শুরু হয়েছে অমর একুশে বইমেলা ২০২৪। বইমেলায় ৩য় দিনে শিশু প্রহরে বিটিভির শিশুতোষবিষয়ক অনুষ্ঠান সিসিমপুরের টুকটুকি, হালুম, শিকু, ইকরির সাথে কলকাকলিতে মেতে উঠেছে খুদে পাঠকরা। এছাড়াও শিশু-কিশোরদের প্রাণের সঞ্চার ঘটাতেছিল সৌখিন নামক সংগঠনের গল্প পাঠ অনুষ্ঠান।
শনিবার (৩ ফেব্রুয়ারি) মেলার ৩য় দিনে এমন বইমেলায় এমন চিত্র দেখা যায়।
গত কয়েক বছর ধরেই মেলা কর্তৃপক্ষ শিশুদের আনন্দ দিতে প্রতি শুক্র-শনিবার সকালে সুযোগ করে দেন বিটিভির শিশুতোষবিষয়ক জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘সিসিমপুর লাইভ শো’ দেখার। এবারের মেলার প্রথম ছুটির দিনেই উদ্বোধন করা হয় শিশু প্রহর।
শিশুপ্রহর উপলক্ষে বেলা ১১টায় খোলা হয় মেলার গেট। এরপরই মা-বাবার হাত ধরে আনন্দ করতে করতে মেলাপ্রাঙ্গণে প্রবেশ করে শিশুরা। মেলার গেট খোলার কিছুক্ষণ পরই শিশুচত্বরে একে একে হাজির হয় সিসিমপুরের প্রিয় চরিত্র টুকটুকি, হালুম, শিকু, ইকরি। বেজে ওঠে ‘চলছে গাড়ি সিসিমপুরে, চলছে গাড়ি সিসিমপুরে’...। আর তাতেই যেন প্রাণের সঞ্চার হয় শিশু-কিশোরদের মাঝে, মেতে ওঠে উল্লাসে।
টেলিভিশনের পর্দায় দেখা প্রিয় সিসিমপুর সরাসরি দেখার সুযোগ কে না হাত ছাড়া করতে চায়। তাই তো মেলাপ্রাঙ্গণের শিশুরা বাবা-মার সঙ্গে ছুটে আসে।
বাবার সাথে ঘুরতে আসা শিশু সুমাইয়া বলেন, আমার সিসিমপুর দেখতে ভালো লাগে। আমার সাথে বাবা, মা আর ভাই এসেছে। আমি হালুম মামার সাথে কথা বলেছি।
বাবার সঙ্গে আসা পাঁচ বছর বয়সী শিশু আয়মান জানায়, সিসিমপুর তার অনেক পছন্দ। টুকটুকি, শিকু, ইকরি ও হালুমের সঙ্গে ছবি তুলেছে সে। আর তার পছন্দের কয়েকটি কার্টুনের বইও কিনেছে সে।
এদিকে হাবিবা নামের পঞ্চম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী জানায়, গতকাল দেরি করে এসে (শুক্রবার) সিসিমপুর দেখতে পাইনি। আজকে ইকরি, শিকু, হালুম, টুকটুকি দের দেখতে পেয়েছি। আমি গতকাল ৫ টা বই কিনেছি আজকে বই কিনব না।
মেলায় সন্তানদের নিয়ে এসেছেন অভিভাবক মোহাম্মদ আশরাফুল ইসলাম। তিনি বলেন, প্রযুক্তির অগ্রগতিতে বই পড়া কমে গেছে। আমরা মোবাইল নির্ভর হয়ে গেছি। জীবন এখন যন্ত্রের যন্ত্রণা এবং প্রযুক্তির প্রবঞ্চনায় আবদ্ধ হয়ে আছে। তাই ছোটবেলা থেকেই সন্তানদের বই পড়ার অভ্যাস ও বাংলা ভাষার সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলতেই তাদ্ররকে শিশু প্রহরে নিয়ে আসি প্রতিবছর। শিশু প্রহর ওদের খুব প্রিয় সময়।
স্টল মালিকরা জানান, শুক্র-শনিবার অভিভাবকরা শিশু-কিশোরদের মেলায় নিয়ে আসেন। এই দুই দিন বিক্রিও অন্যান্য দিনের তুলনায় কয়েকগুণ বেড়ে যায়। ছুটির দিন ও শিশু প্রহর ছাড়া অন্য দিন মেলায় শিশু-কিশোরদের উপস্থিতি কম থাকে। তাই এই সময় শিশু চত্বরে বইয়ের বেচাকেনাও কম হয়। শিশুদের পছন্দের তালিকায় রয়েছে কমিক্স চরিত্র, রূপকথা, গল্প ও ছড়া, সায়েন্স ফিকশন, গণিত নিয়ে মজার খেলা ও ছড়ার বইগুলো। এ ছাড়া শিশুদের গল্প আর কার্টুনের বইও বেশি পছন্দের তালিকায় রয়েছে।
এবার বইমেলায় সপ্তাহে দুইদিন শুক্র ও শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১টা পর্যন্ত সময়কে শিশু প্রহর ঘোষণা করেছে বাংলা একাডেমি।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :