বাংলাদেশ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে উভয় পক্ষ সম্মত হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নতুন করে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ইইউ। তারা বাংলাদেশকে প্রায় ১০০ কোটি ইউরো (প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা) সহযোগিতার ঘোষণা দিয়েছে।
এই সহযোগিতার বড় ক্ষেত্র হবে জলবায়ু পরিবর্তন এবং কানেক্টিভিটি যা বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় যে চ্যালেঞ্জগুলো রয়েছে, সেগুলো সমাধানের জন্য ইইউ থেকে প্রযুক্তি সহায়তা চায় বাংলাদেশ। এছাড়া দুদেশের সম্পর্ককে কৌশলগত স্তরে নিতেও উভয় পক্ষ কাজ করবে।
বুধবার (২৫ অক্টোবর) ব্রাসেলসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও ইউরোপিয়ান কমিশনের প্রেসিডেন্ট ভন ডার উরসুলারের মধ্যে বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত হয়। বৈঠক শেষে দুই নেতা যৌথ বিবৃতি প্রদান করেন।
এর আগে প্রথম গ্লোবাল গেটওয়ে ফোরামের অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ার জন্য মঙ্গলবার (২৪ অক্টোবর) শেখ হাসিনা ব্রাসেলস পৌঁছান। বৈঠকে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমরা এমন অংশীদারিত্বের কথা চিন্তা করছি, যেখানে কৌশলগত উপাদান থাকবে।’ ভন ডার উরসুলার বলেন, ‘আমাদের সম্পর্কের নতুন চ্যাপ্টার খুব ভালোভাবে শুরু হয়েছে।
দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ককে নতুন উচ্চতায় নেওয়া, পার্টনারশিপ ও কোঅপারেশন এগ্রিমেন্ট চুক্তি সইয়ের জন্য আলোচনা শুরুর সিদ্ধান্ত, জলবায়ু পরিবর্তন ও কানেক্টিভিটি-কেন্দ্রিক সহযোগিতা, নতুন তহবিল জোগানের উৎসসহ আরও বিভিন্ন বিষয় নিয়ে দুই নেতার মাঝে আলোচনা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা বাংলাদেশ ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সম্পর্ক নিয়ে খোলামেলা আলোচনা করেছি। আমরা উভয়ই গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও আইনের শাসনের বিষয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেছি। ভন ডার উরসুলার বলেন, গ্লোবাল গেটওয়ে প্রায় ১০০ কোটি ইউরো বাংলাদেশে বিনিয়োগ করবে এবং আমরা এখানেই থেমে থাকবো না।
দুটি বিনিয়োগ প্যাকেজের আওতায় বাংলাদেশকে ইইউ প্রায় ৫০০ মিলিয়ন ইউরো তহবিল জোগান দেবে। এর মধ্যে ৪০ কোটি ইউরোর বেশি দেবে নবায়নযোগ্য জ্বালানির জন্য। দ্বিতীয় প্যাকেজের আওতায় দেবে সাত কোটি ইউরো এবং এটি ব্যয় হবে প্রশাসনিক উন্নয়ন, দক্ষতা বৃদ্ধি, শিক্ষা ও সবুজায়নের জন্য।ইইউ হচ্ছে বাংলাদেশের সবচেয়ে বড় রফতানি বাজার এবং ওই জোটের জিএসপির আওতায় বাংলাদেশ শুল্কমুক্ত প্রবেশাধিকার পায়। এই সুবিধা ২০২৯ সাল পর্যন্ত পাবে বাংলাদেশ। কারণ, দেশটি স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে ২০২৬ সালে বের হয়ে যাচ্ছে।
এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা আশা করি ইইউ আমাদের জিএসপি প্লাস সুবিধা দেবে, যাতে ২০২৬ সালে স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে বের হয়ে যাওয়ার পরে আমাদের উন্নয়ন অগ্রযাত্রায় সহায়তা করে।
একুশে সংবাদ/আ.ভ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :