যশোরের ঝিকরগাছা উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় দেখা দিয়েছে পানি সংকট। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়া, নদনদী ভরাট হয়ে যাওয়া আর ভূগর্ভস্থ পানির অপচয় এর মূল কারণ বলছেন পরিবেশবিদগন। সামনে চৈত্র বৈশাখ মাসে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে বলে তাদের ধারণা। ঝিকরগাছা পৌরসভা এবং আশেপাশের অধিকাংশ টিউবওয়েল আর ওয়াটার পাম্পে এখন পানি উঠছে না। এতে করে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন বহুতল ভবনের বাসিন্দারা।
শীতকালে সারাদেশে একেবারেই বৃষ্টি হয়নি। এখন ফাল্গুন মাস শেষ হতে চললেও বৃষ্টির দেখা নেই। দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার ফলে পানির লেয়ার নীচে নেমে গেছে। ফলে টিউবওয়েল চেপেও পানির দেখা মিলছে না। খাবার পানির জন্য বাসিন্দারা যেখানে গভীর নলকূপ বসানো আছে সেখান থেকে পানি আনছেন।
অন্যদিকে মাঠে বোরোধান এর মৌসুমে সেচযন্ত্রে ঠিকমতো পানি না ওঠায় কৃষকরা বিপাকে পড়েছেন। কৃষক আব্দুল জলিল বলেন, আমি ২ বিঘা জমিতে ধান চাষ করেছি। আগে যেখানে ৩/৪ ঘন্টা পাম্প চালালে হতো এখন সেখানে ৭/৮ ঘন্টা পাম্প চালাতে হচ্ছে। এবার ধানে খরচ অনেক বেশি হবে।
কৃষ্ণনগর গ্রামের বাসিন্দা আব্দুল আজিজ বলেন, আমার বাড়ির মোটরে পানি উঠছে না। টিউবওয়েল চেপে কোনোরকম প্রয়োজন মেটাচ্ছি।
লাউজনি গ্রামের বাসিন্দা ঝিকরগাছা দারুল উলুম কামিল মাদ্রাসার সহকারী মৌলভি মুনিরুল ইসলাম বলেন, আমার গ্রামের অধিকাংশ টিউবওয়েল অকেজো হয়ে পড়ে আছে। যাদের বাড়িতে সাব-মারসিবল বা গভীর নলকূপ আছে তাদের বাড়ি থেকে পানি এনে কাজ চালাতে হচ্ছে।
নতুনহাটের বাসিন্দা মাহমুদ হাসান বলেন, আরও একমাস আগে থেকে আমাদের গ্রামের টিউবওয়েল দিয়ে পানি উঠছে না।
খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে যাদের বাড়িতে গভীর নলকূপ আছে তারা গ্রামের লোকের কাছে পানি দেওয়ার জন্য বিদ্যুৎ বিলের কথা বলে মাসিক চুক্তিতে টাকা আদায় করছে।
ঝিকরগাছা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা মাসুদ হোসেন পলাশ বলেন, ভূগর্ভস্থ পানির ওপর বেশি নির্ভরশীলতা, ফসলের মাঠে পানির অপরিকল্পিত ব্যবহার এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে পানির যথেচ্ছ অপচয়ের কারণে আজ এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। আধুনিক কৃষি পদ্ধতি অনুসরণ এবং পানির অপচয় রোধ করতে না পারলে সামনে আরও ভয়াবহ পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে।
একুশে সংবাদ.কম/আ.হ.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :