ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল নাজমুল হক জানিয়েছেন, রাজধানীতে বিএনপি–জামায়াতের কর্মসূচি ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় এ পর্যন্ত ১৩০ আহত ব্যক্তি চিকিৎসা নিয়েছেন। এছাড়া বর্তমানে ৩৩ জন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন। আশংকাজনক অবস্থায় চিকিৎসাধীন এক পুলিশ সদস্যের অস্ত্রোপচার করা হবে।
এছাড়া আহতদের মধ্যে এখন পর্যন্ত এক পুলিশ সদস্যের মৃত্যুর খবর নিশ্চিত করেছে ঢামেক হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। মো. আমিরুল ইসলাম নামের এই কনস্টেবলকে শনিবার বিকেল ৪টার দিকে গুরুতর আহত অবস্থায় ঢামেক হাসপাতালে আনা হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
শনিবার রাজধানীর নয়াপল্টনে সরকার পতনের একদফা দাবিতে মহাসমাবেশ ডেকেছিল বিএনপি। অন্যদিকে মতিঝিলে সমাবেশ করে জামায়াত। দল দুটির কর্মীরা গাড়ি ভাঙচুর ও পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। কয়েকটি স্থানে সংঘর্ষে পুলিশ ও সাংবাদিকসহ শতাধিক আহত হন।
ঢাকা মেডিকেল পুলিশ ফাঁড়ির পরিদর্শক বাচ্চু মিয়া জানান, নিহত ওই পুলিশ সদস্য দৈনিক বাংলা মোড় এলাকায় দায়িত্বরত ছিলেন। বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে তিনি আহত হয়েছিলেন।
ডিএমপির উপকমিশনার (মিডিয়া) ফারুক হোসেন জানিয়েছেন, ওই পুলিশ সদস্যের মাথায় কোপানো হয়েছে।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের জরুরি বিভাগের আবাসিক সার্জন ডা. মোহাম্মদ আলাউদ্দিন বলেন, মৃত অবস্থাতেই ওই পুলিশ সদস্যকে হাসপাতালে নিয়ে আসা হয়েছিল। তাঁর মাথায় গুরুতর আঘাত রয়েছে। আমরা ইসিজি করার পর নিশ্চিত হয়ে তাকে মৃত ঘোষণা করেছি।
এদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে সংঘর্ষে পুলিশের আরও ৪১ সদস্য আহত হয়েছেন। আহত পুলিশ সদস্যদের ঢাকা মেডিকেল ও রাজারবাগ পুলিশ লাইনস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
অন্যদিকে পেশাগত দায়িত্ব পালনের সময় আক্রান্ত হয়েছেন সাংবাদিকের অনেকে। হামলার শিকার সাংবাদিকেরা হলেন নিউ এইজের আহমেদ ফয়েজ, বাংলা ট্রিবিউনের সালমান তারেক শাকিল, সাজ্জাদ হোসেন ও জোবায়ের আহমেদ, দৈনিক কালবেলার রাফসান জানি, আবু সালেহ মুসা, রবিউল ইসলাম রুবেল এবং তৌহিদুল ইসলাম তারেক, আমাদের কন্ঠের রাজু আহমেদ, আলোকিত বাংলাদেশের ডিএম আমিরুল ইসলাম অমর, ঢাকা টাইমসের সালেকিন তারিন, ব্রেকিং নিউজের কাজী ইহসান বিন দিদার, দৈনিক ইনকিলাবের এফ এ মাসুম, দৈনিক ইত্তেফাকের তানভীর আহাম্মেদ, একুশে টিভির তৌহিদুর রহমান ও আরিফুর রহমান, দৈনিক দেশ রূপান্তরের আরিফুর রহমান রাব্বি, ইত্তেফাকের শেখ নাছের ও ফ্রিল্যান্সার মারুফ।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স অ্যাসোসিয়েশনের (ক্র্যাব) সভাপতি মির্জা মেহেদী তমাল ও সাধারণ সম্পাদক মামুনুর রশিদসহ কার্যনির্বাহী কমিটি তীব্র নিন্দা ও গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। পাশাপাশি এ ঘটনায় জড়িতদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার করে আইনের আওতায় আনার দাবি জানিয়েছেন তারা।
একুশে সংবাদ/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :