হাইওয়ে পুলিশের সদস্যরা অব্যাহতভাবে মাদক ও মানবপাচার রোধসহ নিরাপদ সড়ক নিশ্চিতকল্পে নিরলসভাবে নিয়োজিত আছেন এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদের সুরক্ষা নিশ্চিত করতে কার্যকর ভূমিকা রাখছেন বলে জানিয়েছন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) সেবা সপ্তাহ উপলক্ষে দেওয়া এক বাণীতে তিনি এ কথা বলেন। এ সময় ‘সেবা সপ্তাহ ২০২৪’ পালন করা হচ্ছে জেনে সন্তোষ প্রকাশ করে হাইওয়ে পুলিশের সব সদস্যদের আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান সরকারপ্রধান। একইসঙ্গে পরিবহনের সুরক্ষা নিশ্চিত করে দেশের রপ্তানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখার জন্য হাইওয়ে পুলিশের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান তিনি।
শেখ হাসিনা বলেন, মহান মুক্তিযুদ্ধে বাংলাদেশ পুলিশের রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল আত্মত্যাগ ও বীরত্বের স্বর্ণোজ্জ্বল ইতিহাস। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ কালরাতে অকুতোভয় বীর পুলিশ সদস্যরা গড়ে তুলেছিল প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ। দেশের স্বাধীনতার জন্য আত্ম উৎসর্গকারী দেশপ্রেমিক বীর পুলিশ সদস্যদেরকে গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।
তিনি বলেন, ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম একজন নারী পুলিশ অফিসারকে জেলা পুলিশ সুপার হিসেবে নিয়োগ প্রদান করে। সে সময় পুলিশের বাজেট বৃদ্ধি করা হয়, ঝুঁকি ভাতা প্রদান শুরু হয়, দ্বিগুণ রেশন প্রদান এবং পুলিশ কল্যাণ ট্রাস্ট প্রতিষ্ঠা করা হয়। জনবান্ধব পুলিশ প্রতিষ্ঠায় প্রশিক্ষণকে গুরুত্ব দিয়ে ২০০০ সালে পুলিশ স্টাফ কলেজ প্রতিষ্ঠা করা হয়।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর থেকে গত ১৫ বছরে পুলিশের সাংগঠনিক কাঠামোতে প্রয়োজনীয় সংখ্যক নতুন পদ সৃজন করে জনবল নিয়োগ করেছে। তাছাড়া, ইন্ডাস্ট্রিয়াল, ট্যুরিস্ট, নৌ, পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন, এন্টি টেররিজম ও কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটসহ বেশ কয়েকটি রেঞ্জ ও মেট্রোপলিটন ইউনিট প্রতিষ্ঠা করে বাংলাদেশ পুলিশকে একটি অত্যাধুনিক ও পেশাদার বাহিনীতে রূপান্তরিত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, জাতীয় জরুরি সেবায় ৯৯৯ ইউনিট গঠন করা হয়েছে। নারী, শিশু, বয়স্ক ও প্রতিবন্ধী সার্ভিস ডেস্ক চালু ও বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে পুলিশ সেবা জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে।
শেখ হাসিনা বলেন, হাইওয়ে পুলিশকে আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে ৫০টি হাইওয়ে আউটপোস্ট নির্মাণ, আধুনিক যন্ত্রপাতি, যানবাহন ও জনবল বৃদ্ধি করা হয়েছে। ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে সার্বক্ষণিক নজরদারি বৃদ্ধির লক্ষ্যে নারায়ণগঞ্জের সাইনবোর্ড হতে চট্টগ্রাম সিটিগেইট পর্যন্ত ২৫০ কিলোমিটার এলাকায় অত্যাধুনিক ডাটা সেন্টার ও আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স সহকারে সিসিটিভি মনিটরিং সিস্টেম স্থাপন করা হচ্ছে। এর ফলে মহাসড়কে দুর্ঘটনা, প্রাণহানি হ্রাস পাবে ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি পাবে। পাশাপাশি আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা ও বৈদেশিক পণ্য রপ্তানি পরিবহনের সুরক্ষা নিশ্চিত করে দেশের রপ্তানি খাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
প্রধানমন্ত্রী সততা, নিষ্ঠা ও মানবিকতার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের মাধ্যমে বাংলাদেশ পুলিশকে বঙ্গবন্ধুর প্রত্যাশিত ‘জনগণের পুলিশ’ হিসেবে গড়ে তুলতে নিরলসভাবে কাজ করার আহ্বান জানান। এ সময় সরকারপ্রধান হাইওয়ে পুলিশ ‘সেবা সপ্তাহ ২০২৪’ উপলক্ষে আয়োজিত কর্মসূচির সার্বিক সাফল্য কামনা করেন।
একুশে সংবাদ/সা.আ
আপনার মতামত লিখুন :