প্রচণ্ড তাপপ্রবাহে জনজীবনে নাভিশ্বাস হয়ে উঠেছে। কয়েকদিনের তীব্র গরমে বিপাকে পড়েছে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষ। মানুষের পাশাপাশি হাঁসফাঁস প্রাণিকুলেরও। তাই তীব্র গরম থেকে রক্ষা পেতে জয়পুরহাটের কালাইয়ে বৃষ্টির জন্য ইসতিসকার নামাজ আদায় করেছে মুসল্লিরা। নামাজ শেষে বৃষ্টি চেয়ে বিশেষ মোনাজাত করা হয়।
২৪ এপ্রিল বুধবার সকাল সাড়ে সাতটায় কালাই আহলে হাদীস ঈদগাহ মাঠে খোলা আকাশের নিচে এ নামাজের আয়োজন করে কালাইয়ের সর্বস্তরের জনগণ। নামাজ ও দোয়া পরিচালনা করেন হাতিয়র কামিল মাদ্রাসার আরবি প্রভাষক ও কালাই আহলে হাদীস কমপ্লেক্স জাম`য়ে মাসজিদের খতিব মাওলানা মো. সলিমুল্লাহ রেজা।
কয়েক দিন ধরে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যাওয়ার কারণে জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। তীব্র দাবদাহে ব্যাহত হচ্ছে মানুষের স্বাভাবিক কর্মচঞ্চলতা। এক পশলা বৃষ্টির জন্য হাহাকার করছে দেশের মানুষ। এমন সংকটময় মুহূর্তে বৃষ্টির জন্য বিশেষ নামাজ পড়ার নির্দেশ দেয় ইসলাম।
নিজেদের গুনাহের জন্য ক্ষমা চেয়ে আল্লাহর কাছে কায়মনোবাক্যে তাঁর রহমতের প্রার্থনা করার বিধান হাদিসে এসেছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ তাআলা বলেন,‘তোমরা তোমাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করো। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমা করবেন। তোমাদের জন্য মুষলধারে বৃষ্টি বর্ষণ করবেন।’
(সুরা নুহ: ১০-১১)
আল্লাহ তাআলার ইচ্ছার বাইরে কিছুই হয় না। রোদ-বৃষ্টিও তাঁরই রহমত ও মহান কুদরতের প্রকাশ। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তিনিই আল্লাহ, যিনি বাতাস পাঠান, এরপর তা মেঘমালাকে সঞ্চালিত করে। এরপর তিনি মেঘমালাকে যেভাবে ইচ্ছা আকাশে ছড়িয়ে দেন এবং স্তরে স্তরে রাখেন। এরপর তুমি দেখতে পাও যে, তা থেকে বৃষ্টি নেমে আসে। তিনি তাঁর বান্দাদের মধ্যে যাদের ইচ্ছা তা (বৃষ্টি) পৌঁছান; তখন তারা আনন্দিত হয়।’ (সুরা রুম: ৩৮)।
স্থানীয় কৃষক লুৎফর রহমান,আব্দুল মোমিন, আব্দুস ছাত্তার, শহিদুল ইসলাম, আমজাদ আলী, আব্দুল গফুরসহ অনেকে জানান, দীর্ঘদিন ধরে বৃষ্টি না হওয়ায় কৃষকের বিভিন্ন ফসলের ক্ষেত নষ্ট হচ্ছে। সেই সাথে কষ্টে আছে গাছপালাসহ বিভিন্ন প্রাণীকুল। এজন্যই বৃষ্টির জন্য তারা পুরনো কাপড় ও গামছা নিয়ে খোলা মাঠে এসে নামাজ পড়ছে।
মাওলানা মো. সলিমুল্লাহ রেজা বলেন, হাদিসে এসেছে যখন এমন উত্তপ্ত আবহাওয়া হতো রাসুলুল্লাহ (সা.) ইসতিসকার নামাজ আদায় করতেন। কালাইয়ে গত কয়েকদিনের তাপদাহে মানুষ অতিষ্ট। প্রাণীরা মরণাপন্ন হয়েছে। এই জন্য আমরা সুন্নতের আমল হিসেবে সালাতুল ইসতিসকার নামাজ আদায় করলাম। যেন আল্লাহ তা’আলা এই উসিলায় দেশের এই আবহাওয়াকে পরিবর্তন করে সুশীতল করে দেয়। আমরা আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করলাম, তওবা করলাম ও বৃষ্টির জন্য দোয়া করলাম।
একুশে সংবাদ/বিএইচ
আপনার মতামত লিখুন :