আসছে ১১ নভেম্বর বাংলাদেশের উন্নয়ন ক্যানভাসে আরও একটি মেগাপ্রকল্পের দুয়ার খুলতে যাচ্ছে। এদিন নবনির্মিত ঢাকা-কক্সবাজার রেলপথের উদ্বোধন করবেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। শুরুতে এপথে একটি ট্রেন চলাচল করলেও পর্যায়ক্রমে বাড়ানো হবে।
ট্রেনে দুটি খাবার বগি, একটি পাওয়ার কার, তিনটি এসি কেবিন, পাঁচটি এসি চেয়ার, ছয়টি শোভন চেয়ার এবং একটি নন-এসি ফার্স্ট সিট বগি থাকবে। ঢাকা থেকে যাত্রার সময় আসনসংখ্যা থাকবে ৭৯৭টি। ফিরতি পথে আসন হবে ৭৩৭। আপাতত ঢাকা-চট্টগ্রাম রুটের তূর্ণা নিশীথার বগি দিয়ে চালানো হবে ঢাকা-কক্সবাজারের ট্রেন।
রেলভবন জানায়, ঢাকা থেকে চট্টগ্রাম হয়ে কক্সবাজারের দূরত্ব ৫৫১ কিলোমিটার। এ পথে নন-এসি অর্থাৎ শোভন চেয়ারে ৫১৫ ও এসি সিটে ৯৮৪ টাকা ভাড়া প্রস্তাব করা হয়েছে। এসি সিটে ১৫ শতাংশ ভ্যাটসহ ভাড়া হবে ১ হাজার ১৩২ টাকা। ভ্যাটসহ এসি কেবিনে ১ হাজার ৩৬৩ ও এসি বার্থে ভাড়া পড়বে ২ হাজার ৩৬ টাকা। ধারণা করা হচ্ছে, ঢাকা-কক্সবাজার রুটে ট্রেন চালু হলে প্রতিমাসে প্রায় সাড়ে তিন কোটি টাকা রাজস্ব আদায় হবে।
পৃথিবীব্যাপী সাশ্রয়ী যাতায়ত ব্যবস্থার অন্যতম হচ্ছে ট্রেন। ৭১ সালে স্বাধীনতা যুদ্ধচলাকালীন সময়ে বাংলাদেশের রেলপথ প্রায় ধ্বংস করে দেয় পাকিস্তানি সেনাবাহিনী। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান রেলপথ পুনঃনির্মাণে হাত লাগান। যোগাযোগ ব্যবস্থাকে স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে রাতদিন কাজ করে গেছেন স্বাধীন বাংলার স্থপতি বঙ্গবন্ধু।
দেশের প্রতিটি জেলায় সাশ্রয়ী জনবান্ধব রেলব্যবস্থাকে পৌঁছে দেবার লক্ষ্যে আলাদা রেলমন্ত্রণালয় করে দেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আজ দেশের বিভিন্ন স্থানে নতুন নতুন রেলপথ ও নতুন স্টেশন নির্মাণ করা ছাড়াও আন্তঃদেশীয় রেলযোগাযোগের সম্প্রসারণ হয়েছে। শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশের উন্নয়ন বিশ^ মডেল হিসাবে স্বীকৃত। রেলপথ ও সড়কপথের অভূতপূর্ব উন্নয়ন হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথ নির্মাণ করা হয়। এই রেলপথটি নির্মিত হওয়ায় সরাসরি ঢাকা থেকে বাংলাদেশের পর্যটন নগরী কক্সবাজার যাওয়া সম্ভব হবে। রেলপথটি ১৩ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন। ডিসেম্বর থেকে বাণিজ্যিকভাবে এ রুটে ট্রেন চালুর পরিকল্পনা রয়েছে। প্রথমে ঢাকা থেকে এ রুটে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন চললেও পর্যায়ক্রমে তা বাড়ানো হবে।
রেলভবন জানিয়েছে, দিনে একটি ট্রেন ঢাকা থেকে রাত সাড়ে ১০টায় যাত্রা করে বিমানবন্দর এবং চট্টগ্রাম স্টেশনে বিরতি দিয়ে সকাল ৬টা ৪০ মিনিটে কক্সবাজারে পৌঁছাবে। কক্সবাজার থেকে দুপুর ১টায় যাত্রা করে রাত ৯টা ১০ মিনিটে ঢাকায় ফিরবে। ফিরতি পথেও চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিমানবন্দরে যাত্রাবিরতি করবে। মঙ্গলবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকবে ট্রেনটির। পরে এ রুটে ট্রেনের সংখ্যা বাড়বে।
রেল সূত্রে আরও জানা গেছে, ঢাকা থেকে কক্সবাজার রুটে চালু হতে যাওয়া ট্রেনের জন্য বেশ কয়েকটি নাম প্রস্তাব করেছে বাংলাদেশ রেলওয়ে। এগুলো হলো: প্রবাল এক্সপ্রেস, হিমছড়ি এক্সপ্রেস, ইনানী এক্সপ্রেস, লাবণী এক্সপ্রেস ও সেন্টমার্টিন এক্সপ্রেস। এর মধ্য থেকে একটি বাছাই বা অন্য কোনো নাম দিতে পারেন প্রধানমন্ত্রী।
একুশে সংবাদ/এএইচবি/এসআর
আপনার মতামত লিখুন :