চলতি মাসের ২৮ অক্টোবর বঙ্গবন্ধু টানেলের উদ্বোধনের পরপরই চালু হতে যাচ্ছে চট্টগ্রামের আরেক মেগাপ্রকল্প এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। এটি চালু হলে দেড় থেকে দুই ঘণ্টার পথ দীর্ঘ ১৬ কিলোমিটার যেতে সময় লাগবে মাত্র ২০ মিনিট। তাতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে বন্দরকেন্দ্রিক ব্যবসা বাণিজ্য ও নগরীর যোগাযোগ ব্যবস্থার।
চট্টগ্রাম বন্দর নগরীর বুক চিরে ছয় বছর ধরে চলা বিশাল কর্মযজ্ঞ একেবারেই শেষের দিকে। বহুতল ভবনগুলো ছাড়িয়ে মাথা তুলে দাঁড়িয়েছে স্বপ্নের এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। দেশের সক্ষমতা ও উন্নয়নের পালকে যুক্ত হচ্ছে আরেকটি মেগাপ্রকল্প। যেটি আমূল বদলে দেবে নগরীর অর্থনীতি, যোগাযোগ, জীবনমান।
এক্সপ্রেসওয়ের ওপরের পিচ ঢালাইয়ের কাজ শেষ হওয়ার পর এখন পুরোপুরি যান চলাচলের জন্য প্রস্তুত। সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহেই এটি উদ্বোধনের পরিকল্পনা রয়েছে বলে জানান চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস।
তিনি বলেন, যেহেতু টানেলটা উদ্বোধন হচ্ছে, এটি উদ্বোধনের সাথে সাথে দক্ষিণ চট্টগ্রামের লোকজন শহরের মধ্যে আসার চেষ্টা করবে। ফলে নগরীতে একটা চাপ তৈরি হবে। আর এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের চালু হলে তার পুরো সুবিধাটা কিন্তু জনগণ পাবে। চট্টগ্রাম নগরী ঘিরে রিং রোড চালুর পর আগামী ২৮ অক্টোবর উদ্বোধন হবে বঙ্গবন্ধু টানেল। এর পরপরই এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়েও চালু হলে বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটবে যোগাযোগ ব্যবস্থায়।
স্থানীয়রা জন সাধারন বলেন, উড়ালসড়কটি চালু হলে লালখান বাজার থেকে বিমানবন্দর পর্যন্ত আমরা ২০ মিনিটে পৌঁছে যেতে পারবো। এই উড়াল সড়কের ফলে যানজট অনেক কমে যাবে। এটি ৩৯০টি পিলার ও ৪০০টি গার্ডারের ওপর ১৬ কিলোমিটার এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে। তবে নগর পরিকল্পনাবিদ স্থপতি আংশিক ইমরান বলছেন, এক্সপ্রেসওয়ের মূল যে সড়ক সেটার কাজ হয়তো এই বছরের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে তবে শহরের বিভিন্ন পয়েন্টকে সংযুক্তকারী ১৪টি র্যাম্প নির্মিত না হওয়া পর্যন্ত এর সুফল মিলবে না।
‘চট্টগ্রাম শহরের লালখান বাজার হতে শাহ আমানত বিমানবন্দর পর্যন্ত এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে নির্মাণ’ নামে প্রকল্পটি একনেকে অনুমোদন হয় ২০১৭ সালে। ২০১৮ সালের মাঝামাঝি এর কাজ শুরু হয়। যদিও ২০১৯ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এই নির্মাণ কাজের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ৩ হাজার ২৫০ কোটি টাকার এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথা ছিল তিন বছরের মধ্যে। ২০২২ সালে নকশা ‘সংশোধন’ করে আরও এক হাজার ৪৮ কোটি টাকা ব্যয় বাড়িয়ে মেয়াদ ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত করা হয়।
উড়াল সড়কটি বিমানবন্দর এলাকা থেকে শুরু হয়ে ইপিজেড-বন্দর-বারেকবিল্ডিং-চৌমুহনী হয়ে দেওয়ানহাট রেলসেতুর পশ্চিম পাশ দিয়ে গিয়ে টাইগার পাস মোড়ের পর মূল সড়কের ওপর দিয়ে লালখান বাজার মোড় পেরিয়ে ওয়াসার মোড়ে আখতারুজ্জামান ফ্লাইওভারে গিয়ে মিলবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :