বাংলাদেশের উপকূলের দিকে দ্রুত বেগে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় রেমাল। এ অবস্থায় ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় সভা করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান। ঘূর্ণিঝড় ‘রেমালের’ প্রভাব মোকাবিলায় প্রয়োজনে উপকূল এলাকার কারাগারগুলো থেকে কয়েদিদের সরিয়ে নিতে বলা হয়েছে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
রোববার (২৬ মে) সচিবালয়ে ঘূর্ণিঝড় রেমাল পরবর্তী করনীয় নিয়ে বৈঠক শেষে ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান তিনি।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, আজ (রোববার) রাত ৯টা থেকে রাত ১২টার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় ‘রেমাল’ আঘাত হানবে। আমাদের প্রতিটি নিরাপত্তা বাহিনী কাজ করছে। কোস্টগার্ড তিনদিন ধরে উপকূলের ৫টি স্থানে মাইকিং করছে। শুধু আঘাত না, যে এলাকায় অবস্থান করবে সেখানে ধ্বংসযজ্ঞ চালাতে পারে। আশঙ্কা করা হচ্ছে প্রচুর বৃষ্টিপাত হবে, সেজন্য ভূমি ধস থেকেও সতর্ক থাকার পরামর্শ দেয়া হয়েছে।
তিনি বলেন, একই সঙ্গে সার্চ অ্যান্ড রেসকিউ বোটের সঙ্গে কিছু রিলিফও তারা জোগাড় করে রেখেছেন৷ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীসময়ে এ রিলিফ প্রয়োজন হতে পারে বলে এই প্রস্তুতিও তারা নিয়েছেন। জেলা প্রশাসনের সঙ্গে আমাদের নৌপুলিশ এবং জেলা পুলিশ কাজ করছে৷ লোকজনকে নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নিচ্ছে তারা।
‘বাংলাদেশ আনসার এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা বাহিনী চারদিন ধরে ১০ হাজার সদস্যকে ঘূর্ণিঝড় চলাকালীন এবং পরবর্তী উদ্ধার কার্যক্রমের জন্য প্রস্তুত রেখেছে। বিজিবি এবং র্যাব আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় প্রস্তুত৷ সুন্দরবন এলাকায় বিজিবির ছোট ছোট বিওপি সুরক্ষার জন্যও ব্যবস্থা নিয়েছেন৷’
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, আপনারা জানেন সুনামগঞ্জে হঠাৎ বন্যায় কারাগারের ভেতরে দু-তিন ফুট পানি ঢুকে গিয়েছিল৷ উপকূলীয় কারাগারগুলোতে যেন এ ধরনের পরিস্থিতি না হয় সেজন্য আইজি প্রিজন প্রস্তুতি নিয়েছেন৷ উপকূলীয় এলাকার কারাগারগুলো থেকে বন্দিদের অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নেওয়া বা তাদের খাদ্যসামগ্রীর যেন কোনো ঘাটতি না হয় সেসব বিষয়েও প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে৷
তিনি বলেন, আমাদের উপকূলীয় এলাকায় সার্বক্ষণিক যোগাযোগের জন্য ভি-স্যাট নেটের মাধ্যমে কোস্টগার্ড লাইভ মনিটরিং করছে। ফায়ার সার্ভিস পুরো উপকূলীয় এলাকায় তিনটি নিয়ন্ত্রণ কক্ষ করেছে৷ ঘূর্ণিঝড় মোকাবিলায় পাঁচ হাজার কর্মী প্রস্তুত রয়েছেন৷ ফায়ার সার্ভিসের স্টেশনগুলা সুরক্ষিত৷ সেগুলোও আশ্রয়কেন্দ্র হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে৷
আসাদুজ্জামান খান বলেন, আমরা আশঙ্কা করছি প্রচুর বৃষ্টি হতে পারে৷ সেটি হলে পার্বত্য এলাকায় ভূমিধস হতে পারে৷ সে ক্ষতি প্রতিরোধেও আমাদের ফায়ার সার্ভিস ও সেচ্ছাসেবীরা প্রস্তুত৷ এ ধরনের ঘটনা ঘটলে তারা যেন তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে পারে৷
‘ঘূর্ণিঝড় পরবর্তীসময়ে রাস্তাঘাট ও স্থাপনা মেরামত এবং অপসারণের জন্য সংশ্লিষ্ট জনবল ও সেচ্ছাসেবীরাও প্রস্তুত। যেন তাৎক্ষণিক আমরা ব্যবস্থা নিতে পারি৷ আমাদের সবাই প্রস্তুত৷ ঘূর্ণিঝড়কালীন কিংবা পরবর্তীসময়ে লুটপাটের ঘটনা এড়াতেও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা প্রস্তুত৷’
সার্বক্ষণিক মনিটরিংয়ের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় একটি কন্ট্রোল রুম খুলেছে বলেও জানিয়েছেন আসাদুজ্জামান খান।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :