দরজায় কড়া নাড়ছে পবিত্র ঈদুল ফিতর। চাঁদ দেখা সাপেক্ষে আগামী ২২ বা ২৩ এপ্রিল অনুষ্ঠিত হবে মুসলিমদের বড় এই ধর্মীয় উৎসব। সে লক্ষ্যে ইতোমধ্যেই জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজকে ঘিরে সব ধরনের প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।
প্রতিবছর ঈদের প্রধান জামাত অনুষ্ঠিত হয় ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের আওতাধীন জাতীয় ঈদগাহে। নারী-পুরুষ মিলিয়ে এবারও এখানে ঈদের নামাজ আদায় করবেন প্রায় ২৫ হাজার মানুষ। ঈদের দিন সকাল সাড়ে ৮টায় হবে ঈদের প্রথম জামাত।
ডিএসসিসি সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ৩০ হাজার বর্গমিটারের জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে এরই মধ্যে সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করা হয়েছে। এবার ঈদগাহের প্যান্ডেলের ক্ষেত্রফল ২৫ হাজার চারশত বর্গমিটার। এরমধ্যে অতি গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের জন্য আলাদা নামাজের স্থান করা হয়েছে। যেখানে প্রায় ২৫০ জন পুরুষ এবং প্রায় ৮০ জন মহিলা নামাজ আদায় করতে পারবেন।
এছাড়াও জনসাধারণের মধ্যে প্রায় ৩১ হাজার পুরুষ এবং তিন হাজার ৫০০ জন মহিলা নামাজ আদায় করতে পারবেন। সবমিলিয়ে ঈদের দিনে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে প্রায় ৩৫ হাজার মুসল্লি একসঙ্গে নামাজ আদায়ের সুযোগ পাবেন।
জানা গেছে, এবারে ঈদগাহ ময়দানে প্রবেশের জন্য ভিআইপি গেট থাকছে একটি। পাশাপাশি জনসাধারণের জন্য একটি এবং মহিলাদের প্রবেশের জন্য পৃথক একটি গেট রাখা হয়েছে। এছাড়াও ঈদ জামায়াতে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানে ভিআইপি পুরুষ কাতার থাকবে ৫টি এবং মহিলা কাতার থাকবে একটি। আর জনসাধারণের জন্য পুরুষ কাতার থাকবে ৬৫টি (বড় আকারের) আর ৫০টি (ছোট আকারের) মহিলা কাতার থাকবে। সেই সঙ্গে অজুখানায় একসঙ্গে প্রায় ১১৩ জন পুরুষ ও ২৭ জন মহিলা পৃথক স্থানে অজু করতে পারবেন।
এদিকে, তীব্র গরমের কথা বিবেচনায় জাতীয় ঈদগাহে ১০টি এয়ার কুলার ছাড়াও পর্যাপ্ত ফ্যান ও লাইটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে খাবার পানি ছাড়াও থাকবে প্রাথমিক চিকিৎসা সেবা কেন্দ্র, ভ্রাম্যমাণ টয়লেটসহ বৃষ্টির পানি নিরসনের ব্যবস্থা।
এদিকে, দুপুরে সরেজমিনে জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সার্বিক প্রস্তুতি পরিদর্শন করেছেন ডিএসসিসি মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস। পরে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে তিনি বলেন, বিভিন্ন জায়গায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটছে। সেই সঙ্গে রয়েছে তীব্র তাপদাহ। তাই নিরাপত্তার স্বার্থে জাতীয় ঈদগাহ মাঠে আসা কোনো মুসল্লি নিজের সঙ্গে কোনো ধরনের দিয়াশলাই, লাইটার কেউ আনবেন না। সকলেই এ বিষয়ে সচেতন থাকবেন। নিরাপত্তা বাহিনীও এ ব্যাপারে অত্যন্ত সজাগ থাকবেন।
মেয়র তাপস বলেন, আমরা সকলে মিলে খুব সুন্দর একটা পরিবেশে জাতীয় ঈদগাহে ঈদের নামাজ আদায় করব। ঢাকাবাসীসহ সকলকে জাতীয় ঈদগাহে আসার জন্য আবেদন জানাচ্ছি। মহিলাদের নামাজের জন্য এখানে আমাদের আলাদা ব্যবস্থা রয়েছে।
ডিএসসিসি মেয়র জানান, মহিলাদের বের হওয়ার জন্য আলাদা গেটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেই সঙ্গে নামাজ শেষে মুসল্লিরা বের হওয়ার সময় যেন কোনো হুড়োহুড়ি না হয়, সে জন্য পর্যাপ্ত বের হওয়ার পথও আমরা রেখেছি। ঝড়-বৃষ্টি হলে যেন ভেতরে পানি ঢুকতে না পারে সে জন্য আমরা ত্রিপল দিয়ে ঘিরেছি পুরোটাই।
জাতীয় ঈদগাহ ময়দানের সার্বিক প্রস্তুতি পরিদর্শনকালে অন্যদের মধ্যে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।
একুশে সংবাদ/আজ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :