ঠাকুরগাঁওয়ের বালিয়াডাঙ্গী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মার্চ মাসের বিদ্যুৎ বিলের হিসাব মিলছে না অধিকাংশ গ্রাহকদের। অভিযোগ উঠেছে প্রতিটি বিলে অতিরিক্ত টাকা যোগ করে দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ ব্যবহারের বিপরীতে ভ্যাট, বিলম্ব মাসুল যোগ করেও চূড়ান্ত বিলের সাথে গড়মিল পাওয়া গেছে বিলের কপিতে। এ অবস্থায় এমন ভুতুড়ে বিল নিয়ে বিপাকে গ্রাহকরা।
গ্রাহকদের অভিযোগ বিল নিয়ে অফিসে ঘুরার পরেও কোন সমাধান দিতে পারছেনা সমিতির লোকজন। আর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির লোকজনের দাবি গত মাসের মাঝামাঝিতে বিদ্যুৎ বিল বেড়েছে। সফটওয়্যারে সক্রিয়ভাবে সেটি যোগ হওয়ার কারণে এমন সমস্যা সৃষ্টি হয়েছে।
ফুলতলা গ্রামের নাছিমা বেগমের ফেব্রুয়ারি মাসে বিদ্যুৎ ব্যবহার হয়েছে ১০০ কিলোওয়াট। বিদ্যুতের মুল্য অনুযায়ী ১০০ কিলোওয়াটের মূল্য ৫৭৫ টাকা, এর সঙ্গে ডিমান্ড চার্জ ৪২ টাকা, মিটার ভাড়া ১০ টাকা, ডাবল ভ্যাট ৭২ টাকা যুক্ত করে বিলের পরিমাণ দাড়ায় ৬৯৯ টাকা। অথচ সর্বমোট বিল দেখানো হয়েছে ৭৬২ টাকা। ৬৩ টাকা বিল অতিরিক্ত দেখানো হয়েছে।
ওই গ্রাহকের অভিযোগ, বিলটিতে হিসাবের গড়মিল থাকলেও ৭৬২ টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে তাকে। অফিসকে জানানোর পরও সমাধান হয়নি। এ ধরনের অভিযোগ ফুলতলা শুধু ফুলতলা গ্রামের নাছিমা বেগমের নয়, উপজেলার ৮ ইউনিয়নের প্রায় অধিকাংশ গ্রাহকের।
বালিয়াডাঙ্গীর ভাঙ্গামিল এলাকার তসলিম উদ্দীন নামে এক ব্যবসায়ী জানান, বাড়ির মিটারে ৯ হাজার টাকা অতিরিক্ত যোগ করে বিল ইস্যু করে পাঠিয়েছে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। বিল ইস্যু হলেই পরিশোধ করতে বাধ্য গ্রাহকরা, এমন অদ্ভুদ নিয়ম এই দপ্তরটির। ভুল নিজেদের হলেও সেটার দায় গ্রাহকের উপর চাপানো হয়।
স্থানীয় জৈষ্ঠ্য সাংবাদিক হারুন অর রশিদ জানান, ২০১০ সালের জুন মাসের বিল বকেয়া দেখিয়ে আমাকে ২০২৩ সালে নোটিশ পাঠিয়েছিল পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি। অথচ তাদের দেওয়া প্রত্যয়ন রয়েছে আমার নিকট, ওই বিল পরিশোধ করা হয়েছে। অভিযোগতো অনেক আছে, সমাধান করার কেউ নেই।
জানতে চাইলে বালিয়াডাঙ্গী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির জোনাল অফিসের মহাব্যবস্থাপক আহসান হাবিব বলেন, বিলের ফরম্যাটটি সরকার কর্তৃক প্রদত্ত। বর্তমানে গোটা বাংলাদেশের সব বিদ্যুৎ কম্পানির একই ফরম্যাটে বিল করা হচ্ছে। তবে বিলে অতিরিক্ত বিলের যোগফল, ভ্যাট ও সমুদয় প্রদেয় ভ্যাটের ব্যাপারে তিনি কোনো সদুত্তর দেননি।
এদিকে সহকারী ব্যবস্থাপক কামরুল ইসলাম জানান, গত মাসের মাঝামাঝিতে বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে সক্রিয় ভাবে যোগ হয়েছে মুল বিলে। সফটওয়্যার আপডেট না হওয়ার এটি বুঝতে সমস্যা হচ্ছে। সফটওয়্যার আপডেট এবং বিলে `রো` বাড়িয়ে উল্লেখ করে দিলেই এ সংক্রান্ত সমস্যা আর তৈরি হবে না। আরও বিস্তারিত জানতে জেলায় যোগাযোগের পরামর্শ দেন তিনি।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :