অবশেষে ধনীর আয়ে কর বাড়াচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আসন্ন বাজেটে ব্যক্তি আয়করের সর্বোচ্চ হার ৫ শতাংশ বাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করছে সংস্থাটি। কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, কারো আয় বছরে সাড়ে ৩৬ লাখের বেশি হলে তাকে দিতে হবে ৩০ শতাংশ আয়কর। এমন সিদ্ধান্তে মিলেছে প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদন।
ব্যক্তি আয়করের সর্বোচ্চ হার ৩০ শতাংশ ছিল দীর্ঘদিন। করোনার সময় তা কমিয়ে ২৫ শতাংশ করা হয়। দাতা সংস্থা আইএমএফের রাজস্ব বাড়ানোর চাপ, অভ্যন্তরীণ সমালোচনাসহ নানা কারণে সর্বোচ্চ হার আগের অবস্থায় নিচ্ছে সংস্থাটি।
বর্তমানে সাড়ে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত আয়ে কর দিতে হয় না। পরের এক লাখে কর ৫ শতাংশ। এর পরের ৩ লাখে দশ শতাংশ, তারপরের ৪ লাখে ১৫ শতাংশ এবং পরের ৫ লাখে ২০ শতাংশ কর। এর বেশি আয় হলে কর ২৫ শতাংশ। এনবিআরের সিদ্ধান্ত, আসন্ন বাজেটে সাড়ে ১৬ থেকে ৩৬ লাখ টাকা আয়ে কর হবে ২৫ শতাংশ। তার বেশি আয়ে কর হবে ৩০ শতাংশ।
ঢাকা চেম্বারের সাবেক সভাপতি রিজওয়ান রহমান বলেন, ‘এখন আমাদের ৫টি স্ল্যাব আছে। আপনি (এনবিআর) সেটাকে ১০টা স্ল্যাব করুন দরকার হলে। কিন্তু আপনি ইনকাম গ্যাপগুলোকে আরেকটু ওয়াইডেন (বিস্তৃত) করেন। আমি মনে করি ৫ লাখ কেন, ১০ লাখ টাকা করমুক্ত সীমা হওয়া উচিত। কারণ যারা ১০ লাখ টাকা যারা আয় করছে তাদের থেকে আপনার যে কালেকশন হয়, তারচেয়ে ২৫ শতাংশের ওখানে আপনার হিউজ কালেকশন হচ্ছে। আপনি সেখানে যদি এক পারসেন্ট বা দুই পারসেন্ট বাড়ান, এখানে ১০ লাখ টাকা থেকে যা পাবেন তাতে আপনার কিছুই আসবে বা যাবে না।’
দেশে আয়, ভোগ ও সম্পদ বৈষম্য এখন চরমে। অন্যদিকে সরকারের কোষাগারেও টানটান। এসব বিষয় বিবেচনায় কর হার বাড়াচ্ছে এনবিআর। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, উচ্চবিত্তের কর হার বাড়ালে আদায় বাড়বে। তবে সঠিক কর আদায়ে ফাঁকি ঠেকানোর ব্যবস্থা নিতে হবে। অটোমেশনের পাশাপাশি আয়ের সাথে ব্যয় মিলিয়ে দেখতে হবে।
গবেষণা প্রতিষ্ঠান সিপিডির সম্মানীয় ফেলো মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘এনফোর্সমেন্ট। আমার যদি ভয় থাকে যে, আমি যদি না দেই তাহলে আমার পানিসমেন্টটা এরকম হবে। যেটা নাকি আমি যেটা ফাঁকি দিলাম তারচেয়ে বহুগুন হবে। কেবল মাত্র তখনই আমার মধ্যে ভয় আসবে।’
গবেষকদের হিসাবে, ২০২০-২১ অর্থবছরে ১৬ লাখ টাকার বেশি আয় দেখিয়েছে এমন উচ্চবিত্ত করদাতা প্রায় ৯০ হাজার। কর দেন প্রায় দুই হাজার কোটি টাকা। যা মোট ব্যক্তি আয়করের ৩০ শতাংশ।
একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :