AB Bank
ঢাকা সোমবার, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫, ৬ মাঘ ১৪৩০

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

উজিরপুরের সন্তান কিংবদন্তি শিল্পী মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়


Ekushey Sangbad
শাহ আলম ডাকুয়া
১২:০৪ পিএম, ২০ জানুয়ারি, ২০২৫
উজিরপুরের সন্তান কিংবদন্তি শিল্পী মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়

ভারতীয় উপমহাদেশের সংগীতের দিকপাল নজরুলগীতি ও আধুনিক গানের শিল্পী ও সুরকার মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের মৃত্যু দিবস ১৯ জানুয়ারি। ১৯৯২ সালের এই দিনে তিনি কলকাতায় মৃত্যুবরণ করেন। 

বরিশালের উজিরপুর উপজেলা বাজারের দক্ষিণে বাদামতলার সন্নিকটে (পৌরসভার ৭ নং ওয়ার্ড) সন্ধ্যা নদীর তীরে ছিল সম্ভ্রান্ত হিন্দু পরিবার মুখার্জিদের বসতবাড়ি। বাড়িটি ‘গানের বাড়ি’ হিসেবে উপজেলায় পরিচিতি লাভ করেছিল। এ বাড়ির সন্তান নজরুলগীতি ও বাংলা আধুনিক গানের প্রখ্যাত গায়ক মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ১১ আগস্ট ১৯২৯ সালে জন্মগ্রহণ করেন। তারা বাবা অতুলচন্দ্র মুখোপাধ্যায়। কাকা সিদ্ধেশ্বর ও রত্নেশ্বরও (সুরকার রতু মুখোপাধ্যায়) এ উপমহাদেশের কালজয়ী সুরকার, সংগীত পরিচালক ও শিক্ষক ছিলেন। 

Manabendra Mukhopadhyay : নজরুল স্বয়ং গান শিখিয়েছিলেন মানবেন্দ্রকে, রইল  শিল্পীর কিছু অজানা গল্প - Manabendra Mukhopadhyay Learnt Nazrul Geeti From  Kazi Nazrul Islam And Some Of His Unknown ...

ছোটবেলা কলকাতায় কাটলেও মানবেন্দ্র ‘উজিরপুর-বারোপাইকা ইউনিয়ন মডেল ইন্সটিটিউশনে (ডব্লিউ বি ইউনিয়ন মডেল ইন্সিটিউশন) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বাঁধলে ভর্তি হন। উজিরপুরের এই বিদ্যালয় (মুখার্জিদের বাড়ির কাছে) থেকে তিনি ১৯৪৬ সালে ম্যাট্রিকুলেশন (এসএসসি) পাস করেন। এবং ম্যাট্রিকুলেশন পরীক্ষার পর তিনি আবার কলকাতার বাসায় চলে যান। এবং নিজেকে সংগীত সাধনায় ব্যস্ত রাখেন মৃত্যুর আগ পর্যন্ত। 

মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের নাড়ির টানে গ্রামের বাড়ি উজিরপুরে আসা-যাওয়ার বিষয়ে ভারতীয় লেখক দেবশঙ্কর মুখোপাধ্যায় তার এক প্রবন্ধে বিস্তারিত বলেন। দেবশঙ্করের ‘আমি এত যে তোমায় ভালবেসেছি’ লেখাটি‘আনন্দবাজার অনলাইন’ ৬ জানুয়ারি-২০২৫ সালে প্রকাশ করে। যার কিছু অংশ এখানে উল্লেখ করা হলো-‘ছোট থেকে এত রকমের গানের মধ্যে দিয়ে গেছেন যে, পরে সেই ভিন্নতার রেশ পড়েছে তাঁর সুরের গড়নেও।

special write up about veteran singer manabendra mukhopadhyay on his 85th  birth anniversary - Anandabazar

ঠাকুরদা গজেন্দ্রনাথ (মানবেন্দ্রর দাদা) ছিলেন অসম্ভব সঙ্গীতরসিক মানুষ। রজনীকান্ত সেনের সঙ্গে একই মেসে থাকতেন। নিজে ভক্তিগীতি, হরিনামের গান গাইতেন। রজনীকান্ত গান লিখে গজেন্দ্রনাথকে দেখাতেন।বরিশালের উজিরপুরে ওঁদের যে দেশের বাড়ি, তার চণ্ডীমণ্ডপে গান লেগেই থাকত। রাধাকৃষ্ণের লীলাকীর্তন, রয়ানী গান, মনসামঙ্গলের আসর। মাঝিমাল্লারাও গান গাইত। সারিন্দা বাজিয়ে। সারিজারি ভাটিয়ালি। ‘আর কত দিন রইব দয়াল/নেবানি আমায়’। নমঃশুদ্র মাঝিরা গাইতো হরে নামসংকীর্তন।

বাবা অতুলচন্দ্র গানবাজনা না করলেও, তারই উৎসাহে দুই কাকা রত্নেশ্বর আর সিদ্ধেশ্বর গানচর্চা করতেন। ওরাই ছিলেন ‘মুখুজ্জে পরিবার’-এ কীর্তন, ধ্রুপদী গানের বাহক। কাকাদের সঙ্গে হরির লুটের আসরে রূপানুরাগ, মান, মাথুর গাইতে যেতেন ও-বাড়ির পল্টন (মানবেন্দ্রর ডাক নাম)।

কালীঘাটে জন্মেছেন, কিন্তু দেশের টান, তার সুর আমৃত্যু ভোলেননি। বলতেন, ‘‘একটু যখন বড় হইলাম, দ্যাশের জন্য মন ক্যামন করলেই তখনকার বরিশাল এক্সপ্রেসে চাইপ্যা খুলনা হইয়া স্টিমারে ঝালকাঠি দিয়া দ্যাশের বাড়ি যাইতাম।’’ (মানবেন্দ্রর বক্তব্য) নজরুল সংগীতে তার অবদান ও তার গান রেকর্ডিংয়ের সময়ই ‘নজরুলগীতি’ হিসেবে নজরুলের গান প্রসিদ্ধি লাভ করে। মানবেন্দ্রর আগে নজরুলের গানকে গীতি হিসেবে বলা হতো না বলা হতো ‘সংগস অব নজরুল’। ‘নজরুলগীতি’ শব্দ মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায়ের জন্য উপমহাদেশে পরিচিতি লাভ করে।  

মানবেন্দ্রর পরীক্ষা নিয়েছিলেন তারাশঙ্কর! - Drishtibhongi দৃষ্টিভঙ্গি

মানবেন্দ্র মুখোপাধ্যায় ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতে একটি শক্তিশালী ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন। মানবেন্দ্র তার স্বতন্ত্র কণ্ঠে শ্রোতাদের কাছে তাৎক্ষণিক হিট হয়েছিলেন। সেই সময়ে বাংলা আধুনিক গানের জগতে ধনঞ্জয় ভট্টাচার্য, মান্না দে, সতীনাথ মুখোপাধ্যায়, অখিলবন্ধু ঘোষ, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়ের মতো কয়েকজন অসামান্য শিল্পীর উপস্থিতি ছিল। তিনি তার কাকা রত্নেশ্বর মুখার্জির (সঙ্গীত রত্নাকর, সঙ্গীত আচার্য, সঙ্গীত প্রভাকর) থেকে তার সঙ্গীত তালিম শুরু করেছিলেন। কাকা সিদ্ধেশ্বর মুখার্জি এবং রত্নেশ্বর মুখার্জির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিনে।

মানবেন্দ্র ১৯৫৩ সালে তার প্রথম মৌলিক ডিস্কের মাধ্যমে শ্রোতাদের মুগ্ধ করেছিলেন। তিনি এইচএমভির সাথে যৌথভাবে ‘ফিরে দেখো না’ এবং ‘জানি না তুমি কোথায়’ নামে তার দুটি রেকর্ড প্রকাশ করেছিলেন। গানের কথা লিখেছেন কাকা সিদ্ধেশ্বর মুখোপাধ্যায়। এটি কীর্তন আন্দাজের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল এবং মানবেন্দ্রকে শৈশব থেকেই কীর্তন, ভজন এবং ভক্তিগীতির প্রতি প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছিল। তার চাচারা প্রশিক্ষিত শাস্ত্রীয় বিশেষজ্ঞ ছিলেন এবং মূলত তাদের প্রভাবের কারণে তিনি সঙ্গীত জগতে আসেন। 

যে গান তৈরি হয়েছে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের জন্য - Drishtibhongi দৃষ্টিভঙ্গি

রোমান্টিক ‘আমি এত যে তোমায় ভালবেসেছি’ (গীতিকার শ্যামল গুপ্ত) ‘এমনি করে পড়বে মনে’ (গীতিকার- শ্যামল গুপ্ত) এবং আধা ক্লাসিক্যালি ‘ঘুমায় না সহেলি গো’সহ তার বেশ কয়েকটি গান মানুষের অন্তরে দাগ কাটে। অল্প সময়ের মধ্যে, মানবেন্দ্র বাংলার তৎকালীন নেতৃস্থান…

 

 

একুশে সংবাদ/ এস কে

Link copied!