হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনাল হস্তান্তরের সময় আরও ৬ মাস পিছিয়েছে। ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে আগামী সেপ্টেম্বরে আনুষ্ঠানিকভাবে তৃতীয় টার্মিনাল বুঝে নেবে সিভিল এভিয়েশন।
শনিবার (৬ এপ্রিল) ঠিকাদার প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশনের চেয়ারম্যান এয়ার ভাইস মার্শাল এম. মফিদুর রহমান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
তিনি বলেন, শাহজালাল বিমানবন্দরের তৃতীয় টার্মিনালের কাজ ৫ শতাংশ এখনও বাকি আছে। তাই ছয় মাস পিছিয়ে আগামী সেপ্টেম্বরে সিভিল এভিয়েশনের কাছে তৃতীয় টার্মিনাল হস্তান্তর করবে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। এতে কোনো ব্যয় বাড়বে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
তৃতীয় টার্মিনালের হস্তান্তরের কার্যক্রম শনিবার (৬ এপ্রিল) সম্পন্ন হওয়ার কথা ছিল। এই অবকাঠামো নির্মাণে ৪ বছরেরও বেশি সময় লেগেছে। সিভিল এভিয়েশনের লক্ষ্য ছিল চুক্তি অনুযায়ী নির্দিষ্ট তারিখেই প্রজেক্ট হস্তান্তর করে নেয়ার। শনিবার এ নিয়ে সিভিল এভিয়েশন দপ্তরে ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান এবং বুয়েট সুপারভিশন টিম নিয়ে এক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। এতে সময় ও ব্যয় বাড়ানোর প্রস্তাব দেয় জাপানি ঠিকাদার প্রতিষ্ঠান মিতসুবিশি।
বৈঠক শেষে সিভিল এভিয়েশন চেয়ারম্যান জানান, কিছু কাজ বাকি থাকায় এপ্রিলেই কিংবা ৬ মাস সময় নিয়ে সেপ্টেম্বরে প্রকল্প হস্তান্তরের সুযোগ দেয়া হবে নির্মাণকারী প্রতিষ্ঠানকে। ঈদের পরেই এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। এ ছাড়া প্রকল্পের ৫ শতাংশ কাজের মধ্যে বিভিন্ন ইন্সটলেশন, ক্যালিব্রেশন ও মেশিন প্রি-টেস্টিংয়ের কাজ বাকী রয়েছে বলে জানান তিনি।
সেপ্টেম্বরে সিভিল এভিয়েশন দায়িত্ব বুঝে নেয়ার পর পুরাতন টার্মিনালের অনেক কার্যক্রম তৃতীয় টার্মিনালে স্থানান্তর কার্যক্রম শুরু হবে। এ বিষয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের (পিপিপি) আওতায় কাজ করা বোর্ড, তৃতীয় টার্মিনাল পরিচালনার সার্বিক বিষয় তুলে ধরে রিপোর্ট করবে সিভিল এভিয়েশনকে। তারপরই জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সঙ্গে পরিচালনার বিষয়ে আরেকটি চুক্তি হবে।
২১ হাজার ৩০০ কোটি টাকা ব্যয়ের তৃতীয় টার্মিনাল প্রকল্পটি ২০১৯ সালের ২৮ ডিসেম্বর শুরু হয়। সরকারের ৫ হাজার কোটি টাকা আর জাইকার অর্থায়নে শুরু হয় প্রকল্পের কার্যক্রম।
নান্দনিক তৃতীয় টার্মিনালে ডাবল এন্ট্রি ব্রিজসহ ১২টি বোর্ডিং গেট শুরুতে চালু হবে। পরবর্তীতে স্থাপন করা হবে আরও ১৪টি বোর্ডিং সেতু।
৫ লাখ ৪২ হাজার বর্গমিটার এলাকাজুড়ে তৃতীয় টার্মিনালে ২ লাখ ৩০ হাজার বর্গমিটারের একটি ফ্লোর স্পেস, ১১৫টি চেক-ইন কাউন্টার, ৬৬টি ডিপার্চার ইমিগ্রেশন ডেস্ক, ৫৯টি আগমন ইমিগ্রেশন ও ৩টি ভিআইপি ইমিগ্রেশন ডেস্ক রয়েছে।
বিশ্বমানের এই টার্মিনালে একসঙ্গে ৩৭টি উড়োজাহাজ পার্ক করে রাখা যাবে। এছাড়া ১৬টি ব্যাগেজ বেল্ট স্থাপন করা হয়েছে। গাড়ি পার্কিংয়ের সুবিধা থাকছে ১ হাজার ৪৪টি।
সেপ্টেম্বরে পুরো নির্মাণ কাজ শেষে অক্টোবরেই তৃতীয় টার্মিনালে যাত্রী সেবা দেয়ার সব প্রস্তুতি নেয়া হচ্ছে বলেও জানিয়েছে বাংলাদেশ সিভিল এভিয়েশন।
একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :