দেশের বেশির ভাগ এলাকার ওপর দিয়ে বয়ে যাচ্ছে তীব্র তাপপ্রবাহ। প্রচণ্ড গরমে অতিষ্ঠ জনজীবন। এই তাপপ্রবাহের উচ্চ ঝুঁকিতে রয়েছেন দেশের ২১ জেলার বাসিন্দারা। আবহাওয়া অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্য বিশ্লেষণ করে এই চিত্র তুলে ধরেছে বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটি।
সরকারের কাছে দেওয়া বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, তাপপ্রবাহের কারণে সারা দেশের অন্তত ৭০ শতাংশ মানুষ সবচেয়ে কষ্ট ও বিপদে আছেন। এর বড় একটি অংশ গরমের কারণে দৈনন্দিন কাজ করতে পারছে না। অনেকে আবার অসুস্থ হয়ে পড়ছেন।
সংস্থাটি দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা, ত্রাণ মন্ত্রণালয় ও সরকারের বিভিন্ন পর্যায়ে চলমান তাপপ্রবাহের চিত্র তুলে ধরেছে এবং সারা দেশের তাপপ্রবাহ নিয়ে একটি মানচিত্র তৈরি করেছে।
রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মানচিত্র অনুযায়ী, সবচেয়ে বেশি বিপদে থাকা ২১ জেলা হচ্ছে- সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, নড়াইল, ঝিনাইদহ, মাগুরা, রাজবাড়ী, চুয়াডাঙ্গা, কুষ্টিয়া, মেহেরপুর, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, নওগাঁ, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, নাটোর, রাজশাহী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, মানিকগঞ্জ ও বাগেরহাট।
মানচিত্রে দেখা যায়, তাপপ্রবাহের কারণে সবচেয়ে ঝুঁকিতে আছে ২১ জেলা। আর ১৪টি জেলা ২১ জেলার চেয়ে কিছুটা কম ঝুঁকিতে আছে। বাকি জেলাগুলো কিছুটা কম গরমের ঝুঁকিতে রয়েছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আগের দিনগুলোর তুলনায় মঙ্গলবার (৩০ এপ্রিল) ও বুধবার (১ মে) গরমের কষ্ট আরও ভয়াবহ রূপ নেবে। কারণ, বঙ্গোপসাগর হয়ে বাংলাদেশের ওপর বিপুল পরিমাণে মেঘমালা আসতে শুরু করেছে। এতে বাতাসে আর্দ্রতা বেড়ে গেছে। একদিকে রেকর্ডভাঙা তাপমাত্রা, অন্যদিকে অস্বাভাবিক উষ্ণতা মিলে আগামী কয়েক দিনের আবহাওয়া পরিস্থিতি আরও অসহনীয় হয়ে উঠতে পারে।
আবহাওয়াবিদেরা বলছেন, আগামী ২ মে দেশের বিভিন্ন স্থানে বৃষ্টি শুরু হতে পারে। তার আগপর্যন্ত তাপমাত্রা কমছে না। এ সময়ে বাতাসের আর্দ্রতা বেড়ে ওই ৩৬ থেকে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ৪০ থেকে ৪৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রার উষ্ণতা অনুভব করবে মানুষ।
গত ২৯ দিনে সারা দেশের গড় তাপমাত্রা এই প্রথম প্রায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছুঁয়েছে। আবহাওয়া অধিদপ্তরের কাছে বাংলাদেশ ভূখণ্ডের ৭৬ বছরের আবহাওয়ার তথ্য রয়েছে। সে তথ্য অনুযায়ী, বাংলাদেশের ইতিহাসে টানা ২৯ দিন দেশের বড় অংশজুড়ে তাপপ্রবাহ ছিল না। এবারই প্রথম অতি উষ্ণতার কবলে পড়ল দেশের বড় অংশ।
একুশে সংবাদ/আ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :