দফায় দফায় হরতাল-অবরোধ চলছে বিরোধী রাজনৈতিক দল বিএনপি ও সমমনাদের। এমন পরিস্থিতিতে মানুষ বিরক্ত। বিরোধী দলের কর্মসূচির মধ্যে আন্তঃজেলা বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
নির্বাচন ঠেকাতে বিএনপি ও সমমনা দলগুলোর ষষ্ঠ দফায় ডাকা টানা ৪৮ ঘণ্টার অবরোধ ভোর বুধবার (২২ নভেম্বর) ৬টা থেকে শুরু হয়েছে। এ অবস্থায় অফিস-আদালতে উপস্থিতি এবং অর্থনৈতিক লেনদেন স্বাভাবিক রয়েছে।
কর্মসূচি শুরুর আগের রাতে (মঙ্গলবার) রাজধানীতে বাসে আগুন দেয়া হলেও তার কোনও প্রভাব পড়েনি জনজীবনে। সকালে অন্যান্য দিনের মতোই স্বাভাবিক কর্মচাঞ্চল্য দেখা গেছে।
অবশ্য রাজধানীর গাবতলী, কল্যাণপুর ও সায়েদাবাদ থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছেড়ে যায়নি। অধিকাংশ বাস কোম্পানির কাউন্টারই বন্ধ দেখা গেছে। কিছু কাউন্টার খোলা থাকলেও তা ছিল প্রায় যাত্রীশূন্য।
সকালে রাজাধানীর কমলাপুর থেকেও সবকটি যাত্রীবাহী ট্রেন যথাসময়ে ছেড়ে গেছে। এছাড়া শিডিউল অনুযায়ী পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চল থেকে ছেড়ে আসা ট্রেন যথাসময়ে কমলাপুর স্টেশনে পৌঁছেছে।
রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় দোকানপাট, সাধারণ জীবনযাত্রা, কর্মযজ্ঞ স্বাভাবিক রয়েছে। সকালের দিকে যানবাহন সবসময় কিছুটা কম থাকে, সে হিসেবে এখনও কম আছে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে যান চলাচল বাড়তে থাকবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। গণপরিবহনের পাশাপাশি চলাচল করছে ব্যক্তিগত গাড়িও।
সকালে গণপরিবহন চলার পাশাপাশি বিভিন্ন অফিসের পরিবহন রাস্তায় দেখা গেছে। কর্মীদের অফিসে নিতে সরকারের বিভিন্ন দফতর/সংস্থার পাশাপাশি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানগুলোর বাস/মাইক্রোবাসও রাস্তায় চলছে। এছাড়া গণপরিবহন পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকায় গন্তব্যে যেতে খুব একটা সমস্যা হচ্ছে না যাত্রীদের।
কিন্তু চলমান এ অবরোধের কারণে দূরপাল্লার গাড়ি চালাতে না পারায় পরিবহন শ্রমিকদের আয়-রোজগারে টান পড়েছে। স্টাফদের দৈনিক খরচ দিতে পারছে না মালিকরা। বাজারের বর্তমান ঊর্ধ্বগতিতে সবাই বিপদে পড়েছে।
যদিও অবরোধের মধ্যেও সারা দেশে পণ্য ও যাত্রী পরিবহন চালু রাখার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন মালিক সমিতি। রাজধানীর বিভিন্ন সড়কে মালবাহী পিকআপ ও ট্রাকও চলাচল করেছে নির্বিঘ্নে।
কিন্তু পুলিশ দূরপাল্লার বাসগুলোকে প্রটোকল দেয়ার ঘোষণা দিলেও মালিকরা ভয়ে রাস্তায় বাস নামাচ্ছেন না।
অবরোধ পরিস্থিতিতে রাজধানীবাসীকে নিরাপত্তা দিতে মোড়ে মোড়ে পুলিশ সদস্যদের টহল দিতে দেখা গেছে। ফার্মগেট, শাহবাগ, মগবাজার, মহাখালী ও বাড্ডাসহ প্রায় পুরো ঢাকাতেই পুলিশসহ বিভিন্ন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্য বাহিনীর সদস্য মোতায়েন রয়েছেন।
হামলা ও সংঘর্ষের মধ্যে ২৮ অক্টোবর ঢাকায় মহাসমাবেশ পণ্ডের প্রতিবাদে ২৯ অক্টোবর সারা দেশে সকাল-সন্ধ্যা হরতাল পালন করে বিএনপি ও জামায়াতসহ সমমনা কয়েকটি দল। এরপর পুলিশ হত্যা ও নাশকতার মামলায় বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরসহ শীর্ষ পর্যায়ের অনেক নেতাকে গ্রেফতার করা হয়।
পরে ৩১ অক্টোবর থেকে ১৬ নভেম্বর পর্যন্ত পাঁচ দফায় সড়ক, রেল ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি পালন করে তারা। সবশেষ মঙ্গলবার (২১ নভেম্বর) ভোর ৬টা পর্যন্ত টানা ৪৮ ঘণ্টার হরতাল কর্মসূচি পালন করে বিএনপি এবং যুগপৎ আন্দোলনে থাকা দলগুলো।
একুশে সংবাদ/এএইচবি/এস কে
আপনার মতামত লিখুন :