নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম বা আনসারুল্লাহ বাংলা টিম’ (এবিটি) এর ছয় সদস্যকে আটক করেছে র্যাব। তারা দেশের বিভিন্ন এলাকায় নাশকতার পরিকল্পনা করছিলেন বলে জানিয়েছে সংস্থাটি। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ থেকে গতকাল রোববার রাতে তাদের আটক করা হয়।
আটককৃতদের মধ্যে আছেন, সংগঠনটির আশুলিয়া, সাভার, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ অঞ্চলের প্রধান সমন্বয়কারী ও প্রশিক্ষণ শাখার প্রধান আব্দুর রাজ্জাক ওরফে ইসহাক ওরফে সাইবা।
অন্যরা হলেন- শরিফুল ইসলাম মুরাদ (৩১), আশিকুর রহমান উসাইমান (২৭), মুহাম্মদ জাকারিয়া আবরার (২৪), আল আমিন (২৪) ও আবু জর মারুফ (১৮)। র্যাব বলছে, আটককৃতদের কাছে থেকে বিপুল পরিমাণ জিহাদী ও উগ্রবাদী বই এবং অন্যান্য সরঞ্জাম উদ্ধার করা হয়েছে।
র্যাবের ভাষ্য, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আটককৃতরা জানিয়েছেন, তারা নিষিদ্ধ ঘোষিত জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’-এর সদস্য। তারা আফগানিস্থানে তালেবানের উত্থানে উদ্বুদ্ধ হয়ে আল কায়েদা মতাদর্শের জঙ্গি সংগঠন ‘আনসার আল ইসলাম’ এর কার্যক্রম পরিচালনা করছিলেন।
এ উদ্দেশে সংগঠনের সদস্যদের তারা বিভিন্ন উগ্রবাদী বই, মুসলমানদের ওপর নির্যাতন ও উগ্রবাদী নেতাদের বক্তব্যের ভিডিও সরবরাহ করতেন। এছাড়াও তারা সংগঠনের কার্যক্রম পরিচালনার জন্য ভুল তথ্য প্রদান করে আত্মীয়-স্বজন, বিভিন্ন মাদ্রাসা ও সদস্যদের কাছে থেকে নিয়মিত অর্থ সংগ্রহ করতেন।
র্যাব জানিয়েছে, আটককৃতরা পার্শবর্তী বিভিন্ন দেশের সমমনা ব্যক্তিদের সঙ্গে সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ব্যবহার করে যোগাযোগ রাখতেন। তারা সংগঠনের সদস্যদের তথাকথিত হিজরতের উদ্দেশে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের জন্য অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠাতেন বলেও জানা গেছে।
আটক হওয়া আব্দুর রাজ্জাক দাখিল পাশ। ২০১৫ সালে সংগঠনের শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের মাধ্যমে উগ্রবাদে উদ্বুদ্ধ হয়ে আনসার আল ইসলামে যোগদান করেন। সংগঠনে যোগদানের পর তিনি বিভিন্ন পেশার আড়ালে দাওয়াতী কার্যক্রম পরিচালনা করতেন। পরে আশুলিয়া, সাভার, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের প্রধান সমন্বয়ক এবং প্রশিক্ষণ শাখার প্রধানের দায়িত্বপ্রাপ্ত হন। রাজ্জাকের সঙ্গে আনসার আল ইসলামের বর্তমান আমিরের সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে বলেও জানিয়েছে র্যাব।
র্যাব জানায়, রাজ্জাকের নির্দেশনায় শরিফুল সংগঠনের বেশকিছু সদস্যকে তথাকথিত হিজরত ও বিভিন্ন ধরণের প্রশিক্ষণের জন্য অবৈধ পথে পার্শ্ববর্তী দেশে পাঠিয়েছিলেন। তাদের মধ্যে চারজন চলতি বছরের মাঝামাঝিতে গ্রেপ্তার হন। শরিফুল কাশিমপুর কারাগারে থাকা আনসার আল ইসলামের সদস্যদের সঙ্গে নিয়মিত দেখা করতেন এবং আত্মীয়-স্বজনদের দেখা করিয়ে দিতেন।
আটক বাকিদের পরিচয় সম্পর্কে র্যাব জানিয়েছে, আশিকুর সংগঠনের ঢাকা ও ময়মনসিংহ জেলার অন্যতম প্রধান সেকশন চিফ। জাকারিয়া আবরার ভ্রাম্যমাণ রকমারি ব্যবসার আড়ালে সংগঠনের দাওয়াতি কার্যক্রম ও নতুন সদস্য সংগ্রহের কাজ করতেন।
একুশে সংবাদ/ক.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :