স্বর্ণ চোরাচালানের আন্তর্দেশীয় চক্রের দ্বন্দ্বের জেরে পরিকল্পিতভাবে আনোয়ারুলকে ভারতে নিয়ে হত্যা করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন তদন্ত-সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো। এর মূল পরিকল্পনাকারী হিসেবে মো. আক্তারুজ্জামান শাহিন নামের এক ব্যক্তিকে চিহ্নিত করা হয়েছে বলে জানা গেছে। কলকাতার নিউ টাউনে যে ফ্ল্যাটে সংসদ সদস্যকে হত্যা করা হয়েছে, সেটি এই আক্তারুজ্জামানের ভাড়া করা। তিনি ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. সহিদুজ্জামানের ছোট ভাই।
আক্তারুজ্জামানকে গ্রেপ্তারের জন্য পুলিশ খুঁজছে। তবে সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানিয়েছে, তিনি গত সোমবার ঢাকা থেকে একটি ফ্লাইটে দিল্লি হয়ে কাঠমান্ডু চলে গেছে। আবার অনেকে মনে করছেন শাহীন ইতিমধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে চলে গেছে।
শাহীনের বিষয়ে ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর থানার ওসি সৈয়দ আল মামুন বলেন, আপনার মতো আমিও শুনেছি যে মেয়র সাহেবের ভাই শাহীন মিয়ার পুরো নাম আখতারুজ্জামান। তবে আমাদের কাছে তার বিরুদ্ধে আগের কোনো অভিযোগ নেই বা কোনো ডকুমেন্ট নেই।
শাহীনের বড়ভাই কোটচাঁদপুরের মেয়র সহিদুজ্জামান বলেন, ওর পুরো নাম আখতারুজ্জামান। ও যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক। ওর পরিবার সেখানে থাকে। ও নিজেও সেখানে থাকে। এক সপ্তাহ আগে ও বাড়ি এসেছিল। বাড়ি থেকে আক্তারুজ্জামান কোথায় গেছেন জানতে চাইলে মেয়র বলেন, সেটা আমি জানি না। তিনি ভারতে গেছেন কী না জানতে চাইলে মেয়র বলেন, যেতে পারে।
কলকাতায় আখতারুজ্জামানের কোনো ফ্ল্যাট ভাড়া নেওয়া আছে কি না প্রশ্ন করলে তার ভাই সহিদুজ্জামান বলেন, ‘ঠিক ভাড়া না, পরিচিত একজনের ফ্ল্যাট ও মাঝে মাঝে গিয়ে থাকত। তবে সেই ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়েছিলেন কিনা আমার জানা নেই।’
আনোয়ারুল আজিম তিনবারের সংসদ-সদস্য। তিনি আওয়ামী লীগ প্রার্থী হিসাবে ২০১৪, ২০১৮ ও ২০২৪ সালে ঝিনাইদহ-৪ সংসদীয় আসন থেকে জয়লাভ করেন। পেশায় ব্যবসায়ী আনোয়ারুল কালীগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ১২ মে এমপি আনোয়ারুল আজীম আনার কলকাতায় যান। এর পরের দিন ১৩ মে তাকে খুনকরা হয়। ১৪ মে ওই ভাড়া গাড়িতে করে প্রথম পর্যায়ে সংসদের দেহাংশ ফ্ল্যাট থেকে বের করা হয় একটি সুটকেসের মধ্যে নিয়ে যাওয়া হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে গাড়ির চালক জানিয়েছে, ১৪ তারিখ এক মহিলা ও দুই ব্যক্তিকে সুটকেসসহ এক্সেস মলের সামনে নামায়। অন্যদিকে সিআইডি সিসিভিটি ফুটেজ দেখে জানতে পেরেছে এক্সেস মলে নামানোর আগে নজরুল তীর্থর কাছে গাড়িটি ১৫ মিনিট দাঁড়িয়ে ছিল। সেই সময় দেহাংশ কোথায় ফেলা হবে সেই নিয়েই মিটিং হয় গাড়ির মধ্যে বলে জানতে পেরেছে সিআইডি কর্মকর্তারা। এরপর তাদের এক্সেস মলের সামনে নামিয়ে দেয় চালক। ফলে সিআইডি মনে করে চালক অনেক কিছুই জানে যা সে বলছে না। তদন্তের স্বার্থে ওই চালককে আটক করেছে পুলিশ।
একুশে সংবাদ/ই.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :