মানবদেহের অন্যতম অঙ্গ কিডনি। আজকাল কিডনির সমস্যায় অনেকেই ভুগছেন। কমবয়সিদের মধ্যেও এই সমস্যার বাড়বাড়ন্ত দেখা যাচ্ছে। পানি কম খাওয়া, দীর্ঘক্ষণ প্রস্রাব চেপে রাখা, বাইরের খাবার বেশি করে খাওয়া— এমন কিছু কারণেই কিডনিতে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। শুধু তো পাথর জমা নয়, কিডনিতেও আরও নানা সংক্রমণ বাসা বাঁধতে পারে।
কিডনিতে কোনো সমস্যা হলে বাইরে থেকে সব সময় তার আঁচ পাওয়া যায় না। কারণ উপসর্গগুলো এত মৃদু হয় যে, বোঝার উপায় থাকে না। তাই কিডনি ভালো রাখতে খাওয়া-দাওয়ায় জোর দিতে হবে। ভারতীয় এক সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে এ নিয়ে চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, কিডনিতে পাথর হওয়ার সমস্যা দূরে রাখতে পারে কয়েকটি ফল। নিয়ম করে সেগুলো খেলে কিডনি ভালো থাকবে।

লেবু: পাতি, কাগজি, গন্ধরাজ লেবু তো সব বাজারে প্রায়ই পাওয়া যায়। প্রতিদিনকার খাবারের তালিকায় আমরা এই লেবুগুলিই রাখি। এছাড়া একটি বড় লেবু আছে। ইংরেজিতে যাকে সিট্রন বা সাইট্রাস মেডিকা বলে। এর আকৃতি ছোট লেবুর মতো গোলাকার নয়। এটি দেখতে করলার মতো এবং এর রঙ হলুদ বা সবুজ। কিন্তু এর বীজ কিছুটা বড়।
চিকিৎসকের মতে, আপনি যদি কিডনিতে পাথরের সমস্যায় ভুগে থাকেন, তাহলে তা থেকে মুক্তি পেতে বড় লেবু ব্যবহার করতে পারেন। এর জন্য, আপনার প্রতিদিন সকালে খালি পেটে এই লেবুর রস ২০ মিলি পান করা উচিত। তিন-চার সপ্তাহের বেশি খাবেন না। এর অতিরিক্ত সেবনে আমবাতের ঝুঁকি বড়াতে পারে।

আপেল: প্রচলিত আছে ‘প্রতিদিন একটা আপেল খান আর ডাক্তারকে দূরে রাখুন’। কথাটা কিডনির ক্ষেত্রেও সত্য। আপেল উচ্চ আঁশযুক্ত খাবার, এতে অ্যান্টি-ইনফ্লামেটোরি আছে যা বাজে কোলেস্টেরল দূর করে হৃদরোগ প্রতিরোধ করে। এছাড়া এটি ক্যানসারের ঝুঁকি কমায়।

সাইট্রাস জাতীয় ফল : ভিটামিন সি সমৃদ্ধ সাইট্রাস গোত্রের ফল কিডনিতে পাথর জমতে দেয় না। তাই এই ধরনের ফল নিয়ম করে খাওয়া যায়। কমলালেবু, আনারস, পাতিলেবু, স্ট্রবেরি কিডনি ভালো রাখে। অ্যাসিড-জাতীয় উপাদান ছাড়াও এই ফলে থাকা ভিটামিন সি কিডনি সুরক্ষিত রাখে।

বেদানা : কিডনি ভালো রাখতে বেদানাও দারুণ কার্যকরী। বেদানায় রয়েছে অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট, যা যে কোনো রকম সমস্যা থেকে দূরে রাখে কিডনিকে। বেদানা কিডনির কার্যকলাপ সচল রাখে। ফলে বেদানা রাখা জরুরি রোজের ডায়েটে।

বেরি: স্ট্রবেরি, ব্লুবেরিতে রয়েছে অক্সালেটস নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এই উপাদান কিডনির সুরক্ষা বজায় রাখে। কিডনি সংক্রান্ত কোনো সমস্যার ঝুঁকি কমায়। অন্যান্য ফলের সঙ্গে তাই নিয়ম করে খেতে পারেন বেরিও। উপকার পাবেন।

স্ট্রবেরি, ব্লুবেরি: স্ট্রবেরি, ব্লুবেরিতে রয়েছে অক্সালেটস নামক অ্যান্টিঅক্সিড্যান্ট। এই উপাদান কিডনির সুরক্ষা বজায় রাখে। কিডনি সংক্রান্ত যেকোনো সমস্যার ঝুঁকি কমায়। অন্যান্য ফলের সঙ্গে তাই নিয়ম করে খেতে পারেন বেরিও; উপকার পাবেন।

ক্যানবেরি জুস: চেরির মতো ক্যানবেরিতেও রয়েছে প্রচুর মাত্রায় ভিটামিন সি ও ম্যাগনেসিয়াম। এই দুটি উপাদান কিডনির ক্ষমতা বাড়াতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে। নিয়মিত ক্যানবেরি জুস খেলে মূত্রথলির সংক্রমণ কমে যায়। সেই সঙ্গে এটি কিডনিও পরিষ্কার করে। এছাড়া কিডনিতে পাথর জমার ঝুঁকিও কমে যায়।

ডাবের পানি: ডাবের পানিতে রয়েছে ভালো পরিমাণে ইলেকট্রোলাইটস। এই ইলেকট্রোলাইটস কিন্তু কিডনির জন্য বিশেষভাবে প্রয়োজন। আপনি যদি কিডনি সুস্থ রাখতে চান, তবে ডাবের পানি পান করতে হবে। সপ্তাহে একবার বা দুইবার করতে পারেন। আবার পকেটে কুলালে প্রতিদিন পান করতে পারেন।

তরমুজ: প্রতিদিন তরমুজ খেতে পারলেও খুব ভালো। তরমুজের মধ্যে থাকে প্রচুর পরিমাণ পানি। এছাড়া থাকে লাইকোপেন, পটাশিয়াম। যা কিডনির কার্যকারিতা বাড়ায়। সেই সঙ্গে প্রস্রাবের অম্লতা নিয়ন্ত্রণে রাখে। বেদানার রসেও প্রচুর পরিমাণ পটাশিয়াম থাকে। এছাড়া থাকে অ্যাস্ট্রিনজেন্ট। যা কিডনিতে পাথর হতে দেয় না।
একুশে সংবাদ/ এস কে
আপনার মতামত লিখুন :