দীর্ঘক্ষণ কাজের সময় চোখ কম্পিউটার স্ক্রিনে আটকে থাকে। খুব বেশি সময় ধরে বসে থেকে অকাল মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে। সুচো বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিকেল কলেজ বিংইয়ান লির নেতৃত্বে এবং ২০২৪ সালে প্রকাশিত একটি সাম্প্রতিক গবেষণায় এই অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রার নিখুঁত প্রতিষেধক এবং মৃত্যুর ঝুঁকি বৃদ্ধি পেয়েছে।
গবেষণায় ১০০০০ এরও বেশি মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কদের বিশ্লেষণ করা হয়েছে এবং দেখা গিয়েছে যে সকল মানুষ জীবনধারা অনুসরণ করার সময় কফি পান করেন তারা নেতিবাচক প্রভাব থেকে সুরক্ষিত। এমনকি এই কফি আমাদের অকাল মৃত্যু থেকেও আমাদের বাঁচায়।
গবেষণাটি ১৩ বছর ধরে পরিচালিত হয়েছিল:
১৩ বছর ধরে ১০ হাজার মার্কিন প্রাপ্তবয়স্কের উপর এই গবেষণা চালানো হয়েছিল। তাদের প্রতিদিনের বসে থাকার সময় এবং তাদের কফি পান করার অভ্যাসের ভিত্তিতে তাদের দলবদ্ধ করা হয়েছিল। গবেষণাটি - ফলাফলের যথার্থতা নিশ্চিত করার জন্য - মৃত্যুর হারকে প্রভাবিত করতে পারে এমন অন্যান্য কারণগুলিও বিবেচনা করেছিল। সেগুলি হল বয়স, লিঙ্গ, জাতি, শিক্ষার স্তর, আয়, বডি মাস ইনডেক্স এবং বিভিন্ন স্বাস্থ্য অবস্থা।
গবেষণায় দেখা গিয়েছে, যারা দিনে আট ঘণ্টা বসে কাটান তাদের মৃত্যুর ঝুঁকি ৪৬ শতাংশ এবং হৃদরোগে মারা যাওয়ার ঝুঁকি ৭৯ শতাংশ বেশি। তবে, কফি পানকারীরা যে কোনও কারণে মারা যাওয়ার ঝুঁকি ৩৩% কম এবং কার্ডিওভাসকুলার রোগে মারা যাওয়ার ঝুঁকি ৫৪% কম।
কফির প্রতিরক্ষামূলক স্বাস্থ্য প্রভাব:
গবেষণা প্রস্তাবিত করে যে কফির প্রদাহ-বিরোধী এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট বৈশিষ্ট্যগুলি দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ক্ষতিকারক প্রভাবগুলির নিখুঁত প্রতিষেধক হিসাবে কাজ করতে সহায়তা করতে পারে। এছাড়াও গবেষণায় আরও যোগ করা হয়েছে যে কফি অলস জীবনযাত্রার ক্ষতিকারক প্রভাবগুলি প্রতিহত করতে পারে, তবে শারীরিকভাবে সক্রিয় জীবনযাত্রার অনুশীলন এবং আলিঙ্গনে আমাদের আরও সক্রিয় হওয়া উচিত।
সকালে না, বরং রাতে খান কফি। পাবেন একাধিক সুফল
কফি অর্থাৎ ক্যাফাইন যুক্ত এই পানীয়টি অতিরিক্ত খেলে হয় ডিহাইড্রেশন। শুধু তাই নয়, অনিদ্রা বা হাই ব্লাড প্রেসারের সমস্যা হতে পারে অতিরিক্ত কফি খেলে। কফি খাওয়ার এই অপকারিতার কথা শুনে অনেকেই রাতে কফি খান না। কিন্তু জানলে অবাক হয়ে যাবেন, রাতে নিয়মিত যদি কফি খান সেক্ষেত্রে আপনি পেতে পারেন একাধিক উপকারিতা।
স্মৃতিশক্তি বাড়ায়: রাতে কাজ করতে করতে বা পড়াশোনা করতে করতে কফি খেলে স্মৃতিশক্তি বেড়ে যায় অনেকটা। কফিতে থাকা ক্যাফাইন মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট রিসেপ্টরের সাথে যোগাযোগ করে এবং স্মৃতিশক্তি বাড়ায়। তাই রাতে পড়াশোনা করার সময় কফি খেতে পারেন নিশ্চিন্তে।
ওজন নিয়ন্ত্রণ করে: কফি একটি কম ক্যালরিযুক্ত পানীয় হওয়ায় এটি ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতেও সাহায্য করে। রাতে কফি খেলে আপনার বিপাকক্রিয়া উন্নত হবে ফলে আপনার ওজন থাকবে নিয়ন্ত্রণে। এছাড়া কফিতে থাকা অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট শরীর থেকে টক্সিন বের করে দিতে সাহায্য করে এবং শরীরকে রাখে সতেজ।
মানসিক অবসাদ কমায়: কফিতে থাকা ডোপামিন আপনার মনকে আনন্দিত করে তোলে। রোজ রাতে নিয়মিত কফি খেলে শরীরে ডোপামিনের মাত্রা বজায় থাকে এবং আপনার মানসিক অবসাদ কমে যায়।
শারীরিক কর্ম ক্ষমতা বাড়ায়: কফিতে থাকা ক্যাফাইন শরীরের কার্যক্ষমতা বাড়ায় এবং আপনাকে করে রাখে সতেজ। অনেকেই আছেন যারা রাতের দিকে ওয়ার্ক আউট করেন, তাদের জন্য কফি একটি ভালো সংযোজন হতে পারে। কফি খাওয়ার কিছুক্ষণ পর ব্যায়াম করলে আপনার শরীরের কর্ম ক্ষমতা আরো বেশি বেড়ে যায়।
রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়: নিয়মিত কফি খেলে টাইপ ২ ডায়াবেটিস, লিভারের সমস্ত রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যায়। কফিতে থাকা ক্যাফাইন আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় এবং আপনাকে সুস্থ রাখে।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :