বিএনপি চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় গঠিত মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা জানিয়েছেন, খালেদা জিয়ার লিভার ট্রান্সপ্লান্ট করতে হবে। উন্নত চিকিৎসার জন্যে জরুরিভিত্তিতে তাকে বিদেশ নেয়া প্রয়োজন। তার মৃত্যুঝুঁকি অনেক বেশি।
সোমবার (৯ অক্টোবর) রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতালের কনফারেন্স হলে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা এ কথা জানান।
মেডিকেল বোর্ডের সমন্বয়ক ডা. এস এম সিদ্দিকী বলেন, এখন খালেদা জিয়ার যে অবস্থা তাতে করে তাকে বাসায় নেওয়া যাবে না। এখানকার চিকিৎসকেরা তাদের সাধ্য অনুযায়ী যা করার করেছেন। এখন তাকে বিদেশে নিতেই হবে। এতে তার জীবন রক্ষা হতে পারে।
তিনি আরও বলেন, খালেদা জিয়ার এখন যে শারীরিক অবস্থা, তার লিভারে পানি জমেছে। সেই পানি ঝরছে। লিভার জীবাণু আক্রান্ত হয়ে গেছে। এ পরিস্থিতি থেকে উত্তরণে তাকে বাইরে নেওয়া দরকার।
অসুস্থ খালেদা জিয়াকে আর বাসায় নেওয়ার মতো অবস্থা নেই বলে জানান ডা. সিদ্দিকী। তিনি বলেছেন, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা এতটাই নাজুক যে তাকে উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হচ্ছিল। এখন সেগুলোও কাজ করছে না। খালেদা জিয়ার জীবন ঝুঁকির মধ্যে আছে।
খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার উন্নতি আরও দুই বছর আগেই তাকে দেশের বাইরে নেওয়া উচিত ছিল বলে জানান এস এম সিদ্দিকী। তিনি বলেন, এখানকার মেডিকেল বোর্ডের সদস্যরা তারা তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করেছেন। চিকিৎসকদের আন্তরিক চিকিৎসায় তিনি এখনো বেঁচে আছেন। কিন্তু আমাদের সীমাবদ্ধতা আছে। খালেদা জিয়ার ভালো চিকিৎসার এখনো সুযোগ আছে। সেটা দেশের বাইরে। খালেদা জিয়াকে দেশের বাইরে নিতেই হবে। তাকে মাল্টি ডিসিপ্লিনারি মেডিকেল সেন্টারে নেওয়া দরকার। দেশের বাইরে এর ব্যবস্থা আছে।
বিএনপি নেত্রীর ব্যক্তিগত চিকিৎসক এ জেড এম জাহিদ হোসেন বলেন, আমাদের মেডিকেল বোর্ড সর্বোচ্চটুকু করেছে। তাদের আর কিছু করার নেই। এখন বাইরে চিকিৎসার ব্যবস্থা আছে। খালেদা জিয়াকে বাঁচাতে হলে তাকে বাইরে নিতে হবে।
উল্লেখ্য, গত ৯ আগস্ট থেকে ঢাকার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন খালেদা জিয়া। দুর্নীতির দুই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি কারাবন্দী হন। দুই বছরের বেশি সময় কারাবন্দী ছিলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট ও জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় সাজাপ্রাপ্ত সাবেক প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে ২০২০ সালের ২৫ মার্চ সরকার নির্বাহী আদেশে সাজা স্থগিত করে শর্ত সাপেক্ষে মুক্তি দিয়েছিল। এরপর ছয় মাস পরপর তাঁর সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ বাড়াচ্ছে সরকার। শেষ গত মার্চ মাসে খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ ছয় মাস বাড়ানো হয়।
‘সর্বশেষ ১২ সেপ্টেম্বর বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সাজা স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ছয় মাস বাড়িয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :