মজুতদারদের ঠেকাতে ডিসিদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মজুতদারদের ঠেকাতে এবং খাদ্যে ভেজাল বন্ধে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। রোজায় কেউ যেন পণ্য মজুদ করে কৃত্রিম সংকট করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
রোববার (৩ মার্চ) সকালে নিজ কার্যালয়ের শাপলা হলে ডিসি সম্মেলনে উদ্বোধনী বক্ত্যবে তিনি ডিসিদের এই আহ্বান জানান। এসময় মজুতদারদের দাম বাড়িয়ে ভোক্তাদের হয়রানি না করার তাগিদ দিয়েছেন তিনি।
তিনি বলেন, ‘বাজার পরিস্থিতিরি দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। রমজান আসলে কিছু ব্যবসায়ী মজুত করে দাম বাড়িয়ে মুনাফা নিতে চায়। কোথাও যাতে ভোক্তাদের হয়রানিতে পড়তে না হয়, সেদিকে নজর রাখতে হবে। বিদেশনির্ভর না হয়ে নিজেদের উৎপাদনে গুরুত্ব দিতে হবে। নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য যেন সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছাতে পারে, সেটি খেয়াল রাখতে হবে। খাদ্যে ভেজাল দেওয়ার বিষয়টিও দেখতে হবে। রোজা আসলে এটা বেড়ে যায়।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এখন সবেচেয়ে বড় কিছু সমস্যা আছে। এখন কিশোর গ্যাংয়ের উৎপাত দেখি। পড়ালেখা করা ছেলে-মেয়েরা কেন এসবে জড়াবে? এটা সবার দেখতে হবে। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে অভিভাবক ও শিক্ষকসহ সবাইকে নজরদারি বাড়াতে হবে। ছেলে-মেয়েরা শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যায় কি না, নজরদারি বাড়াতে হবে।
অভিভাবকদের সচেতন করতে হবে। (কিশোরদের) গ্রেফতার করে লাভ নেই। গ্রেফতার করলে অপরাধীদের সঙ্গে মিশে আরও খারাপ হয়ে যাবে। গোড়া থেকে সমস্যার সমাধান করতে হবে।’
নির্বাচনে যথাযথ দায়িত্ব পালন করায় জেলা প্রশাসকদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘১৯৭৫ সালের পর থেকে যতগুলো ভোট দেখেছি, এবারের নির্বাচন সব থেকে সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে যারা নির্বাচন চায়নি, তাদের কাছে নির্বাচন হয়তো পছন্দ নাও হতে পারে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আগ্রহ বেশি ছিল। বিশেষ করে নারী ও তরুণ ভোটাররা; তারা যে অংশ নিতে পেরেছে নির্বাচনে, এর ক্রেডিট আপনাদের (ডিসি)। এজন্য আপনাদের আবারও ধন্যবাদ জানাই।’
মন্ত্রিপরিষদ সচিব মাহবুব হোসেনের সূচনা বক্তব্যে শুরু হওয়া সম্মেলনে আরও বক্তব্য রাখেন- জনপ্রশাসনমন্ত্রী ফরহাদ হোসেন, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব তোফাজ্জল হোসেন মিয়া, ঢাকা বিভাগীয় কমিশনার মো. সাবিরুল ইসলাম, গাইবান্ধার জেলা প্রশাসক কাজী নাহিদ রসুল ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসক আবুল বাসার মোহাম্মদ ফখরুজ্জামান।
এবারের সম্মেলনে সর্বমোট অধিবেশন ৩০টি। কার্য-অধিবেশন ২৫টি (একটি উদ্বোধন অনুষ্ঠান, একটি স্পিকারের সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও মতবিনিময় এবং একটি প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ ও সদয় নির্দেশনা গ্রহণ এবং অন্যান্য আনুষ্ঠানিকতা একটি। এছাড়া অংশগ্রহণকারী কার্যালয় একটি (প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়)। একই সঙ্গে ৫৬টি মন্ত্রণালয়, বিভাগ, কার্যালয় ও সংস্থা সম্পর্কে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে প্রায় ৩৫৬টি প্রস্তাবনা জমা পড়েছে।
প্রাপ্ত প্রস্তাবগুলোর জনসেবা বৃদ্ধি, জনদুর্ভোগ হ্রাস করা, রাস্তাঘাট ও ব্রিজ নির্মাণ, পর্যটনের বিকাশ, আইন-কানুন বা বিধিমালা সংশোধন, জনস্বার্থ সংরক্ষণের বিষয়গুলো অগ্রাধিকার ভিত্তিতে করা হয়েছে। এরমধ্যে বেশি সংখ্যক প্রস্তাব পড়েছে সড়ক পরিবহন ও মহাসড়ক বিভাগ থেকে ২২টি। গত বছরও একইভাবে ডিসিরা প্রায় আড়াইশ প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন।
সম্মেলনটি শেষ হবে আগামী বুধবার (৬ মার্চ)।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :