ডাক ও টেলিযোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্মেদ পলক বলেছেন, আমাদের টার্গেট আমরা বাংলাদেশ থেকে আইসিটি খাতের রপ্তানি ৫ বিলিয়ন ডলারে নিয়ে যেতে চাই। আগামী পাচঁ বছরে ১০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে চাই। ডাক, টেলিযোগাযোগ ও আইসিটি খাতে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে চাই। বাংলাদেশ ভারতকে উন্নত, সমৃদ্ধ অর্থনৈতিক দেশ হিসেবে বিশ্বের দরবারে পরিচয় করার জন্য একযোগে কাজ করতে চাই।
বৃহস্পতিবার (১৮ জানুয়ারি) সচিবালয়ে মন্ত্রীর কক্ষে ভারতের হাইকমিশনারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি।
প্রতিমন্ত্রী বলেন, গত পাঁচ বছরে যে ১ বিলিয়ন ডলার আমাদের স্টার্টআপে বিনিয়োগ হয়েছে। এর বেশিরভাগই এসেছে আমেরিকা, ভারত ও সিঙ্গাপুর থেকে। আর কিছু অংশ এসেছে জাপান থেকে। ভারত আমাদের খুব কাছের অকৃত্রিম বন্ধু। ভারতের প্রায় দেড় বিলিয়ন জনগোষ্ঠী। আমাদের একটা পণ্য যদি ভারতে নিতে পারি তাহলে কিন্তু বিশাল মার্কেট আমাদের ঘরের কাছে। সেটা হার্ডওয়ার হোক কিংবা সফটওয়ার হোক।
পলক বলেন, মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশের মানুষকে ভারত খাদ্য দিয়েছে, আশ্রয় দিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে তারা জীবন পর্যন্ত দিয়েছে। একইভাবে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার পাশেও ভারতের মানুষ ও সরকার আছে। আমরাও তাদের পাশে আছি। করোনাকালেও ভারত আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছে। আমাদের স্বাধীনতার ৫০ বছর পূর্তিতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বাংলাদেশে এসেছেন। ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভারতের যে সহযোগিতা পেয়েছি অংশীদারিত্বের মাধ্যমে আমরা দুই দেশ এগিয়ে যাচ্ছি। আমাদের দুই দেশের একটাই লক্ষ্য। দুই দেশের জনগণকেই উন্নত ও সমৃদ্ধ অর্থনীতি উপহার দিতে চাই।
তিনি বলেন, ভারত বাংলাদেশের বন্ধুত্বের এক সোনালী অধ্যায় পার করছি। বিভিন্ন জায়গায় আমাদের রেল-রোড কানেক্টিভিটি হয়েছে। আমাদের ইলেকট্রিসিটি আনছি। আবার আমাদের ব্যান্ডউইথ রপ্তানি করছি। একইভাবে ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভারত যেভাবে পাশে ছিল এখনো অনগোয়িং প্রজেক্ট চলছে। ১৯৩ মিলিয়ন ডলারের ১২টি হাইটেক পার্ক নির্মাণ প্রকল্প দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। এখানেই হাজার হাজার তরুণের স্মার্ট কর্ম-সংস্থান হবে। আমাদের রপ্তানি আয় বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, অপচয় রোধ করে আইসিটি খাতের রপ্তানি আয় বাড়াতে হবে। আইসিটি, টেলিকম ও পোস্ট সেক্টরে বিনিয়োগ আকর্ষণ করতে হবে। এর মাধ্যমে তরুণ-তরুণীদের কর্মসংস্থান বাড়াতে হবে।
প্রতিমন্ত্রী আরও বলেন, তিনটি জায়গায় আমরা ভারতের সহযোগিতা পাব বলে প্রত্যাশা করছি। ১২টি হাইটেক পার্ক ছাড়া ৬টি জায়গায় বাংলাদেশ-ভারত ডিজিটাল সার্ভিস এমপ্লয়মেন্ট ট্রেনিং সেন্টারের কাজ শেষ হয়ে গেছে। সেখানেও আমাদের ৩০ হাজার ছেলে-মেয়ে ব্লক চেইন, রোবটিক্স সহ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবে প্রযুক্তি নির্ভর কাজ পাবে। দুই দেশের সাইবার জগত নিরাপদ রাখার জন্য আমরা একটা চুক্তি করেছিলাম। আমি দিল্লি সফরে গেলে সেটার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে। এখন আমরা দুই দেশ একত্রিত হয়ে সাইবার ড্রিল করব। এতে বাংলাদেশ ও ভারতের সাইবার জগত নিরাপদ রাখার পাশাপাশি সারা বিশ্বের সাইবার জগত নিরাপদ রাখতে যাতে কাজ করতে পারে। এর পাশাপাশি আমাদের ডেটা সেক্টর নির্মাণ করা ও পোস্ট সেক্টরে বিনিয়োগ বৃদ্ধি করাসহ সামগ্রিক বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আমি আশা করছি ডিজিটাল বাংলাদেশ বিনির্মাণে ভারত যেভাবে পাশে থেকেছে তেমনি ডিজিটাল ভারত বিনির্মাণেও বাংলাদেশও ভারতের পাশে থাকবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :