সড়ক দুর্ঘটনায় মাকে হারিয়ে কাকতালীয়ভাবে বেঁচে যাওয়া শিশু জায়েদ হাসানকে দত্তক দেয়া হচ্ছে। শিশু কল্যাণ বোর্ডের সিদ্ধান্তে দত্তক দেয়া হবে। প্রথম দিকে মায়ের জন্য অনবরত কান্না করলেও এখন খানিকটা থেমেছে।
মায়ের মৃত্যুর মৃত্যুর দুইদিন পর শিশুপুত্রের পরিচয় মিললেও সেই মামার পরিবারে ফিরছে না দেড় বছর বয়সী জায়েদ।
নিহত মা জায়েদার ভাই রবিন প্রথমে শিশুটিকে ভরণ পোষনের দায়িত্ব নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে নিজের পরিবারের অবস্থার কথা বিবেচনা করে দায়িত্ব ছেড়ে দেন জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের কাছে। পরে জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ড শিশুটিকে দত্তক দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করে। আগ্রহী দম্পতির কাছ থেকে দরখাস্ত আহ্বান করার পর এখন পর্যন্ত বেশ কিছু জমা পড়েছে।
শিশু কল্যাণ বোর্ডের সদস্য সচিব সমাজসেবা অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল কাইয়ুম জানান, নিহত মা জায়েদার ভাই রবিন প্রথমে শিশুটিকে ভরণ পোষণের দায়িত্ব নেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করলেও পরবর্তীতে নিজের পরিবারের অবস্থার কথা বিবেচনা করে দায়িত্ব ছেড়ে দেন জেলা শিশু কল্যাণ বোর্ডের কাছে। এ বিষয়ে রবিন বোর্ডের কাছে একটি অনপত্তিপত্র দেন। এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজন দম্পতি শিশুটিকে নেয়ার জন্য আবেদন করেছেন। রোববার (১৯ মে) বোর্ডের সভা রয়েছে। সভার আগ পর্যন্ত আবেদন গ্রহণ করা হবে। সব আবেদন বোর্ডে উত্থাপন করা হবে। তাদের মধ্যে যাচাই বাছাই করে এক পরিবারের কাছে শিশুটিকে হস্তান্তর করা হবে। আগামী (১৯ মে) শিশু কল্যাণ বোর্ডের সভা হওয়ার কথা রয়েছে।’
শিশুর মামা রবিন মিয়া বলেন, ‘আমি একজন গরিব মানুষ। আমার আরও তিনটি সন্তান রয়েছে। একটি পিকআপ চালক হিসেবে সামান্য আয়ে বাবা-মা স্ত্রী সন্তান নিয়ে চলা কষ্টের। তাই আমি ভাগিনার জীবনটা নষ্ট করতে চাই না। একজন ভালো মানুষের ঘরে গিয়ে যদি মানুষের মতো মানুষ হয় তাহলে আমি শান্তি পাব।’
গত ১০ মে রাত আনুমানিক তিনটার দিকে স্কয়ার মাস্টার বাড়ি এলাকায় ওই শিশু ও তার মা সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হন। তবে কীভাবে সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে, তা এখনও জানা যায়নি। পরে এক নারী ও তিন পুরুষ ওই শিশু ও তার মাকে আহত অবস্থায় উদ্ধার করে ভালুকা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে এলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদেরকে ময়মনসিংহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায়। চিকিৎসাধীন অবস্থায় পরদিন সন্ধ্যায় ১০ নং ওয়ার্ডে মা মারা যান। আহত শিশুটি মাথায় আঘাত নিয়ে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :