নারীর সঙ্গে বরগুনার সাবেক জেলা প্রশাসক (ডিসি) মো. হাবিবুর রহমানের অন্তরঙ্গ ভিডিও ভাইরাল হওয়ায় অবশেষে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) করা হয়েছে।
রোববার (২২ অক্টোবর) তাকে ওএসডি করে এক প্রজ্ঞাপন জারি করেছে জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয়। হাবিবুর রহমান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগে সংযুক্ত যুগ্মসচিব ছিলেন।
বরগুনা জেলা প্রশাসক কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালের ১৭ ডিসেম্বর বরগুনায় জেলা প্রশাসক (ডিসি) পদে যোগ দেন মো. হাবিবুর রহমান। বরগুনায় আড়াই বছর কর্মরত ছিলেন তিনি। ২০২৩ সালের ৯ জুলাই তাকে সেখান থেকে উপসচিব হিসেবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা শাখায় পদায়ন করা হয়। ৩০ জুলাই তিনি নতুন জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করে ঢাকায় নতুন কর্মস্থলে যোগ দেন। গত ৪ সেপ্টেম্বর উপসচিব থেকে যুগ্মসচিব পদে পদোন্নতিও পেয়েছিলেন বরগুনার সাবেক ডিসি হাবিবুর।
সোমবার (১৬ অক্টোবর) বিকেল থেকে ভিডিওগুলো ম্যাসেঞ্জার, ইমো ও হোয়াটসঅ্যাপে ছড়িয়ে পড়ে। সন্ধ্যার পর বেশ কয়েকটি ফেসবুক পেইজেও ভিডিওটি আপলোড হলে মুহূর্তেই তা ছড়িয়ে পড়ে।
জানা গেছে, ওই নারীর স্বামী ছিলেন একজন পাইলট। তার একটি বিবাহিত মেয়ে রয়েছে। স্বামী মারা যাওয়ার পর ডিসির সঙ্গে ফেসবুকে পরিচয় হয়। ডিসি তাকে বিয়ের প্রলোভন দিয়ে অসংখ্যবার শারীরিক সম্পর্ক করেছেন। ঘুরেছেন দুজন বিভিন্ন দর্শনীয় স্থানে। নারী ঢাকার ধানমন্ডিতে নিজের বাসায় বসবাস করলেও সঙ্গীর অভাব ছিল। মেয়ে বিয়ে দেয়ার পর ডিসির সঙ্গে সংসার শুরু করতে চেয়েছিলেন তিনি।
আরও জানা যায়, হাবিবুরের টাকা ও নারীর প্রতি লোভ ছিল বেশি। ঢাকা শহরে ডিসি হাবিবুর রহমানের একাধিক বাড়ি রয়েছে। বরগুনায় থাকাকালে তার এই জেলা থেকে কোটি কোটি টাকা ঘুষ নেয়ার অভিযোগ রয়েছে। যাওয়ার কয়েকদিন আগে নদীবন্দরের জমিতে ব্যবসায়ীদের ৪০টি দোকান ভেঙে দিয়ে দুই মাসের মধ্যে আবার প্রায় ৮ কোটি টাকা ঘুষ নিয়ে অবৈধভাবে একসনা ডিসিআর দিয়েছেন। অসুস্থতার ভান করে তিনি ৫ জুলাই হেলিকপ্টারে টাকা নিয়ে পালিয়ে যান বলে অভিযোগ রয়েছে। আবার ২৫ জুলাই বরগুনা এসে নবাগত জেলা প্রশাসক মোহা. রফিকুল ইসলামের কাছে দায়িত্ব হস্তান্তর করেন।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে শোনা যায়, দুই দিন পর্যন্ত তোমার এত ফোন আসে। ভালোভাবে তোমার সঙ্গে কথাও বলা যায় না। ডিসির হাতে একটি অপো টাচ ফোন। দ্বিতীয় ভিডিওতে হাসি-তামাশা করে ওই নারীর কপালে চুমু দিতে দেখা যায়। পাশাপাশি লাল কভার বালিশে শুয়ে গল্প করছেন তারা। তৃতীয় ভিডিওটি হালকা অন্ধকারে। সেখানে অন্তরঙ্গ পরিবেশ। আনন্দ-ফুর্তির শব্দ শোনা যায়। অনুমান করা যায়, ওই নারী বরগুনা ডিসির বাংলোতে প্রায়ই রাতযাপন করতেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বরগুনার স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি বলেন, ভিডিওতে থাকা ওই নারীর পরিচয় এখন পর্যন্ত পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়া যায়নি। ভিডিওটি ডিসি বাংলোর পূর্বপাশের দোতলার একটি কক্ষের।
একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :