AB Bank
ঢাকা শুক্রবার, ২২ নভেম্বর, ২০২৪, ৭ অগ্রহায়ণ ১৪৩১

সরকার নিবন্ধিত নিউজ পোর্টাল

Ekushey Sangbad
ekusheysangbad QR Code
BBS Cables
Janata Bank
  1. জাতীয়
  2. রাজনীতি
  3. সারাবাংলা
  4. আন্তর্জাতিক
  5. অর্থ-বাণিজ্য
  6. খেলাধুলা
  7. বিনোদন
  8. শিক্ষা
  9. তথ্য-প্রযুক্তি
  10. অপরাধ
  11. প্রবাস
  12. রাজধানী

ঈদে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে সাড়া নেই কাউন্টারে


Ekushey Sangbad
জাহাঙ্গীর আলম
০৪:২৪ পিএম, ২৪ মার্চ, ২০২৪
ঈদে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রিতে সাড়া নেই কাউন্টারে

আসন্ন ঈদুল ফিতরে শুক্রবার থেকে বাসের অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করেছে বাংলাদেশ বাস—ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশ। সাধারণত ঈদে বাসের অগ্রিম টিকিট কিনতে কাউন্টারগুলোতে থাকে যাত্রীদের উপচেপড়া ভিড়। তবে এবার এর ছিটেফোঁটাও প্রভাব পড়েনি রাজধানীর গাবতলী বাস টার্মিনালে। যাত্রী সংকটে ভুগছেন পরিবহন মালিক শ্রমিকেরা। ঈদকে সামনে রেখে কাঙ্ক্ষিত টিকিট বিক্রি না হওয়ায় দুশ্চিন্তার ভাঁজ পড়েছে তাদের কপালে। এদিকে যাত্রী সংকটের কারণ হিসেবে রেল যাত্রা ও একাধিক রুটকে দায়ী করছে পরিবহন শ্রমিকেরা।

পরিবহন সংশ্লিষ্টরা বলছেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর দৌলতদিয়া—পাটুরিয়া ঘাটে ফেরি পারাপারে যাত্রী সংখ্যা কমে গেছে। এছাড়া রাজধানীর বিভিন্ন এলাকার বাস কাউন্টার থেকেও অগ্রিম টিকিট দেওয়া হচ্ছে। এতে গাবতলী বাস টার্মিনালে যাত্রী কমেছে।

গতকাল রোববার সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, আতীতে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হলে কাউন্টারগুলোতে যাত্রীর দীর্ঘ লাইন হলেও বর্তমানে সেই চিত্রটা সম্পূর্ণ ভিন্ন। কাউন্টারে নেই কোন যাত্রী, নেই দীর্ঘ লাইন। বেলা সাড়ে ১১ টা পর্যন্ত অগ্রিম টিকিটের কোন যাত্রীও আসেনি। কাউন্টারে বসে যাত্রীর খোঁজে অবসর সময় কাটাচ্ছেন পরিবহন শ্রমিকেরা।

কর্মচারীদের দাবি, ট্রেনের যাত্রায় কোনো ভোগান্তি না থাকায় এবং বাসের টিকিটের দামের তুলনায় ট্রেনের টিকিটের দাম কম হওয়ায় মানুষ দূরপাল্লার যাত্রায় ট্রেনকে প্রধান মাধ্যম হিসেবে দেখছেন। তাছাড়া ঢাকার সব কাউন্টারেই অগ্রিম টিকিট বিক্রি হচ্ছে। এ কারণে গাবতলীতে যাত্রীর চাপ নেই।

শ্যামলী পরিবহনের কল্যাণপুর কাউন্টার থেকে বগুড়া, নওগাঁ, রংপুর, জয়পুরহাট, গাইবান্ধা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুরের টিকিট বিক্রি হচ্ছে। আসাদগেট কাউন্টার থেকে দেওয়া হচ্ছে দিনাজপুরের বাসের টিকিট। এছাড়া শ্যামলী কাউন্টার থেকে ঠাকুরগাঁও, পঞ্চগড়ের টিকিট বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে টিকিট নিতে যাত্রীদের গাবতলী বাস টার্মিনালে আসতে হচ্ছে না। সুবিধামতো স্থান থেকে টিকিট সংগ্রহ করতে পারছেন যাত্রীরা।

গাবতলীতে থাকা শ্যামলী পরিবহনের স্টাফ মানিক বলেন, শুকবার থেকে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হয়েছে। কিন্তু এখানে ভিড় নেই। অন্যসব কাউন্টার থেকে যাত্রীরা টিকিট সংগ্রহ করছেন, এজন্য গাবতলীতে চাপ নেই।

হানিফ পরিবহনের কাউন্টারে থাকা হৃদয়ে বলেন, গতবছরের তুলনায় ছিটেফোঁটা যাত্রীও নেই এবার। কাউন্টারে তাদের অলস সময় কাটাতে হচ্ছে। আজ পর্যন্ত যে কয়টা টিকিট বিক্রি হয়েছে কোনো গাড়িতেই ৭ থেকে ৮ জনের বেশি যাত্রী আমরা পাইনি এখনো।

এস বি সুপার ডিলাক্সের কাউন্টার মাস্টার জিল্লু রহমান বলেন, আগে একটা সময় ঈদের অনেক আগে থেকেই গাবতলীতে মানুষ রাত জেগে লাইনে দাঁড়িয়ে থাকতো টিকিট কাটার জন্য। কিন্তু এখন টিকিট বিক্রির কোন চাপই নেই। তাছাড়া বর্তমানে অধিকাংশ মানুষ ট্রেনে যাতায়াত করে। ট্রেনে নির্দিষ্ট সময়ে বাড়ি পৌঁছে যায়। আবার বাসের চেয়ে ভাড়াও কম। অনেকে আবার সায়দাবাদ বা গাবতলী থেকে ভেঙে ভেঙে চলে যাই।  

শ্যামলী এন আর ট্রাভেলসের কোনটার মাস্টার ওমারুল ইসলাম বলেন, ঈদে কোন যাত্রীর চাপ এখন পর্যন্ত নেই। যদিও আমাদের গাড়ির অগ্রিম টিকিট সব কল্যাণপুর থেকে দিচ্ছে। তবে অনলাইনে দেখলাম এখন পর্যন্ত যাত্রীর কোন চাপ নেই। গাবতলীতে অনেকেই টিকিট বিক্রির উপর কমিশন হিসেবে টাকা পাই। যাত্রী না থাকলে টিকিট বিক্রি না হলে এসব শ্রমিকদের ঈদ করা কষ্ট হয়ে যাবে।

যাত্রী চাপ না থাকার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, আজ থেকে ট্রেনের টিকিট ছেড়েছে। অনেকে ট্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। তাই ট্রেনের টিকিট কাটবে। যদি ট্রেনে টিকিট না পায় তখন বাসে যাবে। তাই কয়েকদিন না গেলে কিছুই বলা যাচ্ছে না যাত্রী পাবো কি পাবো না। এদিকে এখনো বেশ কিছু পরিবহনে দূরপাল্লার অগ্রিম টিকিট বিক্রি বন্ধ আছে বলে জানিয়েছেন পরিবহন শ্রমিকরা।

সোহাগ পরিবহনের পরিবহন শ্রমিক বলেন, আমাদের মালিক পক্ষ থেকে এখনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরুর বিষয়ে কিছু জানায় নাই। তাই আমরা এখনো অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু করি নাই। ২৬ তারিখ থেকে আমাদের শুরু হতে পারে।  

অন্যান্য অধিকাংশ গাড়িতে টিকিট বিক্রি শুরু করলেও আপনাদের এখনো টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি কেন এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, কাউন্টারে কেউ অগ্রিম টিকিট সংগ্রহ করতে আসছে না বললেই চলে। যাত্রী চাপ না থাকার কারণেই এখনো টিকিট বিক্রি শুরু হয়নি।  

এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে অগ্রিম টিকিট বিক্রি শুরু হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাদেশ বাস—ট্রাক ওনার্স অ্যাসোসিয়েশনের চেয়ারম্যান রমেশ চন্দ্র ঘোষ জানান, বিআরটিএর নির্ধারিত ভাড়া অনুযায়ী বাসের ভাড়া নেওয়া হবে। ভাড়ার তালিকার বাইরে বাড়তি ভাড়া নেওয়া যাবে না। সব বাস মালিকদের সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।

অ্যাসোসিয়েশনের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং শ্যামলী এনআর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শুভঙ্কর ঘোষ রাকেশ জানান, যাত্রীরা যাতে বাসের অগ্রিম টিকিট সুশৃঙ্খলভাবে কাউন্টার থেকে কিনতে পারেন, সেজন্য বাস মালিকদের পক্ষ থেকে মনিটরিং টিম কাজ করবে। বাসের কোনো টিকিট কালোবাজারি হবে না। কারণ বাস মালিকদের মনিটরিং টিমের সঙ্গে পুলিশ প্রশাসনও কাজ করবে। এছাড়া প্রশাসনের গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমেও টিকিট কালোবাজারি ও যাত্রী হয়রানি রোধ করা হবে।

গাবতলী বাস টার্মিনালে আরও বেশ কয়েকজন বাসের স্টাফ, টিকিট কাউন্টারে কর্মরতদের সঙ্গে কথা হয়। তারা জানান, ২০ রমজানের পর থেকে অনেকেই পরিবার—পরিজনদের ঢাকা থেকে বাড়ি পাঠিয়ে দেবেন। সেসময় যাত্রীর চাপ বাড়বে এবং ব্যবসা ভালো হবে বলে আশাবাদী তারা। 
এদিকে বাস কোম্পানিগুলো অনলাইনে টিকিট বিক্রির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ‘বাসবিডি ডটকম ডট বিডি’ এক বিশেষ বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে, ঈদুল ফিতর উপলক্ষে বাসের অগ্রিম টিকিট শুক্রবার থেকে অনলাইন মাধ্যমে দেওয়া হবে। ই—টিকিট কেনা যাত্রীদের জানানো হয়েছে, রাস্তায় সৃষ্ট জ্যামের কারণে ও গাড়ির যান্ত্রিক ত্রুটি এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক কারণে যাত্রার সময় পরিবর্তন হতে পারে। বিষয়টি জেনে টিকিট ক্রয় করতে বলা হচ্ছে।


একুশে সংবাদ/ন.প্র/জাহা

Link copied!