রাস্তাঘাটের বেহাল দশার কারণে নির্বাচনের সময় ভোট চাইতে গিয়ে অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল বলে মন্তব্য করেছেন পটুয়াখালী-৩ আসনের সংসদ সদস্য এস এম শাহজাদা।
আজ রবিবার জাতীয় সংসদ অধিবেশনে প্রশ্নোত্তর পর্বে তিনি এ নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। এরপর বিরোধী দল জাতীয় পার্টির সংসদ সদস্য মো. আশরাফুজ্জামানও সাতক্ষীরা সদরের রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশের পাশাপাশি দ্রুত সংস্কারের দাবি জানান।
সম্পূরক প্রশ্ন করতে গিয়ে সরকারি দলের এস এম শাহজাদা বলেন, স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অধীনে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। কিন্তু আমার প্রশ্ন হচ্ছে, অনেকগুলো কাজ, স্কুল-প্রতিষ্ঠান টেন্ডার হওয়ার পর থেকে সেগুলো দীর্ঘদিন ধরে অর্ধসমাপ্ত হয়ে আছে। এখন অবস্থাটা এমন হয়েছে যে, ওই রাস্তাটার কাজ যদি না ধরতো তাহলেই ভালো হতো। কাজগুলো থেমে থাকার কারণে জেলা নির্বাহী প্রকৌশলীকে বার বার তাগদা দেওয়ার পরও হচ্ছে না। নির্বাচনের সময় ভোট চাইতে গিয়ে অনেক বিব্রতকর পরিস্থিতিতে পড়তে হয়েছিল। কিন্তু আমরা জানি কাজগুলো চলমান আছে। তিনি এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।
জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী তাজুল ইসলাম বলেন, বৈশ্বিক অস্থিতিশীলতার কারণে নির্মাণ সামগ্রীর দাম অনেকগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। যে রড বিক্রি হতো ৫০ হাজার টাকায় সেটা হচ্ছে এক লাখ টাকায়। যে সিমেন্ট ২০০, ৩০০ টাকায় বিক্রি হতো, সেটা ৫৫০ টাকা হয়ে গেছে। যে সব কাজে ঠিকাদাররা অংশগ্রহণ করেছিল, পণ্যের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় ঠিকাদাররা কাজ করতে অনীহা প্রকাশ করেছে। আমরা বাস্তবতাটা উপলব্ধি করে প্রধানমন্ত্রীর অনুমতি নিয়ে এসব উপকরণের দাম বৃদ্ধি করি। কিন্তু এরআগে যেসব ঠিকাদার কাজ করেছিল, তারা বাস্তব প্রতিকূলতা মোকাবিলা করার কারণে তাদের সিদ্ধান্ত দিয়েছি— যেহেতু আমাদের আইনগত বাধ্যবাধকতা আছে, যেকাজগুলো তারা বাস্তবায়ন করবেন না, সেগুলো বাদ দিয়ে নতুন টেন্ডার করা ছাড়া আমাদের বিকল্প নেই। এ প্রক্রিয়াটি করতে গিয়ে আমাদের সময়ক্ষেপণ হচ্ছে।
মন্ত্রী বলেন, আমার নির্বাচনি এলাকাসহ অনেক এলাকায় ঠিকাদাররা কাজ পেয়েছিল, কিন্তু বাস্তবায়ন করতে পারেননি। তাদের এ সব কাজ বাতিল করে নতুন করে ঠিকাদার নিয়োগ করে সেগুলো বাস্তবায়ন করা হবে।
জাতীয় পার্টির দলীয় সংসদ সদস্য আশরাফুজ্জামান সম্পূরক প্রশ্নে নিজ এলাকার সড়কের দুরবস্থার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ডিজিটাল যুগেও যেন আদিম যুগে আছি। সাতক্ষীরা শহরের পোস্ট অফিসের মোড় থেকে ফুড অফিস, সমবায় অফিস, সাতক্ষীরা সরকারি কলেজসহ কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিয়ে যে মহাসড়কটি রয়েছে, সেটির উল্লেখ করে তিনি বলেন, সড়কটি দিয়ে কোনও মানুষ যদি আসে, কোনও অন্তঃসত্ত্বা মহিলা আসে রাস্তায় ডেলিভারি হয়ে যাবে। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কার করার আহ্বান জানান তিনি।
জবাবে স্থানীয় সরকার মন্ত্রী বলেন, যে রাস্তাগুলো অতীব জরুরি, যেখানে জনগণের চলাফেরার সমস্যা হচ্ছে, পৌরসভা থেকে প্রস্তাব পাঠানো হলে টাকা দ্রুত ছাড় করা হবে।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :