নিজের ক্ষমতা অপব্যবহারের মাধ্যমে রাষ্ট্রের ১৫২ কোটি টাকা ক্ষতি সাধনের মাধ্যমে আত্মসাতের অভিযোগে মূল্য সংযোজন কর (মূসক) এর বৃহৎ করদাদতা ইউনিটের প্রাক্তন কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরীর নামে মামলা করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) দুদকের সহকারী পরিচালক মো. শাহআলম শেখ বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মঙ্গলবার (১১ জুন) দুদকের সমন্বিত জেলা কার্যালয় ঢাকা-১ এ মামলাটি দায়ের করা হয়। সংস্থাটির এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, ৪টি মোবাইল অপারেটর কোম্পানির মধ্যে গ্রামীণ ফোন লিমিটেডের ৬ টি নথিতে ৫৮ কোটি ৬৪ লাখ ৮৮ হাজার ৬৯৭ টাকা, বাংলালিংক ডিজিটাল কমিউনিকেশন লিমিটেডের ৭ টি নথিতে ৫৭ কোটি ৮৮ লাখ ৫৩ হাজার ৫১ টাকা, রবি আজিয়াটা ১৪ কোটি ৯৪ লাখ ১৬ হাজার ৬৮৮ টাকা ও এয়ারটেল বাংলাদেশ লিমিটেডকে ২০ কোটি ৫৩ লাখ ৩০ হাজার ৯৫২ টাকাসহ সর্বমোট ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা অপরিশোধিত সুদ মওকুফ করেন।
মামলার এজাহার থেকে জানা যায়, স্থান ও স্থাপনা ভাড়ার উপর প্রযোজ্য ভ্যাট আদায় সংক্রান্ত স্থান ও স্থাপনার উপরে আইনানুগভাবেই ভ্যাট প্রযোজ্য হওয়ায় তা মেনে নিয়ে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ দাবীকৃত ভ্যাট পরিশোধের বিষয়ে Alternative Dispute Resolution (ADR) সভায় সম্মত হয় এবং যথাসময়ে ১৮৯ কোটি ৭৪ লাখ ১৫ হাজার ৪৩০ টাকা পরিশোধ করা হয়। এই রাজস্ব নির্ধারিত কর মেয়াদে পরিশোধ না করায় মূসক আইন অনুযায়ী প্রযোজ্য হারে প্রদেয় সুদের পরিমাণ হয় ১৫২ কোটি ৮৯ লাখ ৩৯০ টাকা। মূল্য সংযোজন কর আইন, ১৯৯১ এর ধারা ৩৭(৩) অনুসারে সুদ আদায়ের জন্য নথি উপস্থাপন করা হলে তৎকালীন কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী অতি দ্রুত সুদের হিসাব করার নির্দেশ প্রদান করেন।
এজাহারে আরও বলা হয়, কমিশনার ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী কিছু যুক্তি প্রদর্শনের মাধ্যমে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে একক নির্বাহী আদেশে অসৎ উদ্দেশ্যে সুদ আদায় করার সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেন। ১৫২ কোটি টাকা সুদ আইনানুগভাবে আদায়যোগ্য ছিল। কিন্তু তিনি এই সুদ আদায় না করার একক নির্বাহী সিদ্ধান্তটি প্রদান করেন ফলে সরকারের ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা আদায় বাধাগ্রস্ত হয়েছে মর্মে প্রতীয়মান হয়।
আসামি ওয়াহিদা রহমান চৌধুরী আইন বহির্ভূতভাবে অসৎ উদ্দেশ্যে একক নির্বাহী সিদ্ধান্তে ১৬টি নথিতে ১৫২ কোটি ৮৯ হাজার ৩৯০ টাকা অপরিশোধিত সুদ মওকুফ করে ক্ষমতার অপব্যবহার ও অপরাধজনক বিশ্বাসভঙ্গের মাধ্যমে সরকারের আর্থিক ক্ষতিসাধন করে আত্মসাত দণ্ডবিধির ২১৮/৪০৯ ধারা ও ১৯৪৭ সনের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫(২) ধারায় মামলা করা হয়।
একুশে সংবাদ/চ.ট.প্র/জাহা
আপনার মতামত লিখুন :