বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি। কে গুণগান করল আর না করল,পরোয়া করি না। দেশের জন্য কাজ করে যাচ্ছি, করব। নৌকা মার্কা নিয়ে নির্বাচন করে একটানা তিনবার সরকারে এসেছি বলে আজ বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আপনাদের কাছে যখন একবার এসেছি, নৌকা মার্কায় ভোটটাও চেয়ে গেলাম, যেন উন্নয়নের ধারাটা অব্যাহত থাকে।
বৃহস্পতিবার (২ নভেম্বর) ঢাকার জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ফেডারেল ইউনিয়ন অব জার্নালিস্টসের (বিএফইউজে) প্রতিনিধি সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমন মন্তব্য করেন শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, আওয়ামী লীগ ২১ বছর পর ক্ষমতায় আসার পর প্রতিটি ক্ষেত্রকে বেসরকারি খাত উন্মুক্ত করে দেওয়া হয়েছিল। ১৯৯৬ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত আমরা সরকারে ছিলাম। সরকারে আসার পর মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টি করাই আমাদের লক্ষ্য ছিল। তিনি বলেন, বাঙালি জাতি যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে যেন দাঁড়াতে পারে, এটিই ছিল জাতির পিতার লক্ষ্য। জাতির পিতার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। যুদ্ধের পর তিন বছর সাত মাস তিনি সময় পেয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।
২৮ অক্টোবর পুলিশ-সাংবাদিকের ওপর হামলার ঘটনায় জড়িতদের শাস্তি পেতে হবে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিছু হলেই যারা বিবৃতি দেয়, তারা এখন কোথায়? আমাদের সুশীল বাবুরা কই এখন? আওয়ামী লীগের পান থেকে চুন খসতে পারবে না, তাদের কণ্ঠে অনেক জোর থাকে। আর যারা সত্যিকার অপরাধী, তারা কিছু করলে তাদের কণ্ঠে স্বর থাকে না। বিড়ালের মতো একটু মিউ মিউ করলেও বুঝতাম, মিউ মিউ করছে। কিন্তু তা-ও করে না। এটাই হচ্ছে বাস্তব কথা। কিছু হলেই সুশীল বাবুরা চিৎকার করে ওঠেন। সেই সুশীলদের কাজ কি আওয়ামী লীগের দোষ খুঁজে বেড়ানো? আর আওয়ামী লীগের কেউ কিছু করলে সেটাকে বড় করে দেখানো? আজ তারা চুপ কেন? প্রশ্ন রাখেন শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৮ অক্টোবর বিএনপি ও অন্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দলগুলো শান্তিপূর্ণ সমাবেশ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। সেইভাবে তাদের সমাবেশ করতে দেওয়া চেয়েছিল। আমরা বাধা দিই নাই। কিন্তু দেখা গেল শান্তিপূর্ণ না, সেখানে তারা সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। সেখানে আমাদের কেউ ছিল না, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর প্রতি আমার নির্দেশ ছিল একেবারে দূরত্বে থাকা, সেখানে সাংবাদিকদের ওপর যে নির্যাতন চালানো হয়েছে তা অমানবিক। আমার মনে হয়, সাংবাদিকদের মাটিতে ফেলে পেটানোর ন্যক্কারজনক ঘটনা বাংলাদেশে আর হয়নি। এটা কেন করা হলো? সে প্রশ্নের জবাব তো বিএনপিকে দিতে হবে। ভাষণে সাংবাদিক কল্যাণ ট্রাস্টে আরও ১০ কোটি টাকা অনুদান দেওয়ার ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
প্রধানমন্ত্রী ২৮ অক্টোবর বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড আন্তর্জাতিকভাবে তুলে ধরতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়ে বলেন, সাংবাদিক ও পুলিশের ওপর হামলাকারীদের শাস্তি পেতেই হবে। কিছু সংবাদমাধ্যমের সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, কোনো কোনো পত্রিকা বিএনপির সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডকে অন্যভাবে দেখাতে চায়, এদের ধিক্কার জানাই। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু করার প্রসঙ্গ তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, এই একটি সিদ্ধান্ত আন্তর্জাতিকভাবে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি পরিবর্তন করে দিয়েছে। আর এখন মেট্রো রেল, এক্সপ্রেসওয়েসহ অনেক কিছু তৈরি করেছি। অত কথা বলতে গেলে আরো অনেক সময় যাবে।
বিএফইউজে সভাপতি ওমর ফারুকের সভাপতিত্বে সম্মেলনে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। সম্মেলন সঞ্চালনায় ছিলেন, বিএফইউজে মহাসচিব দীপ আজাদ ।
তিনি আরও বলেন, বাঙালি জাতি যুদ্ধে বিজয় অর্জন করেছে। বিজয়ী জাতি হিসেবে বিশ্বে মাথা উঁচু করে যেন দাঁড়াতে পারে, এটিই ছিল জাতির পিতার লক্ষ্য ছিল। জাতির পিতার সেই লক্ষ্য বাস্তবায়ন করার লক্ষ্য নিয়ে আমি দেশে ফিরে আসি। যুদ্ধের পর তিন বছর সাত মাস তিনি সময় পেয়েছিলেন। যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশকে তিনি স্বল্পোন্নত দেশে পরিণত করতে চেয়েছিলেন।
নবম ওয়েজবোর্ড বাস্তবায়ন না করে এর বিরুদ্ধে মালিকদের মামলা করা দুঃখজনক বলে মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, দশম ওয়েজবোর্ডের কাজ চলছে। টিভি সাংবাদিকদেরও ওয়েজবোর্ডের আওতায় আনার কাজ চলছে। বিএনপি দুঃশাসন ছাড়া কিছুই দিতে পারেনি জানিয়ে তিনি বলেন, সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডই বিএনপির চরিত্র।
একুশে সংবাদ/এএইচবি/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :