AB Bank
ঢাকা বুধবার, ০৬ নভেম্বর, ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

লিভার নষ্টের লক্ষণ: সতর্ক থাকুন


Ekushey Sangbad
লাইফস্টাইল ডেস্ক
০৩:১১ পিএম, ২ নভেম্বর, ২০২৪
লিভার নষ্টের লক্ষণ: সতর্ক থাকুন

লিভার আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যা বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ কার্যক্রমের মাধ্যমে আমাদের সুস্থ রাখে। তবে বিভিন্ন কারণে লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট হতে পারে, যা অনেক সময় জীবনহানি হতে পারে। লিভার নষ্টের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কারণ দ্রুত চিকিৎসা পেলে লিভারের ক্ষতি প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে। এই ব্লগটিতে লিভার নষ্টের কিছু লক্ষণ সাথে কারণ ও প্রতিরোধের ব্যাপারে আলোচনা করবো।

 

লিভারের ভূমিকা এবং গুরুত্ব :
লিভার শরীরের বৃহত্তম অঙ্গগুলির মধ্যে একটি, যার বিভিন্ন ধরনের কার্যক্রম রয়েছে। এটি খাদ্য থেকে পুষ্টি শোষণ করে এবং রক্তে থাকা বিষাক্ত পদার্থগুলো পরিষ্কার করে। এছাড়াও লিভার রক্ত জমাট বাঁধার জন্য প্রয়োজনীয় প্রোটিন তৈরি করে এবং গ্লুকোজ উৎপাদন করে, যা শরীরের জন্য শক্তি সরবরাহ করে।

লিভারের স্বাভাবিক কার্যক্ষমতা নষ্ট হলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা দেখা দেয়, যার মধ্যে কিছু সাধারণ লক্ষণ রয়েছে। এ ধরনের লক্ষণগুলির প্রতি নজর দেওয়া এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

 

লিভার নষ্টের সাধারণ লক্ষণগুলো-


চর্ম ও চোখের রঙ পরিবর্তন
লিভারের প্রধান লক্ষণগুলির মধ্যে একটি হলো জন্ডিস, যা চর্ম এবং চোখের সাদা অংশের হলুদ রঙে পরিবর্তন দ্বারা চিহ্নিত করা যায়। যখন লিভার সঠিকভাবে কাজ করে না, তখন বিলিরুবিন নামক একটি রস রক্তে জমা হতে থাকে, যা চর্ম ও চোখের রঙ হলুদ করে দেয়।

পেটে ফুলে যাওয়া এবং পেটের ব্যথা
লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট হলে পেটে পানি জমা হতে পারে, যা পেট ফোলার কারণ হতে পারে। এছাড়াও পেটে অস্বাভাবিক ব্যথা হতে পারে, যা সাধারণত লিভারের ক্ষতির কারণে ঘটে।

অতিরিক্ত ক্লান্তি বা দুর্বলতা
লিভারের সমস্যার কারণে শরীরে গ্লুকোজের উৎপাদন কমে যায়, যা শরীরে ক্লান্তি এবং দুর্বলতার সৃষ্টি করে। আপনি যদি হঠাৎ করে অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করেন, তবে এটি লিভারের সমস্যার একটি প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে।

অবিলম্বে ওজন হ্রাস
লিভারের সমস্যা থাকলে আপনার ওজন দ্রুত হ্রাস পেতে পারে। খাদ্যের স্বাদ না পাওয়া, খিদে কমে যাওয়া, এবং লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যাওয়ার কারণে শরীরের পুষ্টি শোষণের ক্ষমতা কমে যায়, যা দ্রুত ওজন হ্রাসের কারণ হতে পারে।

মল ও প্রসাব রঙের পরিবর্তন
লিভারের সমস্যার কারণে মল ও প্রসাবের রঙ পরিবর্তিত হতে পারে। মল খুব হালকা বা সাদা হতে পারে, এবং প্রসাব গাঢ় হলুদ বা বাদামি হতে পারে। এসব পরিবর্তন লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্টের একটি লক্ষণ হতে পারে।

রক্তক্ষরণ এবং সহজেই আঘাত লাগা
লিভার রক্ত জমাট বাঁধার প্রোটিন তৈরি করে। যখন লিভার ঠিকমতো কাজ করে না, তখন শরীরে রক্তক্ষরণ সহজেই হতে পারে এবং সামান্য আঘাতেই চর্মের নিচে রক্ত জমে যেতে পারে।

 

মনোযোগের অভাব ও মস্তিষ্কের সমস্যা গুলো

লিভার যদি রক্তের বিষাক্ত পদার্থ গুলো পরিষ্কার না করতে পারে, তবে সেগুলো মস্তিষ্কে জমা হতে পারে, যা মনোযোগের অভাব, স্মৃতিভ্রম, এবং স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তা হ্রাসের মতো সমস্যার কারণ হতে পারে।

 

লিভার নষ্টের কারণ গুলি
লিভার নষ্টের কারণ হতে পারে বিভিন্ন রোগ এবং জীবনযাত্রার কিছু অভ্যাস। নিচে লিভার নষ্টের কিছু প্রধান কারণ নিয়ে আলোচনা করা হলো:

 

অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন
অ্যালকোহল লিভারের অন্যতম প্রধান শত্রু। অতিরিক্ত অ্যালকোহল সেবন লিভারের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং সিরোসিস নামক একটি মারাত্মক রোগের কারণ হতে পারে, যা লিভার নষ্টের প্রধান কারণগুলোর মধ্যে একটি।

হেপাটাইটিস ভাইরাস
হেপাটাইটিস এ, বি, এবং সি ভাইরাসগুলো লিভার সংক্রমণের কারণ হতে পারে। এই ভাইরাসগুলো লিভারের প্রদাহ সৃষ্টি করে এবং লিভারের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয়, যা লিভার নষ্টের দিকে নিয়ে যায়।

ফ্যাটি লিভার রোগ
লিভারে অতিরিক্ত চর্বি জমা হলে ফ্যাটি লিভার রোগ হতে পারে, যা ধীরে ধীরে লিভারের কোষগুলো ক্ষতিগ্রস্ত করে। এই রোগটি ডায়াবেটিস, উচ্চ রক্তচাপ, এবং স্থূলতার সঙ্গে সম্পর্কিত।

দীর্ঘমেয়াদী ওষুধ সেবন
কিছু ওষুধ দীর্ঘমেয়াদে লিভারের ক্ষতি করতে পারে। বিশেষ করে, ব্যথানাশক ওষুধ এবং কিছু অ্যান্টিবায়োটিক দীর্ঘ সময় ধরে সেবন করলে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে পারে।

অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ও স্থূলতা
অতিরিক্ত ফাস্টফুড ও চর্বিযুক্ত খাবার গ্রহণ এবং স্থূলতা লিভারের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে। অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের ফলে লিভারে চর্বি জমে যায়, যা লিভারের কার্যক্ষমতা নষ্ট করে।

 

লিভার নষ্ট প্রতিরোধে করণীয়
লিভার নষ্টের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। লিভারের যত্ন নেওয়ার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিচে দেওয়া হলো:

সঠিক খাদ্যাভ্যাস
লিভারের স্বাস্থ্য রক্ষার জন্য সঠিক খাদ্যাভ্যাস অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রচুর শাকসবজি, ফল, এবং প্রোটিনযুক্ত খাদ্য গ্রহণ করতে হবে এবং চর্বিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে।

অ্যালকোহল থেকে বিরত থাকা
অ্যালকোহল লিভারের জন্য অত্যন্ত ক্ষতিকর, তাই অ্যালকোহল সেবন এড়িয়ে চলতে হবে। যদি সেবন করতে হয়, তবে তা নিয়ন্ত্রিত মাত্রায় করতে হবে।

নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা
লিভারের কার্যক্ষমতা নিয়মিত পরীক্ষা করানো উচিত, বিশেষ করে যদি আপনার পরিবারে লিভারের সমস্যা থেকে থাকে। স্বাস্থ্য পরীক্ষার মাধ্যমে লিভারের সমস্যা গুলো প্রাথমিক পর্যায়ে ধরা পড়লে তা নিয়ন্ত্রণে রাখা সহজ হয়।

শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণ
শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা লিভারের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নিয়মিত ব্যায়াম এবং সঠিক খাদ্যাভ্যাসের মাধ্যমে স্থূলতা প্রতিরোধ করতে হবে।

হেপাটাইটিস এর বিরুদ্ধে টিকা নেওয়া
হেপাটাইটিস বি এবং এ এর বিরুদ্ধে টিকা গ্রহণ করলে এই ভাইরাসগুলো সংক্রমণ থেকে লিভারকে রক্ষা করা সম্ভব।

 

উপসংহার
লিভার আমাদের শরীরের একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ, যার নষ্ট হয়ে যাওয়া জীবনকে বিপদের মুখে ফেলে দিতে পারে। লিভার নষ্টের লক্ষণ গুলো সম্পর্কে সচেতন থাকা এবং সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন, সঠিক খাদ্যাভ্যাস, এবং নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা মাধ্যমে লিভারকে সুস্থ রাখা সম্ভব। সচেতনতা এবং যত্নের মাধ্যমে আমরা আমাদের লিভারকে সুস্থ রাখতে পারি এবং দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন যাপন করতে পারি। (সংগ্রীহিত)

 

একুশে সংবাদ/বিএইচ

Link copied!