নিষিদ্ধের ২২ বছর পরও সবার হাতে হাতে ঘুরছে পলিথিন। নির্বিচারে ছড়াচ্ছে নদীনালা, খালবিল থেকে শুরু করে ফসলের ক্ষেত পর্যন্ত। অথচ পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগ পড়ে আছে অবহেলায়। এই ব্যাগের উদ্ভাবকের অভিযোগ, নীতিমালা নেই, বাজারজাত করার চেষ্টা নেই কর্তৃপক্ষের। আর পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব বলছেন, উৎপাদন প্রক্রিয়া ও খরচ কোনো কিছুই চূড়ান্ত হয়নি। এমন দোটানার মধ্যে রয়েছে পরিবেশবান্ধব ব্যাগটি। এখন সবার অপেক্ষা ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দের।
২০১৬ সালে পাটের সূক্ষ্ম সেলুলোজ দিয়ে ব্যাগ উদ্ভাবন করেন বিজ্ঞানী ড. মোবারক আহমদ খান। নাম দেয়া হয় সোনালি ব্যাগ। দেখতে সাধারণ পলিথিন ব্যাগের মত হলেও এটি পচনশীল। সম্ভাবনা বিবেচনায় ২০১৭ সালে ডেমরার লতিফ বাওয়ানী সরকারি জুট মিলে নেয়া হয় একটি পাইলট প্রকল্প। বর্তমানে দিনে ৩০ থেকে ৪০ কেজি সোনালি ব্যাগ উৎপাদন হচ্ছে। প্রতি কেজির দাম এক হাজার টাকা। এক একটি ব্যাগের দাম পড়ে প্রায় ১০ টাকা। কিন্তু ৮ বছরেও এই ব্যাগ বাজারে আসেনি। নীতিমালা না থাকাই এর কারণ বলছেন উদ্ভাবক। তার দাবি, বিপণনের দায়িত্ব নিতে হবে সরকারকে।
সোনালি ব্যাগের উদ্ভাবক ড. মোবারক আহমদ খান বলেন, ‘সরকারের সচেতনতা বাড়াতে হবে। সরকারের একটি নির্দিষ্ট নীতিমালা করতে হবে সোনালি ব্যাগ নিয়ে এবং এটার নতুন ম্যানেজমেন্ট থাকতে হবে। নিউ ফান্ড ক্রিয়েট করতে হবে। তাহলেই সোনালি ব্যাগ বাজারে দ্রুততার সাথে আসবে। কারো মাধ্যমে অল্প কিছু টাকা দিয়ে কাজটা করলে আমরা যেটা চাচ্ছি এটা কখনোই ওই পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারব না।’
তিনি আরও বলেন, এই ব্যাগ পলিথিন ব্যাগের চেয়ে দেড়গুণ বেশি শক্তিশালী। এটি পরিবেশবান্ধব। এই ব্যাগ পচনশীল। এটিতে কোনো ধরনের প্লাস্টিক নেই। তাই পরিবেশের কোনো ক্ষতি করে না। এটি পুনরায় ব্যবহার করা যায়, তবে পলিথিনে তা সম্ভব হয় না।
মন্ত্রণালয় বলছে, সোনালি ব্যাগের উৎপাদন প্রক্রিয়া, খরচ সবকিছু এখনও অস্পষ্ট। এজন্য বেসরকারি বিনিয়োগ আসছে না। সচিব জানান, সোনালি ব্যাগ উৎপাদনে জুলাইতে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হচ্ছে।
বস্ত্র ও পাট মন্ত্রণালয়ের সচিব মো. আব্দুর রউফ বলেন, ‘আপনারা আশাবাদি থাকতে পারেন। আমি এখন পর্যন্ত যে পর্যায়ে নিয়ে এসেছি, এটা তো পাস করা প্রজেক্ট, কাজ শুরু হলেই একটা ভালো কিছু দেখা যাবে। এটুকু আপনাকে বলতে পারি। আজকে পর্যন্ত, আমরা সঠিক পথেই আছি। আমি এ ব্যাপারে খুবই ইতিবাচক।’
তবে পাটের তৈরি সোনালি ব্যাগ ব্যবসায়িকভাবে সফল করতে দাম সহনীয় রাখার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের।
একুশে সংবাদ/জ.ন.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :