দেশে ভ্যাকসিন সেন্টার তৈরির জন্য অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের সহায়তা চেয়েছেন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী ডা. সামন্ত লাল সেন। গত মঙ্গলবার করোনা মহামারি তীব্রতার সময়ে অ্যাস্ট্রাজেনেকার ভ্যাকসিন অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের যেখানে তৈরি হয়েছিলো, সেখানে ঘুরে দেখে প্রতিষ্ঠানটির কাছে এই সহযোগিতা প্রত্যাশা করেন তিনি।
এ সময় স্বাস্থ্যমন্ত্রী অক্সফোর্ড ভ্যাকসিন গ্রুপের পরিচালক, অধ্যাপক স্যার অ্যান্ড্রু পোলার্ড এফ মেডস্কির সাথে দেখা করেন এবং দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনের জন্য বাংলাদেশে একটি জাতীয় ভ্যাকসিন প্রকল্প তৈরিতে সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার সুযোগ নিয়ে আলোচনা করেন।
সামন্ত লাল সেন সবার জন্য উচ্চমানের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অধীনে বাংলাদেশ সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেন। তিনি উল্লেখ করেন, তার সরকারের লক্ষ্য বাংলাদেশে ভ্যাকসিন তৈরির জন্য একটি ভ্যাকসিন সেন্টার প্রতিষ্ঠা করা।
ভ্যাকসিন সেন্টার প্রতিষ্ঠার জন্য সামন্ত লালের উত্থাপিত বিষয়গুলো স্যার অ্যান্ড্রু পোলার্ড মনোযোগ দিয়ে শোনেন এবং সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন।
এরপর স্বাস্থ্যমন্ত্রী অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ তৈরি ইউনিট ঘুরে দেখেন। সেখানে তিনি সিনিয়র গবেষক এবং উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ করেন। তারা বাংলাদেশে বৃহৎ আকারে টিকা উৎপাদনের জন্য একটি গবেষণাগার স্থাপনের সম্ভাবনা নিয়ে কথা বলেন। পাশাপাশি বিজ্ঞানী, চিকিৎসক ও স্বাস্থ্য পেশায় জড়িত অন্যদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে আলোচনা করেন।
শেষে, মন্ত্রী থাইল্যান্ডের রাজার আমন্ত্রণে ট্রপিকাল মেডিসিনের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিত্ব এবং থাইল্যান্ডের সেন্টার ফর ট্রপিক্যাল মেডিসিনের প্রতিষ্ঠাতা, পরিচালক অধ্যাপক স্যার ডেভিড ওয়ারেলের সাথে দেখা করেন। তারা সেখানে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) মোকাবিলায় এসেনসিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের (ইডিসিএল) অধীনে বাংলাদেশে অ্যান্টিভেনম (বিষ প্রতিষেধক) উৎপাদনের সম্ভাবনা নিয়ে আলোচনা করেন। অক্সফোর্ডে অধ্যয়নরত বাংলাদেশের তরুণ গবেষকরাও বৈঠকে ছিলেন।
সফর ও বৈঠকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশের হাইকমিশনার সাইদা মুনা তাসনীমও ছিলেন।
দেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ব্যাপক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তথ্য মেলেনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রীদেশে অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকার ব্যাপক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার তথ্য মেলেনি: স্বাস্থ্যমন্ত্রী
স্বাস্থ্যমন্ত্রী ডা. সেন বর্তমানে যুক্তরাজ্য সরকার এবং রয়্যাল সোসাইটি দ্বারা আয়োজিত ‘এন্টিমাইক্রোবিয়াল রেসিস্টেনন্টের প্রতি আন্তর্জাতিক প্রতিক্রিয়া’ সম্মেলনে যোগদানের জন্য একটি সরকারি সফরে যুক্তরাজ্যে রয়েছেন।
এদিকে বিবিসির খবরে বলা হয়েছে, বিশ্বজুড়ে তিনশ’ কোটির বেশি ডোজ দেয়ার পরে, অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার কোভিড ভ্যাকসিন প্রত্যাহার করে নেয়া হচ্ছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকা বলেছে যে, এই টিকার জন্য তারা ‘দারুণভাবে গর্বিত’, কিন্তু বাণিজ্যিক কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
তারা বলছে, করোনভাইরাসের নতুন নতুন ভ্যারিয়েন্ট বেড়ে যাওয়ার অর্থ এটিই যে চাহিদা এখন আরও আধুনিক ভ্যাকসিনগুলোর দিকে স্থানান্তরিত হয়েছে।
অ্যাস্ট্রাজেনেকার টিকা মহামারির সময় লক্ষ লক্ষ জীবন বাঁচিয়েছে বলে ধারণা করা হয়, তবে এটি বিরল, এবং কোনো ক্ষেত্রে প্রাণঘাতী, রক্ত জমাট বাঁধার কারণও হয়েছিল।
একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :