৩১ দিন পর সোমালিয়ান জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি মিলেছে ‘এমভি আবদুল্লাহ’ জাহাজসহ ২৩ নাবিকের। বর্তমানে তারা সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল হারমিয়া বন্দরের পথে রওনা দিয়েছে। জাহাজটি আবারও জলদস্যুদের কবলে পড়ার আশঙ্কায় এর চারপাশে একাধিক আন্তর্জাতিক যুদ্ধজাহাজ রয়েছে বলে জানা গেছে।
এদিকে জলদস্যুদের হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার পর এমভি আবদুল্লাহর ভেতরের বেশ কয়েকটি ছবি দেশের একটি গণমাধ্যমের হাতে এসেছে। এসব ছবি দেখেই বোঝা যায় জাহাজের ভেতরে জিম্মি থাকা নাবিকদের জীবন কতটা দুর্বিষহ ছিল।
গত ১২ মার্চ বিকেলে সোমালিয়া উপকূল থেকে অন্তত সাড়ে ৫০০ নটিক্যাল মাইল দূরে এসে এমভি আবদুল্লাহকে ছিনতাই করেছিল জলদস্যুরা। এ সময় জলদস্যুদের কবল থেকে রক্ষা পেতে স্পেন-ইতালিসহ অন্তত চারটি দেশের নৌবাহিনীর কাছ জরুরি বার্তা দিয়েছিলেন জাহাজের ক্যাপ্টেন। কিন্তু তাদের কাছ থেকে কোনো সহযোগিতা মেলেনি। পরবর্তীতে জাহাজটি সোমালিয়া উপকূলে পৌঁছার পর আক্রমণ করে জিম্মি ২৩ নাবিককে মুক্ত করে আনার পরিকল্পনা করলেও তাতে সাড়া দেয়নি বাংলাদেশ সরকার এবং জাহাজ মালিক প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম।
সবশেষ ১৩ এপ্রিল বিকেলে জলদস্যুদের কাছে বিমানে করে পৌঁছানো হয় মুক্তিপণের ডলার ভর্তি তিনটি ব্যাগ। অর্থ পেয়েই মধ্যরাতে নাবিকসহ জাহাজটি মুক্ত করে দেন জলদস্যুরা।
জানা গেছে, সোমালীয় জলদস্যুদের কবল থেকে মুক্ত হয়ে উপকূল ত্যাগ করে ভারত মহাসাগর অংশে পৌঁছাতেই এমভি আবদুল্লাহ জাহাজের আশপাশে অবস্থান নেয় অন্তত চারটি দেশের নৌবাহিনীর কয়েকটি বোট। এরপর এসব দেশের নৌসদস্যরা জাহাজটিতে উঠে আসেন। এ সময় তারা নিজ নিজ দেশের পতাকা নিয়ে বাংলাদেশের নাবিকদের সঙ্গে ছবিও তোলেন। অবশ্য জাহাজের নাবিকরা আগে থেকে বাংলাদেশের পতাকা নিয়ে উল্লাস করছিলেন।
মুক্তিপণ দিয়ে ফেরার পথে ভারত মহাসাগরের ঝুঁকিপূর্ণ অংশ অতিক্রমের সময় সোমালীয় জলদস্যুদের অন্য কোনো গ্রুপ হামলা চালানোর শঙ্কায় নৌসদস্যরা এ নিরাপত্তামূলক ব্যবস্থা নিয়েছেন বলে জানান মেরিন বিশেষজ্ঞরা।
এমভি আব্দুল্লাহর মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান কেএসআরএম জানায়, এই নিরাপত্তার মধ্যেই আগামী ২২ এপ্রিল (সোমবার) দুবাইয়ের আল হারমিয়া বন্দরে পৌঁছাবে জাহাজটি। জাহাজে থাকা ক্রুরা সবার মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ আছেন। নাবিকদের জন্য জাহাজে পর্যাপ্ত খাবারের ব্যবস্থা রয়েছে।
কেএসআরএমের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মেহেরুল করিম বলেন, আমেরিকার একটা কন্ডিশন আছে; একটি ডলার নিতে হলেও তাদের সংস্থার অনুমতি নিতে হয়। ওটা আমাদেরও নিতে হয়েছে। এ ধরনের ইন্টারন্যাশনাল কাজে তাদের অনেক অ্যাসোসিয়েটের সমন্বয় করতে হয়।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :