বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ সুরক্ষিত রাখার জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন শিশুরা।
তারা বলেছেন, বর্তমান সরকার সফলতার সঙ্গে অপুষ্টি কমিয়ে এবং টিকাদানের মাধ্যমে প্রতিরোধযোগ্য রোগ থেকে শিশুদের সুরক্ষিত করে লাখ লাখ শিশুর মৃত্যু ঠেকিয়েছে। তবে এই অগ্রগতি বজায় রাখার জন্য সরকারের আরো বেশি বিনিয়োগ করা প্রয়োজন।
বুধবার (৭ জুন) জাতীয় সংসদ ভবনের এলডি হলে ইউনিসেফ ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাস এয়াজিত ‘জাতীয় বাজেট ২০২৩-২০২৪ এবং শিশু অধিকার’ শীর্ষক ব্রিফিং এ সব কথা বলেন তারা।
জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার ও শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের চেয়ার শামসুল হক টুকু’র সভাপতিত্বে ব্রিফিং-এ মূল বক্তব্য উত্থাপন করেন বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি মিঃ শেলডন ইয়েট। বক্তৃতা করেন জাতীয় সংসদের হুইপ মাহবুব আরা গিনি, বিরোধী দলীয় হুইপ অধ্যক্ষ রওশন আরা মান্নান, শিশু অধিকার বিষয়ক সংসদীয় ককাসের ভাইস চেয়ারম্যান আরমা দত্ত, সংসদ সদস্য হাবিব-এ মিল্লাত প্রমূখ।
ব্রিফিং-এ খুলনা থেকে আসা ১৪ বছর বয়সী শিশু সাংবাদিক মাইশা আঞ্জুম আরিফা বলেন, আমি অনেক শিশুর সঙ্গে কথা বলেছি, যাদের দিনে তিনবেলা খাবারের জন্য কাজ করতে হয়। তাদের বেশিরভাগই আর স্কুলে যায় না এবং অনেককে অসুস্থ থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন কাজ চালিয়ে যেতে হচ্ছে। জাতীয় বাজেটে বরাদ্দের ক্ষেত্রে তাদের কথা বিবেচনায় রাখতে হবে।
ব্রিফিং-এ ডেপুটি স্পিকার বলেন, আজ শিশুদের কথা শুনে এটা পরিষ্কার যে, জনপ্রতিনিধি হিসেবে তাদের জন্য আমাদের আরো অনেক কিছু করার আছে। আমি তাদের অধিকার সমুন্নত রাখতে এবং তাদের মতামত তুলে ধরতে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। একই কাজ করার জন্য আমি আমার সহকর্মীদের প্রতিও আহ্বান জানাই।
২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক সুরক্ষার জন্য বরাদ্দ গত বছরের তুলনায় আনুপাতিকভাবে কমেছে বলে ব্রিফিং-এ উল্লেখ করা হয়। বাংলাদেশে নিযুক্ত ইউনিসেফের প্রতিনিধি মিঃ শেলডন ইয়েট বলেন, শিশুদের অধিকার পূরণে এবং তাদের সার্বিক কল্যাণে/ উন্নয়নে বাংলাদেশ প্রশংসনীয় অগ্রগতি করেছে। তবে গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক খাতে বিনিয়োগ বজায় না থাকলে এই অগ্রগতি পিছিয়ে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে। বাজেটে শিশুদের অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য সংসদ সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
ইউনিসেফের বিশ্লেষণে বলা হয়, স্বাস্থ্য খাতের প্রস্তাবিত বাজেটে বরাদ্দ এ বছর জিডিপির ০.৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল ০.৮৩ শতাংশ। সর্বজনীন স্বাস্থ্য কাভারেজ বা সবাইকে স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনার প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়নের জন্য বাংলাদেশের স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ ২ শতাংশ বাড়ানোর দিকে অগ্রসর হওয়ার প্রয়োজন হবে। এ ছাড়াও বাজেটে শিক্ষা খাতে বরাদ্দ জিডিপির ১.৭৬ শতাংশে নেমে গেছে, যা গত অর্থবছর ছিল ১.৮৩ শতাংশ। তবে, বৃহত্তর অন্তর্ভুক্তির দিকে অগ্রসর হওয়ার একটি ইতিবাচক পদক্ষেপ হলো প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থীদের জন্য শিক্ষা উপবৃত্তির পরিমাণ বাড়ানো।
প্রস্তাবিত বাজেটে সামাজিক সুরক্ষার ক্ষেত্রে মা ও শিশু সহায়তা কর্মসূচির সেবা গ্রহণকারীর সংখ্যা বাড়ানোর প্রস্তাবকে স্বাগত জানিয়েছে ইউনিসেফ। পাশাপাশি সুবিধার প্রকৃত মূল্যের উল্লেখযোগ্য পতন রোধে মুদ্রাস্ফীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বিধানের গুরুত্বের কথা উল্লেখ করা হয়েছে।
একুশে সংবাদ/আজ/এসএপি
আপনার মতামত লিখুন :