কোনো সংসদ সদস্যের স্বাভাবিক বা অস্বাভাবিক মৃত্যু হলে তার সংসদীয় আসনটি কীভাবে শূন্য ঘোষণা হবে, এটি আমি এ পর্যন্ত সংবিধানে দেখিনি বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার (ইসি) মো. আলমগীর।
সোমবার (৩ জুন) আগারগাঁওয়ের নির্বাচন কমিশন ভবনে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
তিনি বলেছেন, মৃত্যুজনিত কারণে সংসদ সদস্যের আসন শূন্য হবে এটি সংবিধানে আজ পর্যন্ত দেখিনি। তবে এটিই সাধারণত ধরে নেওয়া হয়। কারণ, একজন সংসদ সদস্য মারা গেলে উনার পক্ষে তো আর সংসদে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হবে না। এজন্যই এটা এভাবে সংবিধানে বলা আছে।
তিনি আরও বলেন, কোন সংসদ সদস্য যদি মারা যান তবে ৯০ দিন কেন আর কোনো দিনই সংসদ ভবনে উপস্থিত হওয়া সম্ভব হবে না। এটি ধরে নিয়েই ৯০ দিনের কথা বলা আছে। একটিই কারণ, আসন যদি শূন্য হয় তবে আমরা সেখানে নির্বাচন করবো।
ঝিনাইদহ-৪ আসনের সংসদ সদস্য আনোয়ারুল আজীম আনার সম্প্রতি কলকাতায় খুন হয়েছেন বলে খবর প্রকাশ হয়। এক্ষেত্রে ওই আসনে কী হবে? প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, স্বাভাবিক বা অপমৃত্যু যাই হোক না কেন এটা হলো সংসদের দায়িত্ব। স্পিকার যখন মৃত্যু সনদ পাবেন তখন সংসদ আসনটি শূন্য ঘোষণা করবেন। শূন্য ঘোষণা করলে গেজেট আমাদের কাছে পাঠিয়ে দেবেন। এরপরে আমরা নির্বাচনের ব্যবস্থা করব।
ইসি আলমগীর বলেন, সংবিধানে মৃত্যুর কারণে আসন শূন্য হওয়ার কথা স্পষ্ট উল্লেখ নেই। আনার সাহেব মারা গেছেন কি না অফিসিয়ালি আমরা জানি না। এক্ষেত্রে সংসদ যেভাবে বলবে সেভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।
যেসব কারণে একটি সংসদীয় আসন শূন্য হতে পারে, তা ব্যাখ্যা করে এই নির্বাচন কমিশনার বলেন, অনেক কারণে আসন শূন্য হয়। সংবিধানে বলা আছে, কোনো মামলায় দুই বছরের সাজাপ্রাপ্ত হলে, স্বাধীনতাবিরোধী হলে বা ট্রাইব্যুনালে সাজা পেলে সংসদ সদস্য পদ থাকবে না। আদালত যদি অপ্রকৃতিস্থ ঘোষণা করে তাহলেও সংসদ সদস্য পদ থাকবে না। এছাড়া যদি পদত্যাগ করেন একাধিক ক্রমে সংসদে ৯০ দিন অনুপস্থিত থাকেন সংসদের অনুমতি না নিয়ে তবে সদস্যপদ থাকবে না। এছাড়া প্রথম যে অধিবেশন বসে তখন থেকে ৯০ কার্যদিবস অনুপস্থিত থাকলে এমপি পদ থাকবে না।
এমপি আনারের অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে, এটা কিভাবে শূন্য ঘোষণা করা হবে। এখানে ইসির করণীয় কী? এ প্রসঙ্গে ইসি আলমগীর বলেন, এটা স্বাভাবিক মৃত্যু বা অপমৃত্যু যা-ই হোক না কেন, এর দায়িত্ব সংসদের। আনার সাহেবের মৃত্যুর বিষয়টি আমরা জানি না। স্পিকার যদি আসনটি শূন্য ঘোষণা করেন, করবেন। এরপর সেটা আমাদের কাছে পাঠালে আমরা নির্বাচন করবো।
স্থানীয় নির্বাচনে মৃত্যুজনিত কারণ উল্লেখ থাকলেও সংসদ সদস্যের ক্ষেত্রে এটি উল্লেখ করা হয়নি কেন? এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এটি কেন উল্লেখ করা হয়নি আমি বলতে পারবো না। এ বিষয়ে জাতীয় সংসদের সচিব সাহেবকে জিজ্ঞাসা করবেন।
এটি এক ধরনের অসঙ্গতি কি না, জানতে চাইলে মো. আলমগীর বলেন, মৃত্যুজনিত কারণ থাকলে ভালো হতো। যেহেতু ৯০ দিন টানা না থাকলে সংসদ সদস্য পদ থাকবে না, এটি ধরে নিয়েই আসনটি শূন্য হবে। তবে মৃত্যুজনিত কোনো কারণ উল্লেখ নেই সংবিধানে।
তিনি বলেন, আনার সাহেবের স্বাভাবিক মৃত্যু বা অপমৃত্যু এটি ঠিক করার দায়িত্ব সংসদের। এ বিষয়ে আমরা অফিসিয়ালি কিছু জানি না।
একুশে সংবাদ/ঢ.প.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :