হযরত শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল মোড়ানো হয়েছে নান্দনিকতায়। ছাদের গায়ে ফুটে আছে শত শত পদ্ম ফুল। কাঁচে ঘেরা স্থাপনায় সহজেই ঢুকতে পারবে দিনের আলো। রয়েছে আধুনিক বোডিং কাউন্টার, ইমিগ্রেশন, অটোমেটিক লাগেজ চেক মেশিন, বডি স্ক্যানার। চলাচলের সুবিধার্থে থাকছে স্ট্রেইট এসকেলেটর ও বোডিং ব্রিজ।
প্রকল্পের মেয়াদ ২০২৪ সালের মার্চ পর্যন্ত হলেও তার আগেই শেষ হয়েছে নির্মাণকাজ। কমেছে খরচও। দেশে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হওয়া মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে উদাহরণ তৈরি করেছে হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল। মাত্র ৩ বছরেই উদ্বোধন করা হচ্ছে নান্দনিক এই স্থাপনা। এর উদ্বোধনের আগেই নান্দনিক স্থাপত্য শৈলীর কারণে আলোচনায় এসেছে স্থাপনাটি। দেশে সবচেয়ে কম সময়ের মধ্যে বাস্তবায়ন হওয়া মেগা প্রকল্পগুলোর মধ্যে উদাহরণ তৈরি করেছে এই টার্মিনাল।
দৃষ্টিনন্দন এমন স্থাপনার নকশা করেছেন সিঙ্গাপুরের রোহানি বাহরিন। সিঙ্গাপুরের চাঙ্গি, ভারত, ফিলিপাইন, চায়না, ভিয়েতনাম, মালদ্বীপের ভেলানাসহ বিভিন্ন দেশের বিমানবন্দরের নকশাও করেছেন তিনি। তবে নান্দনিকতায় ঢাকার তৃতীয় টার্মিনাল ছাড়িয়ে গেছে থাইল্যান্ডের সুবর্ণভূমি ও তুরস্কের ইস্তানবুল বিমানবন্দরকেও।
তৃতীয় টার্মিনালে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের করিডোরে ঢুকলেই বুকিং কাউন্টার। এখান থেকে লাগেজ বুকিং করে যাত্রীরা যাবেন ইমিগ্রেশনে। পরে বডি স্ক্যানার আর অটোমেটিক লাগেজ চেক করা হবে।
কোনো দেশের প্রবেশদ্বার হিসেবেই বিবেচনা করা হয় বিমানবন্দরকে। তাই তো উন্নত দেশগুলোর বিমানবন্দরে রাখা হয় বিশ্বমানের সব ধরনের সুবিধা। এতোদিন হজরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে বিভিন্ন দেশে ফ্লাইট পরিচালনা করা হলেও অবকাঠামোগত দুর্বলতায় সার্বক্ষণিক উন্নত সেবা নিশ্চিত করা সম্ভব হয়নি।
এমন বাস্তবতায় ২০১৭ সালের অক্টোবরে নতুন একটি টার্মিনাল নির্মাণের প্রকল্প পাস করা হয় জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটির সভায়। ২১ হাজার ৩৯৯ কোটি টাকায় নতুন এই টার্মিনালের নির্মাণকাজ শুরু হয় ২০২০ সালের এপ্রিলে। এর মধ্যে জাপানের সহায়তা ১৬ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। সিঙ্গাপুরের স্থপতি রুহানি বাহরিনের নকশায় পদ্ম ফুলের আদলে ছয় ঋতুকে প্রাধান্য দিয়ে নির্মাণ করা হয় এই টার্মিনাল।
৩ বছরেই শেষ হয়েছে ৯০ ভাগ কাজ। বাকি কাজও শেষ হবে নির্দিষ্ট সময়ের আগেই। এ প্রকল্প থেকে সাশ্রয় হয়েছে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। যা দিয়ে আরও কিছু অতিরিক্ত কাজ করার পরিকল্পনা করছে সিভিল এভিয়েশন কর্তৃপক্ষ।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :