AB Bank
ঢাকা শনিবার, ২৩ নভেম্বর, ২০২৪, ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

চলতি বছরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উৎপত্তি ৪ ভূমিকম্প! কি বার্তা দিচ্ছে


Ekushey Sangbad
জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
১২:৫৩ পিএম, ২ ডিসেম্বর, ২০২৩
চলতি বছরে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে উৎপত্তি ৪ ভূমিকম্প! কি বার্তা দিচ্ছে

উন্নয়নশীল দেশগুলোর ভূমিকম্প ঝুঁকি হ্রাসে আন্তর্জাতিক ভূমিকম্প প্রকৌশল সংস্থার (আইএইই) উদ্যোগে নেওয়া ওয়ার্ল্ড সিসমিক সার্ভে ইনিশিয়েটিভের পরিচালক এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, এ দেশে ১৮৬৯ থেকে শুরু করে ১৯৩০ সাল পর্যন্ত ছয় থেকে সাতটি  ৮ দশমিক ৭ মাত্রার ভূমিকম্প হয়েছে।

যার মধ্যে রিখটার স্কেলে ৭-এর নিচের ভূমিকম্পগুলো ১৮৭০, ১৮৮৫, ১৯১৮ ও ১৯৩০ সালে হয়েছে। বলা হয়, ৭ মাত্রার ভূমিকম্পগুলো দেড় শ বছর পরপর আসে। আর ৮ মাত্রার ভূমিকম্পগুলো আসে ৩০০’শ বছর পরপর। এ পরিপ্রেক্ষিতে বলা যায়, আমাদের দেশে ৭ মাত্রার একটি ভূমিকম্প যেকোনো মুহূর্তে হতে পারে।

চলতি বছর তুরস্কে ভূমিকম্পে ব্যাপক প্রাণহানীর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক ড. আনোয়ার হোসেন ভূঁইয়া সংবাদমাধ্যমকে বলেছিলেন, আজ হোক কাল হোক বাংলাদেশের সীমানায় বড় ভূমিকম্প হবে। কবে হবে, তা জানা না গেলেও হবে যে, তা নিশ্চিত।

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় শনিবার (২ ডিসেম্বর) সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে অনুভূত ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলায়। দেশের ভেতরে উৎপন্ন হওয়া এই ভূমিকম্প রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৬ মাত্রার ছিল বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস।

চলতি বছর দেশের অভ্যন্তরে আরও তিনটি ভূমিকম্প উৎপত্তি হয়েছিল। সিলেটের কানাইঘাট ও গোলাপগঞ্জ এবং ঢাকার দোহার উপজেলায় উৎপত্তি হওয়া এসব ভূমিকম্পের মাত্রা ছিল যথাক্রমে ৫ দশমিক ৫, ৪ দশমিক ৫ ও ৪ দশমিক ৩। সেই হিসাবে আজকের ভূমিকম্প আগেরটির চেয়ে রিখটার স্কেলে শূন্য দশমিক ১ বেশি মাত্রায় অনুভূত হয়েছে। দেশের ভেতর উৎপত্তি হওয়া ভূমিকম্পের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার এই প্রবণতা দুশ্চিন্তা বাড়াচ্ছে। দেশের ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের কম্পন বড় ভূমিকম্পের লক্ষণ।

যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ সংস্থা ইউএসজিএস বলছে, আজকের ভূমিকম্পের উৎপত্তিস্থল লক্ষ্মীপুরের রামগঞ্জ উপজেলা থেকে ৮ কিলোমিটার পূর্ব-উত্তর-পূর্বে। রামগঞ্জে উৎপন্ন হওয়া ভূমিকম্পে চট্টগ্রাম, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর, চুয়াডাঙ্গা, নোয়াখালী, কুষ্টিয়াসহ দেশের বিভিন্ন জায়গায় কম্পনের খবর পাওয়া গেছে। এই ভূমিকম্পে বাংলাদেশ ছাড়াও পাশের দেশ ভারত-মিয়ানমারের একাংশও কেঁপে উঠেছিল।

গত ১৪ আগস্ট রাতে রিখটার স্কেলে ৫ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল সীমান্তবর্তী কানাইঘাট উপজেলায়। বাংলাদেশ সময় রাত ৮টা ৪৯ মিনিটে সৃষ্ট এই ভূমিকম্পের প্রভাব পড়েছিল ভারতের আসাম, ত্রিপুরা, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য এবং ভুটান ও মিয়ানমারে।

ইউএসজিএস তথ্যমতে, ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল ছিল ভূগর্ভের প্রায় ১০ কিলোমিটার গভীরে। ফলে এর কম্পন বেশি অনুভূত হয়।

গত ১৬ জুন রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অনুভূত ৪ দশমিক ৫ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তিস্থল ছিল গোলাপগঞ্জ উপজেলায়। গত ৫ মে ঢাকা ও এর আশপাশের এলাকায় অনুভূত ৪ দশমিক ৩ মাত্রার ভূমিকম্পটির উৎপত্তি হয় ঢাকার কাছে দোহারে। এ ছাড়া পার্শ্ববর্তী ভারতে উৎপন্ন কয়েকটি ভূমিকম্পেও দেশে মৃদু কম্পন অনুভূত হয়েছে।

ভূমিকম্প বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কোনো স্থানে ভূকম্পনের জন্য ফল্টলাইনের বড় ভূমিকা রয়েছে। ভূতত্ত্বের বিশাল খণ্ডকে টেকটোনিক প্লেট বলা হয়। আর দুটি টেকটোনিক প্লেটের মাঝে থাকা ফাটলকে ফল্ট বা চ্যুতি বলা হয়। ফল্টলাইনে দুই প্লেটের সংঘর্ষ হলে ভূমিকম্প হয়।

ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে বাংলাদেশে যেকোনো সময় বড় ভূমিকম্প হতে পারে বলে এমন আশঙ্কা আগেও প্রকাশ করেছেন বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মেহেদী আহমেদ আনসারী। তিনি বাংলাদেশ ভূমিকম্প সোসাইটির প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি জেনারেল ছিলেন।

বুয়েটের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক মেহেদী আহমেদ আনসারী বলেন, ‘ইউএসজিএসের তথ্য বলছে, গত ৭-৮ মাসে বাংলাদেশ ও এর আশপাশে ভূমিকম্পের সংখ্যা অনেক বেড়েছে। হয়তো এটা নির্দেশ করছে, আমাদের সামনে বড় ভূমিকম্প আসছে। কারণ, দেড় শ বছরের সাইকেলে আমরা পড়ে গেছি।

১৮৭০ সালের সঙ্গে যদি দেড় শ বছর যোগ করা হয় তাহলে দাঁড়ায় ২০২০। দেড় শ বছর মানে কিন্তু এটা নয়, ঠিক দেড় শ বছরেই ভূমিকম্প হবে। এটা ১৪০ বছরে হতে পারে। আবার ১৬০ বছরেও হতে পারে। তার মানে আমাদের প্রস্তুতি নেওয়া ছাড়া উপায় নাই।

বড় ভূমিকম্পের আসার আগে ছোট ছোট টুকটাক ভূমিকম্প হয় উল্লেখ করে এই বিশেষজ্ঞ বলেন, অনেক সময় একশটা ছোট ভূমিকম্প হতে পারে। আবার বড় ভূমিকম্পের পরেও একশটা ছোট ভূমিকম্প হতে পারে।


একুশে সংবাদ/এএইচবি/জাহা 

Link copied!