ড. ইউনূসের সাজা বিদেশের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কে প্রভাব ফেলবে না মন্তব্য করেছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন। তিনি বলেন, ড. মুহাম্মদ ইউনূস আমাদের সম্পদ। তবে তিনি ক্রিমিনালি কাজ করেছেন। তিনি তার শ্রমিকদের পয়সা দেন নাই, তাদের ঠকাইছেন। এ জন্য আদালতের মাধ্যমে তার বিচার হয়েছে। এটা কোর্টের ব্যাপার। আদালতে আত্মপক্ষ সমর্থনের সব ধরনের সুযোগ তিনি পেয়েছেন বলেও এ সময় মন্তব্য করেন তিনি।
মঙ্গলবার (২ জানুয়ারি) সন্ধ্যায় নগরের হাফিজ কমপ্লেক্সে প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন সিলেট-১ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন। পরে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে এসব কথা বলেন।
শ্রম আইন লঙ্ঘনের মামলায় সোমবার গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান ও নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। সেই সঙ্গে তাকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা ও অনাদায়ে আরো ১৫ দিনের কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
ড. মোমেন বলেন, ‘ড. ইউনূস একজন নোবেল লরিয়েট। আমরা তাকে অত্যন্ত সম্মান করি।
পৃথিবীতে অনেক নোবেল লরিয়েটই অন্যায় করেছেন, ক্রিমিনালি করেছেন। এ জন্য তাদের শাস্তিও হয়েছে। এতে কারো সঙ্গে কারো সম্পর্ক নষ্ট হয়নি। কারণ প্রত্যেক দেশই আইনকে সম্মান করে। ফলে ড. ইউনূসের সাজায় আমাদের কোনো সমস্যা হবে না।
এবারের ‘নির্বাচনের ফলাফল পূর্বনির্ধারিত’ সম্প্রতি বিবিসিতে প্রকাশিত এ রকম একটি সংবাদের ব্যাপারে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বিবিসি একটি মিডিয়া। মিডিয়া অনেক সময় ঝাকমারি কিছু করে পাঠক টানতে চায়। তারা প্রায়ই এ রকম করে।’
গণমাধ্যমের প্রতিবেদন দেখে কোনো দেশ পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করে না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘মিডিয়ার রিপোর্ট দেখে কোনো দেশই তাদের পররাষ্ট্রনীতি ঠিক করে না। সব সরকারই বিচার-বিশ্লেষণ করে, ভবিষ্যৎ সম্পর্ক, নিজেদের স্বার্থ ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে তারা সিদ্ধান্ত নেয়।’
পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমাদের লক্ষ্য হলো অবাদ, সুষ্ঠু, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। এটা করতে পারলেই আমরা সফল। আমাদের দেশবাসী কী বলল সেটাই বড় কথা। দেশবাসী যদি নির্বাচনকে গ্রহণযোগ্য মনে করে তবেই আমরা সফল। অন্য কে কী মনে করল সেটা সেকেন্ডারি বিষয়।’
এর আগে ড. মোমেন ইন্টারন্যাশনাল ফ্যান ক্লাব আয়োজিত প্রবাসীদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. এ কে আব্দুল মোমেন বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার প্রবাসীবান্ধব সরকার। আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা থেকে শুরু করে স্বাধীনতাযুদ্ধ ও একাত্তর-পরবর্তী দেশ গঠনে প্রবাসীরা সব সময় বঙ্গবন্ধুর সঙ্গে ছিলেন। শেখ হাসিনাকেও আশ্রয় ও সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন প্রবাসীরাই। প্রবাসীরা দেশপ্রেমিক- তাদের স্বদেশপ্রেম প্রগাঢ়।’
তিনি আরো বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ৩০ ডিসেম্বরকে প্রবাসী দিবস হিসেবে ঘোষণা করেছেন। দেশের উন্নয়নের মহাসড়কে প্রবাসীদের অংশগ্রহণ জরুরি। আমরা চাই দেশের কোথায় কী সুযোগ রয়েছে তা প্রবাসীরা জানুক-যাতে তারা সম্পৃক্ত হতে পারে। সরকার প্রবাসীদেরকে ৩৪টি সেবা ডিজিটাল অ্যাপসের মাধ্যমে প্রদান করছে।’ দেশে প্রবাসীদের হয়রানি, বিশেষ করে জমি-সম্পত্তি বেদখল রুখতে র্যাপিড ট্রাইবুন্যাল গঠন ও ভূমি প্রশাসন শক্তিশালী করার কথা জানান পররাষ্ট্রমন্ত্রী।
সভায় প্রবাসীরা তাদের বিভিন্ন অনুযোগ, অভিযোগ তুলে ধরার পাশাপাশি আগামী নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণের কথা জানান।
একুশে সংবাদ/স.ল.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :