গৃহহীন ও ভূমিহীন মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস এবং আত্মমর্যাদা বোধ ফিরে এসেছে বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। রেমালসহ প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্তদেরও সরকার ঘর তৈরি করে দেবে বলে জানিয়েছেন তিনি।
মঙ্গলবার (১১জুন) সকালে সরকারি বাসভবন (গণভবন) থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সরকারের আবাসন কর্মসূচি আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের আওতায় সারাদেশে ৭০টি উপজেলার গৃহ ও ভূমিহীন পরিবারকে ১৮ হাজার ৫৬৬টি বাড়ি হস্তান্তর কার্যক্রম উদ্বোধন অনুষ্ঠানে এ কথা বলেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু স্বপ্ন দেখেছিলেন দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর। সে স্বপ্ন বাস্তবায়ন করা আমাদের কর্তব্য। বাবার পদাঙ্ক অনুসরণ করে নিজেকে জনগণের সেবক হিসেবেই মনে করি। আশ্রয়ণ প্রকল্পে যারা পুনর্বাসিত হয়েছে, তাদের মাঝে আত্মবিশ্বাস, আত্মমর্যাদাবোধ ফিরে এসেছে। দেশকে উন্নত করতে এটাই সবচেয়ে প্রয়োজন।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগে যারা ক্ষতিগ্রস্ত, তাদের পাশে সবসময় আছি, থাকবো। তাদের চিন্তার কোনো কারণ নেই। প্রত্যেকের ঘরের ব্যবস্থা করে দেবো। যারা ঘর পাচ্ছেন, এটা এখন তাদের নিজেদের সম্পত্তি। ঘরবাড়ি তৈরি করে কীভাবে মানুষের জীবনমান উন্নত করতে পারি, সে চেষ্টা করে যাচ্ছি। ঘরগুলো ব্যবহারে যত্নবান হওয়ার আহ্বান জানান তিনি।
সরকারপ্রধান বলেন, কোনোমতেই দেশের জনগণ পিছিয়ে থাকবে না। কারো কাছে ভিক্ষা নিয়ে, হাত পেতে চলতে চাই না। যতটুকু সম্পদ আছে, তা নিয়েই মাথা উঁচু করে চলবো। যেটুকু সম্পদ আছে, তার যথাযথ ব্যবহার করলে পেছনে ফিরে তাকাতে হবে না। সেজন্য সবার সহযোগিতা দরকার। অনাবাদি জমি চাষের আওতায় আনার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী।
তিনি আরও বলেন, কোভিড-১৯, ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ, গাজায় ইসরায়েলের হামলার কারণে বিশ্বব্যাপী মূল্যস্ফীতি বেড়েছে। এমন পরিস্থিতিতে মানুষের জন্য যেটা করা প্রয়োজন, সেটাই করছি।
কারামুক্তি দিবসের স্মরণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই মিথ্যা মামলায় আমাকে গ্রেপ্তার করা হয়। ১১ জুন বন্দীখানা থেকে মুক্তি পেয়েছিলাম। আমাদের নেতাকর্মী, সহযোগী সংগঠন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-ছাত্র, সাধারণ মানুষ, যারা এর প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন তাদের সবাইকে কৃতজ্ঞতা জানাই। জাতির কাছে আমি কৃতজ্ঞ। জনগণের যে সমর্থন ভালোবাসা পেয়েছিলাম, সেটা ভোলার নয়।
এর আগে প্রধানমন্ত্রী সারাদেশে আশ্রয়ণ-২ প্রকল্পের প্রথম ধাপে ৬৩ হাজার ৯৯৯টি, দ্বিতীয় ধাপে ৫৩ হাজার ৩৩০টি, তৃতীয় ধাপে ৫৯ হাজার ১৩৩টি এবং চতুর্থ ধাপে ৩৯ হাজার ৩৬৫টি বাড়ি বিতরণ করেন।
প্রকল্পের আওতায় ভূমি ও গৃহহীন প্রতিটি পরিবারকে দুই দশমিক ৫ শতাংশ জমির মালিকানা দিয়ে একটি আধা-পাকা বাড়ি দেয়া হচ্ছে, যা স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই হবে। প্রতিটি বাড়িতে দুটি শোবার ঘর, একটি রান্নাঘর, একটি টয়লেট এবং বারান্দা রয়েছে।
একুশে সংবাদ/স.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :