রাজধানীর মাস্টারমাইন্ড স্কুলের ছাত্র শিশু জামিনুর রহমান (১১) অপহরণের ঘটনায় গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি) ৭ জনকে গ্রেফতার করেছে বলে জানিয়েছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ হারুন অর রশিদ।
রোববার (২৪ মার্চ) এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান তিনি। তিনি বলেন, এই ঘটনার তদন্ত করতে গিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য পেয়েছেন গোয়েন্দারা।
হারুন অর রশিদ বলেন, চক্রটির প্রথম টার্গেট থাকে চালক। তাতে ব্যর্থ হলে নিজেদের এক সদস্যকেই চালক সাজিয়ে নিয়োগ দেয়া হয়। এরপরই অপহরণের খেলায় মেতে উঠে চক্রটি।
তিনি বলেন, শালা-দুলাভাই মিলে ঘটনাটি ঘটিয়েছেন। চালক কামরুল হচ্ছেন শালা। আর তার দুলাভাইয়ের নাম আব্দুল আল মামুন। তারা দুজনে মিলেই পরিকল্পনা করেন। গ্রেফতারকৃতদের প্রত্যেকের নামেই একাধিক মামলা রয়েছে।
গত বুধবার (২০ মার্চ) বড় ভাই আমিনকে তার স্কুলে নামিয়ে দেয় তাদের ব্যক্তিগত গাড়িটি। এরপর ছোট ভাই জামিনুরকে তার স্কুলে নামিয়ে দিতে গাড়িটি রওনা দেয়। এ ঘটনার পর থেকেই ১১ বছর বয়সী জামিনুরের আর সন্ধান মেলেনি। ঘটনা দিন বিকেলেই এক অপরিচিত নম্বর থেকে ফোন করে জানানো হয় গাড়ি এবং ড্রাইভারকে অপহরণ করা হয়েছে।
অপহরণকারীদের দাবি, ফিরে পেতে হলে দিতে হবে ১ কোটি ৫ লাখ টাকা। আর থানায় অভিযোগ করলেই দেয়া হয় হত্যার হুমকি। থানায় অভিযোগ না দিয়ে শেষমেশ দফারফা হয় ১৪ লাখ টাকায়। টাকা বুঝে পেয়ে সেদিন মধ্যরাতেই ফিরিয়ে দেয়া হয় সবাইকে।
গণমাধ্যমকে শিশুটির বাবা ব্যবসায়ী আনিসুর রহমান বলেন, ‘আমাকে ফোনে বলা হয়, টাকা দিলে এক ঘণ্টার মধ্যে ছেলেকে বাসায় পৌঁছে দেয়া হবে। কোটি টাকা দাবি করা হয়। কিন্তু আমি বলেছি, সর্বোচ্চ ১৫ থেকে ১৬ লাখ টাকা ব্যবস্থা করতে পারবো। এর বেশি হলে সম্ভব না। এখন আপনারা যা খুশি করতে পারেন, আমার আর কিছু করার নেই। পরে অবশ্য দর কষাকষি করে ১৪ লাখ টাকা দিয়ে ছেলেকে ফিরিয়ে আনি।’
তবে বাবা অভিযোগ না করলেও চাচা ঠিকই অভিযোগ করেন ধানমন্ডি থানায়। এরপর অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে গ্রেফতারের পর বেশকিছু চাঞ্চল্যকর তথ্য পান গোয়েন্দারা। অপহরণকারীরা জানান, এ ঘটনার মূলে রয়েছেন গাড়িটির চালক।
এদিকে, রাজধানীর গুলশানে প্রকাশ্যে গুলি করে একজনকে আহত করার ঘটনা নিয়ে ডিএমপির ডিবি প্রধান বলেন, এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করেই এ ঘটনার সূত্রপাত।
মাত্র সপ্তাহখানেকের ব্যবধানে এ এলাকা থেকে ১১টি অস্ত্র উদ্ধার করেছে ডিবি।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :