বুধবার দিবাগত গভীর রাত থেকেই দেশজুড়ে বৃষ্টি হচ্ছে। কখনও থেমে থেমে আবার কখনবা মুষলধারে। এই শীত মৌসুমে কেনই বা হঠাৎ বৈরী আবহাওয়া? ঢাকার আগারগাঁও আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম-এর প্রভাবেই এমন দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতি।
বৃহস্পতিবার (৭ ডিসেম্বর) সকাল থেকেই আকাশের মুখ ভার। সূর্যের দেখা তো দূরের কথা। প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে কেউ পা রাখছে না। আকাশ ছেয়ে আছে ধূসর মেঘে। ঝিরঝিরে বৃষ্টি মনে করি দেয় বর্ষাকালের কথা।
রোববার নাগাদ থাকবে না এমনি দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া। আকাশ পরিষ্কার হয়ে দেখা দেবে ঝলমলে রোদের। সেদিন থেকেই জেঁকে বসবে শীত! কারণ, ঘূর্ণিঝড় মিগজাউম ক্রমেই শক্তি হারাচ্ছে। বৃষ্টি আর মেঘ কেটে গিয়ে শীতের আগমনটা বেশ জেঁকে বসবে। এমনই পূর্বভাস আবহাওয়ার অফিসের।
শেষ হেমন্তে এই বৃষ্টিভেজা মেঘমেদুর পরিবেশ ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবে। মিগজাউম নামটি মিয়ানমারের দেওয়া। এটি একটি বর্মি শব্দ।
গত ২৯ নভেম্বর দক্ষিণ আন্দামান সাগরে একটি লঘুচাপের সৃষ্টি হয়েছিল। সেটি ক্রমেই ঘনীভূত হয়ে ২ ডিসেম্বর নিম্নচাপে এবং পরের দিন ৩ ডিসেম্বর গভীর নিম্নচাপে রূপ নিয়ে দক্ষিণ বঙ্গোপসাগর ও এর সংলগ্ন এলাকার দিকে ধেয়ে আসে।
রূপ নেয় মিগজাউম নামের ঘূর্ণিঝড়ে। ঘূর্ণিঝড়টি এখন দুর্বল হয়ে পড়েছে। আবহাওয়া বার্তায় বলা হয়েছে, মিগজাউম এখন ভারতের উত্তর অন্ধ্র প্রদেশের দিকে সরে গেছে। শক্তিহীন হয়ে পড়েছে। তার প্রভাব একেবারে কাটেনি, তার প্রমাণ মিলছে এই মেঘবৃষ্টিতে।
ঢাকাসহ সারাদশে বুধবার থেকেই ঝড়ছে হালকা বৃষ্টি। আবহাওয়া বিভাগের গত ২৪ ঘণ্টার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, বৃহস্পতিবার ঢাকায় সকাল ছয়টা পর্যন্ত বৃষ্টি হয়েছে ১০ মিলিমিটার। সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়েছে যশোরে ২৬ মিলিমিটার।
সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল উত্তরের শহর তেঁতুলিয়ায় ১৭ দশমিক ৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সর্বোচ্চ তাপমাত্রা কক্সবাজারে ৩৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকার তাপমাত্রা ২৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
আবহাওয়া দপ্তর জানায়, বৃষ্টির ধারা শুক্রবার অব্যাহত থাকবে। শনিবার থেকে বৃষ্টি কমে আসবে। সম্ভবত রোববার থেকে মেঘ কেটে মুখ দেখাবে সূর্য। ধরণি রোদের স্পর্শ পেলেও শুরু হবে শীতের প্রভাব।
তাপমাত্রা ২ থেকে ৩ ডিগ্রি কমে যাবে। বৃষ্টির সম্ভাবনা তারপর আপাতত নেই। তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে কমতে জেঁকে বসবে শীত। এবার শীত খানিকটা দেরিতেই আসছে। কেন? এই আবহাওয়াবিদ জানালেন, কারণ এই শক্তিশালী মিগজাউম।
ঘূর্ণিঝড় মিগজাউমের প্রভাবেই আবহাওয়ায় শীতের প্রভাব কম পড়েছে। এখন ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব কমতে কমতে শেষ হয়ে যাবে এবং প্রবল হয়ে উঠবে শীত।
একুশে সংবাদ/এএইচবি/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :