দেশে বর্তমান লক্ষাধিক অভ্যন্তরীন নৌযান চলাচল করলেও ৮৫ শতাংশের লাইসেন্স নেই। এর মধ্যে রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এসেছে মাত্র ১৫ হাজার ৮৫০টি। এর ফলে নিরাপত্তা যেমন জোরদার করা যাচ্ছে না তেমনি সরকারও রাজস্ব বঞ্চিত হচ্ছে বলে জানিয়েছেন নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক।
মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির বৈঠকে এতথ্য জানানো হয়।
কমিটির সভাপতি মেজর (অবঃ) রফিকুল ইসলামের সভাপিতত্বে সংসদ ভবনে অনুষ্ঠিত বৈঠকে কমিটি সদস্য শাজাহান খান, রনজিত কুমার রায়, ডা. সামিল উদ্দিন আহমেদ শিমুল, মো. আছলাম হোসেন সওদাগর এবং এস এম শাহজাদা অংশ নেন।
বৈঠকের কার্যবিবরণী থেকে জানা গেছে, বৈঠকে নৌপরিবহন অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বলেন, দেশে ১ লাখ-এর বেশি ইনল্যান্ড ভেসেল চললেও মাত্র ১৫ হাজার ৮৫০টি রেজিস্ট্রেশনের আওতায় এসেছে। সকল ভেসেল রেজিস্ট্রেশনভুক্ত না থাকায় আইন প্রয়োগে সমস্যা হচ্ছে। এসব ভেসেল রেজিস্টেশনভুক্ত করা গেলে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে, সরকারের রাজস্ব আয় বাড়বে। রেজিস্ট্রেশনবিহীন ভেসেলসমূহ রেজিস্ট্রেশনভুক্ত করার প্রকল্প গ্রহণ করার উদ্যোগের কথাও জানান তিনি।
এছাড়া বৈঠকে বিশ্বব্যাপী সি ফেয়ারারের (নাবিক) ব্যাপক চাহিদা থাকায় বিশেষ প্রোগ্রাম নিয়ে এর সংখ্যা বাড়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। সেই সাথে এসএসসি/এইচএসসি পাস করার পরে আর্থিক সংকটসহ নানাবিধ কারণে উচ্চ শিক্ষাগ্রহণ করতে না পারা শিক্ষার্থীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ প্রদান করে নৌ সেক্টরে চাকরি পাওয়ার যোগ্য করে গড়ে তোলার প্রয়োজনীতার কথা বলা হয়।
এদিকে মঙ্গলবারের বৈঠকে কমিটির ইতোপূর্বেকার বৈঠকে নদী কমিশনের উপস্থাপিত কিছু অভিযোগ খন্ডন করা হয়। ওই বৈঠকে কমিটির সদস্য নৌ পরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, আদালতের নির্দেশনায় জাতীয় নদীরক্ষা কমিশন গঠিত হয়েছে। নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের অধীনস্থ কমিশনের কিছু কিছু বক্তব্য সরকার তথা দেশের স্বার্থের অনুকূলে থাকছে না। এ ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট সকলকে আরো সচেতন হওয়া দরকার। সরকারের সাথে যারা আছেন তারা আইন এবং সরকারের নির্দেশনার বাইরে যেন না যায় সেজন্য সংসদীয় কমিটিতে কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন।
জানা যায়, পদ্মাসেতু চালু হওয়ায় বিশেষ করে দক্ষিণাঞ্চলে নৌপরিবহন যোগাযোগ ব্যবস্থায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন হওয়ার ফলে নৌ মন্ত্রণালয়ের বিদ্যমান প্রকল্পগুলো পুনসমীক্ষা করার সুপারিশ করে কমিটি।
বৈঠকে নৌরুট সচল রাখার পাশাপাশি কৃষি সহায়ক ভূমিকাতে নদীখননকে গুরুত্ব দেওয়ার সুপারিশ করা হয়। একইসাথে যে সব ওয়াকওয়ে নির্মিত হয়েছে সেগুলো পরিচালনা ও রক্ষণাবেক্ষণের নীতিমালা প্রণয়নের সুপারিশ করা হয়।
একুশে সংবাদ.কম/আ.জ.প্র/জাহাঙ্গীর
আপনার মতামত লিখুন :