বিশেষ ৩টি দিবস এক সাথে হওয়ায় লম্বা ছুটিতে ঢাকা। ছুটিতে বিশাল সংখ্যক মানুষ ঘরে ফিরায় জনবহুল এই শহর ফাঁকা হয়ে যাচ্ছে। পবিত্র শবে কদর, ঈদুল ফিতর, পহেলা বৈশাখ মিলে ৮-১০দিন ছুটি পাচ্ছে দেশের কর্মজীবী মানুষজন। প্রায় দেড় কোটি মানুষ ঢাকা ছাড়ার কারণে ফাঁকা হচ্ছে রাজধানী। শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় ঈদুল ফিতরের সরকারি ছুটির আগেই ৪ মার্চ বিকেল থেকেই সপরিবারে ঢাকা ছাড়তে শুরু করে বিপুল সংখ্যক মানুষ।
সরেজমিন শহরের বিভিন্ন পয়েন্টে বাস স্টেশন, রেলওয়ে স্টেশন, লঞ্চ টার্মিনালসহ অন্যান্য স্থানে গিয়ে দেখা যায় বিপুল সংখ্যক মানুষের ভিড়। সরকারি ছুটি শুরু হলে ব্যাপক ভিড় এড়ানোর জন্যই অগ্রীম ছুটি নিয়ে বাড়ি ফিরতে শুরু করেছে কর্মজীবী মানুষজন। দেশের মোট জনসখ্যার একটা বিশাল অংশ বাস করে ঢাকায়। উৎসব ও পার্বণে ঢাকায় বসবাস করা মানুষেরা শেকড়ের সন্ধানে ছুটে যায়। নিজ আত্মীয়-পরিজন বাবা -মা, ভাই-বোনসহ সবাই মিলে উৎসব আনন্দ ভাগাভাগি করে। দেখা গেছে, বছরের দুটি উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহায় সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছেড়ে যায়। এসব মানুষের বড় একটি অংশ শহর ছেড়ে নাড়ির টানে বাড়ি যায়। আর ওই দুই উৎসবের মধ্যে ঈদুল ফিতরে সবচেয়ে বেশি মানুষ ঢাকা ছাড়ে।
এবারের ঈদুল ফিতর উদযাপন করতে, প্রিয়জনদের সঙ্গে ঈদ আনন্দ ভাগাভাগি করতে বাড়িমুখী মানুষের ভিড় বাড়ছে বাস ও রেলস্টেশন এবং লঞ্চঘাটে। ফলে ফাঁকা হয়ে পড়ছে রাজধানী ঢাকা। দ্রুত বদলে যাচ্ছে শহরের চিরচেনা ব্যস্তরূপ।
শনিবার সকাল থেকেই রাজধানীর কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনে রয়েছে যাত্রীদের ভিড়। যাত্রীদের সাথে কথা বলে জানা যায়, প্রায় সব ট্রেন সময়মতো ছেড়ে যাচ্ছে। কোন ভোগান্তি, হয়রানির খবর পাওয়া যায়নি। গুলিস্তান, মহাখালী, গাবতলী, সায়েবাদ, যাত্রাবাড়ী, ফকিরাপুল, কলাবাগানসহ অন্যান্য বাস টার্মিনালেও দেখা গেছে রাজধানী ছেড়ে যাওয়া মানুষদের প্রচুর ভিড়। জানা গেছে, বিভিন্ন জায়গায় ভাড়া বাড়ানোর পায়তারা অব্যাহত আছে। তবে কোথাও বড়ে ধরনের ভোগান্তির চিত্র চোখে পড়েনি।
আগামী সোমবার ও মঙ্গলবার সরকারি -বেসরকারি অফিসে শেষ কার্যদিবস। অনেকেই এই দুদিন ছুটি নিয়ে ঢাকা ছাড়ছেন। এছাড়াও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ছুটি শুরু হওয়ায় বাড়ি ফিরছেন শিক্ষার্থীরা। যে কারণে বৃহস্পতিবার দুপুর থেকেই ভিড় রয়েছে ট্রেন ও বাসে। সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালেও ভিড় রয়েছে প্রচুর।
ঘরমুখো মানুষের পারাপার নিশ্চিত করতে মানিকগঞ্জের পাটুরিয়া ও আরিচা ঘাট এলাকায় বিশেষ উদ্যোগ নিয়েছে যথাযথ কর্তৃপক্ষ। সংশ্লিষ্ট একটি সূত্রে প্রকাশ, সার্বিক কার্যক্রম পর্যবেক্ষণ ও যাত্রীদের নিরাপত্তা রক্ষায় জন্য সাতজন ম্যাজিস্ট্রেট ও আইনশৃংখলা বাহিনীর এক হাজার সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। ঈদের তিনদিন আগে থেকে তিনদিন পর পর্যন্ত পচনশীল পণ্য ছাড়া সব ধরনের মালবাহী পরিবহন পারাপার বন্ধ রাখা হবে। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ার চারটি ঘাট দিয়ে চলবে ১৫টি ফেরি এবং আলাদা ঘাট দিয়ে চলবে ৩০টি লঞ্চ। আরিচা-কাজিরহাটের দুইটি ঘাট দিয়ে চলবে ৫টি ফেরি এবং আলাদা ঘাট দিয়ে চলবে ১৩টি লঞ্চ ও ৪১টি স্পিডবোট।
আরিচার বিআইডব্লিউটিসির পক্ষ থেকে জানানো হয়, যদি ফেরিগুলো এসে সরাসরি লোড আনলোড করতে পারে তাহলে সেখানে গাড়ির সংখ্যা যতোই বৃদ্ধি পাক সেটা সামাল দেয়ার সক্ষমতা তাদের রয়েছে। তারা আরও জানায়,লঞ্চ ও স্পিডবোটে অতিরিক্ত যাত্রী উঠানামা বন্ধে কাজ করবে নৌ পুলিশ। দুইটি কন্ট্রোলরুম থেকে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যবেক্ষণ করা হবে। থাকবে ৭টি ভ্রাম্যমাণ আদালত।
একুশে সংবাদ/হ.ক.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :