সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনারকে হত্যার পরিকল্পনা দুই থেকে তিন মাস আগে থেকে হয় বলে জানিয়েছেন ডিএমপির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার (গোয়েন্দা) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ। তিনি বলেন, ঢাকায় পুলিশের নজরদারির কারণে হত্যার স্থান হিসেবে বেছে নেওয়া হয় কলকাতাকে।
বৃহস্পতিবার (২৩ মে) বিকেল ৩টার দিকে মিন্টো রোডের ডিবি কার্যালয়ে সাংবাদিকদের এসব তথ্য জানান তিনি।
ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, হত্যাকারীরা এমনভাবে লাশ গুমের চেষ্টা করেছে যাতে কোনো হদিস না মেলে। লাশ গুমের জন্য হাড্ডি থেকে মাংস আলাদা করে পৃথক পৃথক ট্রলিতে করে বিভিন্ন জায়গায় পাঠিয়ে দেয়া হয়। মাংস নিয়ে যাওয়ার সময় যাতে কেউ আটকালেও বুঝতে না পারে, সে জন্য মাংসের সঙ্গে মসলা মিশিয়ে খাবার উপযোগী মাংসের মতো বানানো হয়।
এ সময় সাংবাদিকরা মরদেহ উদ্ধারের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, মরদেহ উদ্ধারের কাজ চলছে। ভারতীয় পুলিশ গাড়ির চালককে নিয়ে তদন্ত কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। পুরোপুরি না পেলেও মরদেহের অংশ বিশেষ পাওয়া যাবে বলে আশ্বস্ত করেন তিনি।
ডিবি কর্মকর্তা হারুন বলেন, ফয়সাল নামে এক ব্যক্তি এমপি আনারকে ১৩ মে দুপুরে সাদা গাড়িতে রিসিভ করে। পরে মূল হত্যাকাণ্ড সংগঠিতকারী আমানুল্লাহ ওরফে শিমুল ভুইয়া ও ফয়সালসহ আনার ওই বাসায় যান। পরে মোস্তাফিজ নামে আরও একজন ওই ফ্ল্যাটে প্রবেশ করে। জিহাদ ও সিয়াম নামে হত্যাকণ্ডে জড়িত আরও দুই জন সেখানে ছিল। দুপুর ২টা ৫১ মিনিটে এমপি আনার ওই বাসায় যান। প্রবেশের আধাঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ড সংগঠিত হয়।
হত্যাকারীরা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে শুরু থেকেই বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার চেষ্টা করছিল জানিয়ে ডিবি কর্মকর্তা বলেন, ঘটনার পর একজন বাসা থেকে বের হয়ে আসে। বিষয়টিকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে সে এমপি আনারের ফোন ব্যবহার করে ফোন ও মেসেজ করে।
হত্যাকাণ্ড বাস্তবায়নকারী আমানুল্লাহ ছদ্মনাম, তার নাম শিমুল ভূঁইয়া। তিনি পূর্ববাংলা কমিউনিস্ট পার্টির নেতা। বর্তমানে আমানুল্লাহ ও পরিকল্পনাকারী শাহিনের গার্লফ্রেন্ড শিলাস্তি রহমান ডিবির হাতে আটক রয়েছে। তাদের থেকেই হত্যাকাণ্ডের পুরো ঘটনা জানা গিয়েছে বলে জানান হারুন অর রশীদ।
ডিবির এই কর্মকর্তা দাবি করেন, প্রথমে বাংলাদেশে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়েছিল। তবে ডিবি পুলিশের তৎপরতার কারণে ঢাকায় হত্যাকাণ্ড ঘটাতে সাহস করেনি তারা। এ কারণে ভারতে তাকে হত্যার পরিকল্পনা হয়।
একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :