রাজধানীতে লাখ লাখ কর্মজীবী মানুষে বসবাস। বছরে দুটি উৎসবে এসব মানুষের বড় একটি অংশ শহর ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি যায়। আর ওই দুই উৎসবের মধ্যে ঈদুল ফিতরেই সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়েন।
এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে, প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদের আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়িমুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে বাস ও রেলস্টেশন এবং লঞ্চঘাটে। ফলে ফাঁকা হয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকা। দ্রুত বদলে যাচ্ছে শহরের চিরচেনা রূপ।
শুক্রবার ৯৫ এপ্রিল) ভোর থেকে রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে যাত্রীদের ভিড় দেখা গেছে। যাত্রীরা জানিয়েছেন, প্রায় সব ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যাচ্ছে।
এছাড়া মহাখালী, গাবতলী, সায়েবাদ বাস টার্মিনালেও ঢাকা ছেড়ে যাওয়া মানুষের চাপ বেড়েছে। এতে টার্মিনালের আশপাশের সড়কে রয়েছে হালকা যানজট। তবে কোথাও কোনো ভোগান্তিতে পড়তে হয়নি বলে জানিয়েছেন যাত্রীরা।
রাজধানীর মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে আগত মিজান জানান, তিনি একজন বেসরকারি কর্মজীবী। ঈদের আগে বউ বাচ্চাদেরকে দেশে পাঠানোর জন্যই মহাখালী বাস টার্মিনালে এসেছেন। তেমন কোন ভোগান্তি না থাকলেও বিরম্বনা আছে। তবে অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার বিলম্বনা টা কিছুটা কম।
ঈদের আগে আগামী সোম ও মঙ্গলবার শেষ কর্মদিবস। অনেকেই এই দুদিন ছুটি নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু হওয়ায় বাড়ি ফিরছেন শিক্ষার্থীরা। এতে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই ভিড় রয়েছে ট্রেন ও বাসে।
এদিকে সদরঘাট লঞ্চ টার্মনালেও ভিড় বাড়ছে। যাত্রী বাড়লে লঞ্চের সংখ্যা বাড়ানো হবে জানায় কর্তৃপক্ষ।
ঈদে ঘরমুখো মানুষের পারাপার নিশ্চিত করতে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে প্রশাসন। সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণের জন্য সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃংখলা বাহিনীর এক হাজার সদস্য মোতায়েন থাকবে। ঈদের তিনদিন আগে থেকে তিনদিন পর পর্যন্ত পচনশীল পণ্য ছাড়া সব ধরনের মালবাহী পরিবহন পারাপার বন্ধ রাখা হবে।
পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ার চারটি ঘাট দিয়ে চলবে ১৫টি ফেরি এবং আলাদা ঘাট দিয়ে চলবে ৩০টি লঞ্চ। আরিচা-কাজিরহাটের দুইটি ঘাট দিয়ে চলবে ৫টি ফেরি এবং আলাদা ঘাট দিয়ে চলবে ১৩টি লঞ্চ ও ৪১টি স্পিডবোট।
আরিচার বিআইডব্লিউটিসির ডিজিএম শাহ মো. খালেদ নেওয়াজ বলেন, ‘যদি ফেরিগুলো এসে সরাসরি লোড আনলোড করতে পারে তাহলে সেখানে গাড়ির সংখ্যা যতোই বৃদ্ধি পাক আমরা আশা করছি, আমাদের সেই সক্ষমতা আছে।’
লঞ্চ ও স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানামা বন্ধে কাজ করবে নৌ পুলিশ। যাত্রীদের সার্বিক নিরাপত্তায় কাজ করবে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর এক হাজার সদস্য। দুইটি কন্ট্রোলরুম থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। থাকবে ৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
মানিকগঞ্জের জেলা প্রশাসক রেহেনা আকতার বলেন, ‘অতিরিক্ত ভাড়া ও অতিরিক্ত যাত্রী যাতে পরিবহন করতে না পারে সে লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় দিক নির্দেশনা দিয়েছি। এ লক্ষ্যে আমাদের ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালিত হবে। আমরা এরই মধ্যে ৫ সদস্যের একটি ভিজিলেন্স টিম করে দিয়েছি।’
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :