কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান টানেলের বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ ও মূল্য বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। চুক্তির মেয়াদ ৬ মাস বাড়ানো এবং ব্যয় ১ কোটি ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৬ টাকা বাড়ানোর বিষয়ে অনুমোদন মিলেছে।
বৃহস্পতিবার (১৪ মার্চ) অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় এসব অনুমোদন দেয়া হয়। সভা শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য জানান মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের সমন্বয় ও সংস্কার সচিব মো. মাহমুদুল হোসাইন খান।
তিনি জানান, ‘কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ’ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ ও মূল্যবৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে। নতুন করে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ১ কোটি ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৬ টাকা।
২০১৬ সালের ৭ সেপ্টেম্বর সিসিজিপি সভার কর্ণফুলী নদীর তলদেশে বহুলেন সড়ক টানেল নির্মাণ প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে এসএমইসি এবং সিওডব্লিউআই-কে অনুমোদন দেয়া হয়। এর প্রেক্ষিতে ২৯১ কোটি ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৪ টাকায় নিয়োগের চুক্তি করা হয়। পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ৫ বার বাড়ানো চুক্তির মেয়াদ গত ৩১ ডিসেম্বর শেষ হয়।
প্রকল্পের ডিফেক্ট লাইবিলিটি প্রিয়ড (ডিএলপি) চলাকালীন মূল টানেলের ডিফেক্ট শনাক্ত করা ও অসম্পন্ন কাজগুলো তদারকি করার জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ আগামী ৩০ জুন পযন্ত বৃদ্ধি করা হয়েছে। এ কারণে মূল চুক্তির অতিরিক্ত ১ কোটি ৪ লাখ ৪১ হাজার ৫৩৬ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এতে সংশোধিত চুক্তিমূল্য বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৯২ কোটি ৩৭ লাখ ৫৮ হাজার ৪৬৪ টাকা।
মাহমুদুল হোসাইন আর বলেন, কর্ণফুলি টালের পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের চুক্তির মেয়াদ ও ব্যয় বাড়ানোর পাশাপাশি ‘মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের (চবক অংশ) আওতায় পরামর্শক ব্যয় ও ‘জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের ব্যয় বাড়ানো হয়েছে। একই সঙ্গে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের একটি প্রকল্পের পরামর্শক নিয়োগের বিষয়ে অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
‘মাতারবাড়ি পোর্ট ডেভেলপমেন্ট’ প্রকল্পের (চবক অংশ) আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের অতিরিক্ত কাজের ভেরিয়েশন বাবদ ২৪ কোটি ৫ লাখ ৩২ হাজার ৪৬৩ টাকা অনুমোদন দিয়েছে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটি। এই প্রকল্পের পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে নিপ্পন কোই কোম্পানি লিমিটেডের সঙ্গে ২৩৪ কোটি ৩ লাখ ৬ হাজার ৬১৪ টাকায় নিয়োগের চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুসারে পরামর্শক সেবা কাজ চলমান আছে। প্রথম চুক্তির পর অতিরিক্ত হিসেবে ফেজ-২ এর এরিয়া সার্ভি অ্যান্ড ফিজিবিলিটি স্টাডি কাজ সম্পাদনের জন্য পরামর্শক প্রতিষ্ঠানের ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২৪ কোটি ৫ লাখ ৩২ হাজার ৪৬৩ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
এদিকে সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় ক্লাইমেট স্মার্ট এগ্রিকালচার অ্যান্ড ওয়াটার ম্যানেজমেন্ট (সিএসএডব্লিউএম) প্রপেক্ট’ এর পরামর্শক প্রতিষ্ঠান হিসেবে যৌথভাবে ডিভনকন, ডিএসইচভি, একিউইউএ, ইপিসি এবং আইডব্লিউএম-কে নিয়োগের অনুমোদন দেয়া হয়েছে। পরামর্শক ব্যয় ধরা হয়েছে ৩৩ কোটি ৭৫ লাখ ৭৫ হাজার ৭৫০ টাকা। এছাড়া ‘জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পে নতুন করে ব্যয় বাড়ানো হয়েছে ২৮ কোটি ৮ লাখ ৫ হাজার ২৮৪ টাকা।
সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভা (সিসিজিপি) অনুমোদন নিয়ে ‘জাতীয় উন্নয়ন প্রশাসন একাডেমি প্রতিষ্ঠা (২য় সংশোধিত)’ প্রকল্পের পূর্ত কাজ হাসান অ্যান্ড সন লিমিটেডের নিকট থেকে ১৫৭ কোটি ৯৭ লাখ ৩৯ হাজার ৫৩০ টাকায় ক্রয়ের চুক্তি করা হয়। চুক্তি অনুসারে কাজ চলমান অবস্থায় কিছু টেন্ডারভুক্ত/টেন্ডার বর্হিভুত আইটেম হ্রাস/বৃদ্ধি হওয়ায় ভেরিয়েশন বাবদ অতিরিক্ত ২৮ কোটি ৮ লাখ ৫ হাজার ২৮৪ টাকা ব্যয় বৃদ্ধির প্রস্তাব অনুমোদন দেয়া হয়েছে।
একুশে সংবাদ/আ.জ.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :