রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের প্রথম ইউনিটের ‘ফ্রেশ নিউক্লিয়ার ফুয়েল’ বা ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান পৌঁছেছে। ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সেতু পার হয়ে নাটোরের বনপাড়া ও পাবনার ঈশ্বরদীর দাশুড়িয়া হয়ে রূপপুর প্রকল্প এলাকায় পৌঁছেছে চালানটি।
শুক্রবার (২০ অক্টোবর) সকাল সাড়ে নয়টার দিকে গাড়ি বহর প্রকল্প এলাকায় প্রবেশ করলে কর্মরতরা গাড়ি বহরকে স্বাগত জানায়।
প্রকল্পের অর্থ ও প্রশাসন বিভাগের প্রধান অলক চক্রবর্তি জানান, বৃহস্পতিবার (১৯ অক্টোবর) সকাল ১১টা ১০ মিনিটে রাশিয়া থেকে পূর্ববর্তী তিনটি চালানের মতোই বিশেষ বিমানে ঢাকায় পৌঁছে ইউরেনিয়াম। একই দিন ভোরে ইউরেনিয়ামের এই চালান ঢাকা থেকে সড়কপথে রওনা হয়ে ঈশ্বরদীর রূপপুরে সফলভাবে পৌঁছেছে।
ঈশ্বরদীর থানার ওসি অরবিন্দ সরকার বলেন, সর্বোচ্চ নিরাপত্তার মধ্যদিয়ে ইউরেনিয়ামের চতুর্থ চালান সড়কপথে রূপপুরে আনা হয়েছে। সড়কপথে ইউরেনিয়ামের চালানবাহী গাড়ি বহর আসার সময় কিছুক্ষণের জন্য সড়কে অন্যান্য যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল।
গত ২৯ সেপ্টেম্বর প্রথম, ৬ অক্টোবর দ্বিতীয় এবং ১৩ অক্টোবর ইউরেনিয়ামের তৃতীয় চালান করা নিরাপত্তায় ঢাকা থেকে সফলভাবে ঈশ্বরদীর রূপপুরে পৌঁছে। মোট সাতটি চালানের মধ্যে পর্যায়ক্রমে আরও তিনটি চালান দেশে আসবে। সাতটি চালানে আসা জ্বালানি দিয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে নিরবচ্ছিন্নভাবে এক বছর ২ হাজার ৪০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন দুটি ইউনিটে বিদ্যুৎ উৎপাদিত হবে।
জানা যায়, রূপপুরে বিদ্যুৎ উৎপাদনে যে জ্বালানি ব্যবহার হবে চুক্তি অনুযায়ী রাশিয়া তিন বছর বিনামূল্যে সরবরাহ করবে। প্রতিদিন জ্বালানির প্রয়োজন হয় না। একবার জ্বালানি লোডের পর প্রথম তিন বছরের জন্য বছরে একবার করে (এক-তৃতীয়াংশ) ও পরবর্তী সময়ে দেড় বছর পর পর জ্বালানি পরিবর্তন করতে হবে। ফলে জ্বালানির কারণে দেশের অন্যান্য কেন্দ্র যেভাবে বন্ধ থাকে, এখানে ওই ধরনের কোনো সংকট হবে না। নিরবচ্ছিন্ন জ্বালানি সরবরাহ নিশ্চিত করতেই ধারাবাহিকভাবে চালানের জ্বালানি রাশিয়া পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
দেশের সবচেয়ে আলোচিত ও বড় প্রকল্প পাবনার ঈশ্বরদীর রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে খরচ হচ্ছে প্রায় ১২ দশমিক ৬৫ বিলিয়ন ডলার। এ অর্থের ১০ শতাংশ দেবে বাংলাদেশ সরকার। ঋণ সহায়তা হিসেবে রাশিয়া ৯০ শতাংশ প্রদান করছে। বাংলাদেশ সরকার ও রাশান ফেডারেশনের মধ্যে একটি চুক্তির মাধ্যমে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। দেশের প্রথম ও একমাত্র পারমাণবিক বিদ্যুৎকেন্দ্র এটি ।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :