রাজধানীতে ফ্ল্যাটের মালিক ও বাড়ির মালিকদের ট্যাক্স রিটার্ন জমা নিশ্চিত করতে অচিরেই বিশেষ অভিযান চালানো হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম। গতকাল বৃহস্পতিবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ে রাজস্ব বোর্ডের সম্মেলনকক্ষে এক প্রাক বাজেট সভায় তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘বাড়ির মালিকদের রিটার্ন জমা বাধ্যতামূলক দুই বছর হয়ে গেছে। এখন আর চুপচাপ বসে থাকব না। তাদের তালিকা জোগাড় করা হয়েছে। আমরা খুব শিগগিরই স্পেশাল ড্রাইভ শুরু করব।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমরা কর প্রদান প্রক্রিয়া সহজ করেছি এবং রিটার্ন দিলেই যে কর দিতে হবে, এমনও নয়। সভায় ই-কমার্স অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের প্রতিনিধিরা বেশির ভাগ বাড়ির মালিকদের কাছ থেকে রিটার্ন পাওয়া যাচ্ছে না বলে সভায় বিষয়টি আলোচনা করার পর চেয়ারম্যান এসব কথা বলেন।
সভায় বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনসহ কয়েকটি অ্যাসোসিয়েশন আগামী ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেট প্রস্তাব তুলে ধরে। সভায় বাজুসের পক্ষ থেকে জুয়েলারি সামগ্রীর বিক্রিতে ভ্যাট কমানোসহ বেশ কিছু প্রস্তাব তুলে ধরা হয়।
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, ‘বৈধ পথে স্বর্ণ আমদানি বাড়ানোর জন্য ডিউটি কমানোসহ বেশ কিছু উদ্যোগ আমরা নিয়েছিলাম, তারপরও স্বর্ণ আমদানি করছেন না। কিন্তু দেশে গোল্ডের অরনামেন্ট হচ্ছে। সেটা ডিউটির সমস্যা না অন্য সমস্যা আপনারা দেখে নেবেন।’
এদিকে সারা দেশে ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি) বসানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাংলাদেশ জুয়েলারি অ্যাসোসিয়েশন (বাজুস)। একই সঙ্গে স্বর্ণ পরিশোধনাগার শিল্পে ১০ বছরের কর অবকাশ চেয়েছে সংগঠনটি।
বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বাদল চন্দ্র রায় বলেন, সারা দেশে ৪০ হাজার জুয়েলারি প্রতিষ্ঠানে ইএফডি বসানো হলে সরকার বিপুল পরিমাণ রাজস্ব আদায় করতে পারবে। ব্যবসায় সমতা আসবে।
স্বর্ণের ওপর তিন শতাংশ হারে ভ্যাট নির্ধারণ, জুয়েলারি সংশ্লিষ্ট কর অব্যাহতি প্রদান, অপরিশোধিত ও আংশিক পরিশোধিত স্বর্ণের ওপর কাস্টমস ডিউটি কমানোর প্রস্তাব দিয়েছে বাজুস।
বাজুসের সাধারণ সম্পাদক বলেন, স্বর্ণ নীতিমালা সংশোধনের মাধ্যমে পর্যটকদের সোনার বার আনা বন্ধ করা, ট্যাক্স ফ্রি সোনার অলংকার ১০০ গ্রামের পরিবর্তে ৫০ গ্রাম করার প্রস্তাব করছি।
তিনি পার্শ্ববর্তী দেশের সঙ্গে ব্যাগেজ রুল সমন্বয় ও এক জন যাত্রীকে একবার ব্যাগেজ রুলের সুবিধা দেওয়ার প্রস্তাব দেন।
বাংলাদেশ ব্রেড, বিস্কুট ও কনফেকশনারি প্রস্তুতকারী সমিতি মূসক আইনের ২৬ ধারার আলোকে হাতে অব্যাহতির তালিকায় তৈরি কনফেকশনারি পণ্যকে অন্তর্ভুক্ত করার প্রস্তাব দেন।
ই-ক্যাব ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানের ওপর ন্যূনতম কর ০.৬ শতাংশ থেকে হ্রাস করে ০. ১ শতাংশ করা, বাড়িওয়ালার আয়কর রিটার্নের দাখিল প্রমাণ সংগ্রহের প্রয়োজনীয়তা বাতিলের প্রস্তাব দেয়।
৪০ হাজার প্রতিষ্ঠান রিটার্ন দাখিল করে কি না তা কর্মকর্তাদের খোঁজ নিতে বলেন এনবিআর চেয়ারম্যান। পাশাপাশি জুয়েলারি ও ই-কমার্স খাতকে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :