মোংলা-খুলনা রেলপথের নির্মাণ কাজ ২০১১ সালে শুরু হয়ে ২০১৩ সালে শেষ হবার কথা থাকলেও তা শেষ করতে পারেনি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান। ২০১০ সালের ২১ ডিসেম্বর জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) রেলপথ নির্মাণ প্রকল্পের প্রকল্প ব্যয় ধরা হয়েছিল ১ হাজার ৭২১ কোটি টাকা। কিন্তু নির্ধারিত সময়ে প্রকল্পের কাজ শেষ না হওয়ায় ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৩ হাজার ৮০১ কোটি টাকা। দুই দফায় প্রকল্প সংশোধনে ব্যয় বেড়েছে ২ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা।
দ্বিতীয় দফায় সংশোধনের পর ২০২২ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় বাড়ানো হয় এবং তখন ব্যয় বেড়ে দাঁড়ায় ৪ হাজার ২৬০ কোটি ৮৮ লাখ টাকা।
অবশেষে কয়েক দফা সময় ও ব্যয় বাড়িয়ে অবশেষে চলতি মাসেই শেষ হতে যাচ্ছে মোংলা-খুলনা রেলপথের নির্মাণ কাজ। অবশ্য এ মাসে আখাউড়া-আগরতলা ও মোংলা-খুলনা রেলপথ উদ্বোধনের কথা থাকলেও তা পিছিয়ে যায়।
ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান লারসেন অ্যান্ড টুব্রো তহরূপসা নদীর ওপর রেলসেতুর নির্মাণকাজ করেছে। বাকি কাজ করছে ভারতীয় ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ইরকন ইন্টারন্যাশনাল।
জানা গেছে, অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে চালু হচ্ছে নৌবন্দর মোংলার সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ। রেলপথের কাজ ৯৮ শতাংশ সম্পন্ন হয়েছে। এখন চলছে খুঁটিনাটি কাজ যা চলতি মাসেই শেষ হওয়ার আশা করছেন প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
এই একটি আন্তর্জাতিক রেলপথ। মোংলা-খুলনা রেলপথধ চালু হলে ট্রানজিট সুবিধার আওতায় আসবে ভারত, নেপাল ও ভুটান। আন্তঃদেশীয় পণ্যপরিবহন সহজ করতে খুলনার ফুলতলা রেলস্টেশন থেকে মোংলা বন্দর পর্যন্ত রেলপথ স্থাপন প্রকল্প হাতে নেয় হয়।
প্রকল্প পরিচালক আরিফুজ্জামান সংবাদমাধ্যমকে জানান, করোনা পরিস্থিতি ও নানা কারণে কাজ শেষ করতে সময় লেগেছে। দুই দফায় প্রকল্প সংশোধনের কারণে ব্যয় বেড়েছে ২ হাজার ৫৩৯ কোটি টাকা। তবে তৃতীয় দফায় প্রকল্পের মেয়াদ বাড়লেও ব্যয় বাড়েনি। আশা করছি, এবার নির্ধারিত সময়ে কাজ শেষ হবে।
মোংলা-খুলনা রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হলে ব্যবসা-বাণিজ্য গতিশীল হবে। বর্তমান সরকার দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে সারাদেশের যোগাযোগের জন্য যেমন পদ্মাসেতু নির্মাণ করেছে, তেমনি নিরবচ্ছিন্ন রেল যোগাযোগের ক্ষেত্রে মোংলা বন্দরের সঙ্গে রেল যোগাযোগ স্থাপন করেছে। এতে গার্মেন্টস পণ্যসহ বিভিন্ন পণ্য কম খরচে মোংলা বন্দর থেকে বিশে^র নানা প্রান্তে পরিবহন করা সহজ হবে। এতে ব্যবসা-বাণিজ্যে গতি বেড়ে যাবে।
মোংলা-খুলনা রেলপথের ৯৮ শতাংশ কাজ শেষ হয়েছে জানিয়ে প্রকল্পের পরিচালক মো. আরিফুজ্জামান বলেন, চলতি মাসে কাজ শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। সেইসঙ্গে অক্টোবরের শেষ সপ্তাহে এই পথ দিয়ে ট্রেন চলাচল শুরু হবে বলে আশা করছি। সেভাবে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি আমরা।
একুশে সংবাদ/আ.ভ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :