান। আরেকটি দলকে দেয়া হয় ডাবের পানির উচ্চ ডোজ (শরীরের ওজনের প্রতি ১০০ গ্রামের বিপরীতে ৪ মিলিলিটার)। ৪৫ দিন পর দেখা যায়, ডাবের পানি খাওয়া দলটির দেহে কোলেস্টেরল ও ট্রাইগ্লিসারাইড কমেছে। মানবদেহে এমন প্রভাব নিয়ে আরও গবেষণা দরকার।
৬. শরীরকে সিক্ত রাখার সুস্বাদু উৎস
রাসায়নিকমুক্ত ডাবের পানি হালকা মিষ্টি। এতে বাদামের কিছুটা ফ্লেভারও আছে। এ পানীয়তে অনেক কম ক্যালোরি ও কার্বোহাইড্রেট। এ কারণে এতে তুলনামূলক স্বাস্থ্যগত ঝুঁকিও কম।
৭.ব্যায়ামের পর পানির ঘাটতি পূরণে সহায়ক হতে পারে
ব্যায়ামের পর উপযুক্ত পানীয় হতে পারে ডাবের পানি। এটি পানির ঘাটতি পূরণের পাশাপাশি ব্যায়ামের কারণে ইলেকট্রোলাইটের ঘাটতি পূরণে সহায়ক হতে পারে। ইলেকট্রোলাইট এক ধরনের খনিজ পদার্থ, যা শরীরে তরলের ভারসাম্য ধরে রাখার পাশাপাশি বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
একুশে সংবাদ/এ
আপনার মতামত লিখুন :